শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫ | ১ ভাদ্র ১৪৩২

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

মৌলভীবাজারে বন্যায় পানিবন্দি ৫ লাখ মানুষ

বাংলাদেশ অনলাইন :   |   বুধবার, ১৯ জুন ২০২৪

মৌলভীবাজারে বন্যায় পানিবন্দি ৫ লাখ মানুষ

ছবি : সংগৃহীত

উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে মৌলভীবাজার সদর, কুলাউড়া, রাজনগরসহ সাতটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ঈদুল আজহার দিনেও ভোগান্তিতে পড়েন মুসল্লিরা। পানিবন্দি অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠছেন। জানা গেছে, ১৭ জুন ভোর থেকেই মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় টানা বৃষ্টিপাত হয়। এতে করে ডুবে যায় নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট। ঈদের দিন এই টানা বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারণে মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন। অনেক ঈদগাহে পানি উঠে যাওয়ায় ঈদের নামাজ হয় উঁচু স্থান ও মসজিদে। অনেক রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে জেলার সাতটি উপজেলার প্রায় ২০টি ইউনিয়নের ৫ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন।

এ ছাড়াও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে অনেকের ঘরে পানি উঠায় আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুঁটছেন। পানিবন্দি মানুষের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হচ্ছে আশ্রয়কেন্দ্র। এছাড়া পশু কোরবানি দিতে গিয়েও চরম বিড়ম্বনায় পড়েন মানুষ। বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করায় আশ্রয়কেন্দ্রে বন্যা কবলিত এলাকার লোকজনের ভীড় বাড়ছে। বন্যা আতঙ্কে নির্ঘুম রাত পার করছেন হাজার হাজার মানুষ। জানা যায়, ঈদুল আযহার দিন ভোর থেকেই টানা বৃষ্টিপাত হয় এতে করে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের রাস্তা ঘাট প্লাবিত হয়ে বন্যার কারণে মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন।

টানা বৃষ্টিপাতে সোমবার রাতে প্লাবিত হয়ে যায় কুলাউড়া উপজেলা পরিষদ এলাকা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। মঙ্গলবার সারাদিন বৃষ্টিপাত হওয়ায় পর পৌর শহরের মাগুরা, সাদেকপুর, বিহালা, সোনাপুর, কাদিপুর ইউনিয়নের ছকাপন, মৈন্তাম, ভাগমতপুর, গুপ্তগ্রাম, তিলকপুর, ভূকশিমইল ইউনিয়নের সাদিপুর, কুরবানপুর, মুক্তাজিপুর, জাবদা, কালেশার, কাইরচক, চিলারকান্দি, কানেহাত, জয়চন্ডী ইউনিয়নের ঘাঘটিয়া, মিরবক্সপুর, কামারকান্দি, কুঠাগাঁও, কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের দেখিয়ারপুর, কুলাউড়া গ্রাম, বনগাঁও, গাজিপুর আংশিক, পুরন্দপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়নে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও প্লাবিত হয়।

এ দিকে পানিবন্দি মানুষদের খোঁজ খবর নিতে হাকালুকি হাওর তীরবর্তী ভূকশিমইল ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকাসহ পৌর এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করেন মৌলভীবাজার-২ কুলাউড়া আসনের সংসদ সদস্য আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যাক্রান্ত এলাকাসমূহে সকল ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কুলাউড়া উপজেলায় বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ভুক্তভোগী মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

কুলাউড়ার রাবেয়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা কাদিপুর ইউনিয়নের মৈন্তাম গ্রামের আক্কাস আলী (৪৫) বলেন, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমার ঘরের ভেতর হাঁটুপানি। একটু পানি বাড়লেই বিছানায় পানি উঠবে। তাই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের দিন বিকেলে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছি। কখনো কল্পনাও করিনি এইভাবে নিজের বাড়ি ছাড়া হয়ে ঈদ করবো। এখানে কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম আতিকুর রহমান আখইকে শুকনো খাবার বিতরণ করতে দেখা দেখা গেছে।

ভূকশিমইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির বলেন, হাকালুকি হাওরের পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় আমার ইউনিয়নের ২২টি গ্রামই প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি মানুষের জন্য ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৭০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। শহরের সঙ্গে প্রধান সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথে। প্রশাসনের নির্দেশনা পেয়ে সরকারের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ করছি।

কাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আহমদ গিলমান বলেন, পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় আমার ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি মানুষের জন্য ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ৬টি আশ্রয়কেন্দ্র মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৪০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।

কুলাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শিমুল আলী বলেন, কুলাউড়ায় এখন পর্যন্ত ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে খোলা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৯টা পর্যন্ত বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ১২৭টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করা হয়েছে।

মৌলভীবাজার সদর ইউএনও নাসরিন চৌধুরী বলেন, আমার খলিলপুর ও মনুমুখ ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়েছে। মাইকিং করা হয়েছে যাতে সবাই আশ্রয়কেন্দ্রে যান। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্রে হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম বলেন, বন্যাকবলিত উপজেলার ইউএনওদের সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং এবং কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি এবং আশ্রয়কেন্দ্র সমূহে প্রয়োজনীয় ওষুধসহ খাবার ও পানির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় আমরা সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছি।

Posted ৯:০৬ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৯ জুন ২০২৪

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

কাঁঠাল সমাচার
কাঁঠাল সমাচার

(1816 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.