রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ | ৬ পৌষ ১৪৩২

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

টিউলিপের সাজা নিয়ে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যমগুলো কে কী বলছে

বাংলাদেশ অনলাইন :   |   সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫

টিউলিপের সাজা নিয়ে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যমগুলো কে কী বলছে

ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের মামলায় যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকের সাজা হওয়ার ঘটনা নিয়ে দেশটির মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোয় গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। বেশির ভাগ প্রতিবেদনের শিরোনামে লেখা হয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিকের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের আদালতে বিচারে তাঁকে সাজা দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকায় তাঁর এই সাজা ভোগ করার সম্ভাবনা কম বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনগুলোতে।

বাংলাদেশের আদালতে সাজা ঘোষণার পর টিউলিপ সিদ্দিক একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তাঁর ওই বিবৃতিও তুলে ধরা হয়েছে বিভিন্ন প্রতিবেদনে। একটি সংবাদমাধ্যম বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের বক্তব্যও তুলে ধরেছে।

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে শেখ রেহানার নামে ১০ কাঠার একটি প্লট বরাদ্দে অনিয়মের ঘটনায় হওয়া মামলায় আজ রায় দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। রায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাঁচ বছর, তাঁর বোন শেখ রেহানাকে সাত বছর এবং রেহানার মেয়ে টিউলিপকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি টিউলিপসহ তিন আসামিকেই এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।

এ নিয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি শিরোনাম করেছে ‘টিউলিপ সিদ্দিক এমপিকে বাংলাদেশে কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে তাঁর অনুপস্থিতিতে বিচারের পরে’। বাংলাদেশে তাঁর অনুপস্থিতিতে বিচারে লেবার এমপি ও সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের দুই বছরের কারাদণ্ড হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠে তাঁর পরিবারকে একটি প্লট দিতে খালা বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর প্রভাব বিস্তারের জন্য টিউলিপকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন আদালত। এ অভিযোগ তিনি জোরালোভাবে অস্বীকার করেছেন।

বিবিসি বলেছে, লন্ডনে অবস্থানরত টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন। তাঁকে এই সাজা ভোগ করতে হবে বলে মনে হয় না। এক বিবৃতিতে টিউলিপ এই বিচারপ্রক্রিয়াকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ‘ত্রুটিপূর্ণ ও প্রহসনের’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

টিউলিপের দল লেবার পার্টির একজন মুখপাত্র বিবিসিকে বলেছেন, দলটি এ রায়কে স্বীকৃতি দিতে পারে না। তিনি বলেন, ‘খবরে জানা গেছে, অত্যন্ত সম্মানিত জ্যেষ্ঠ আইন বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন যে এই মামলায় টিউলিপ সিদ্দিক ন্যায়সংগত আইনি প্রক্রিয়ার সুযোগ পাননি এবং তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিস্তারিত কখনোই তাঁকে জানানো হয়নি। তাঁর আইনি পরামর্শক দল বারবার বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করলেও এটা করা হয়েছে। যে কারও বিরুদ্ধে যখন কোনো অভিযোগ আনা হয়, সব সময় তাঁর আইনি প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দিতে হয়।’

বিবিসি বলছে, তারা বুঝতে পেরেছে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত বা দলীয় শৃঙ্খলাবিষয়ক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তিনি তাঁর লেবার পার্টির সদস্যপদ এবং হাউস অব কমন্সে হুইপের পদে বহাল থাকবেন।

বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের কোনো প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই। বাংলাদেশ দেশটির কাছে একটি ‘২ বি কান্ট্রি’ হিসেবে বিবেচিত, অর্থাৎ তাঁকে প্রত্যর্পণের অনুমতি পেতে যুক্তরাজ্যের আইনজীবী ও বিচারকদের সামনে সুস্পষ্ট তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে।

‘বাংলাদেশের আদালত যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে তাঁর অনুপস্থিতি’ শিরোনামে প্রতিবেদন করেছে যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে টিউলিপের পারিবারিক সম্পর্ক, নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরে সংঘটিত দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার দ্রুত করতে রাজনৈতিক ও জনমতের চাপ, গত বছর অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত মাসে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় হওয়া, আজকের রায় ঘোষণার পর টিউলিপের প্রতিক্রিয়া, লেবার পার্টির প্রতিক্রিয়া, এই মামলার বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সাবেক বিচারমন্ত্রীসহ একদল খ্যাতিমান আইনজীবীর উদ্বেগ প্রকাশসহ নানা বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিচার চলাকালে প্রসিকিউটর খান মোহাম্মদ মাইনুল হাসান অভিযোগ করেছিলেন যে রাজধানীর উপকণ্ঠে পরিবারের সদস্যদের জন্য প্লট বরাদ্দ নিশ্চিত করতে টিউলিপ সিদ্দিক শেখ হাসিনার দপ্তরের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের ফোন করেন ও মেসেজ পাঠান এবং তিনি সশরীর ঢাকা সফর করেন। তবে প্রসিকিউটররা ওই সব মেসেজের কোনো প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করেননি। তাঁরা বলেছেন, সে সময় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে দায়িত্ব পালন করা দুজন প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে টিউলিপ সিদ্দিকের যোগাযোগের এসব তথ্য জানতে পেরেছেন।

যুক্তরাজ্যের আরেক প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট শিরোনাম করেছে ‘বাংলাদেশে দুর্নীতির জন্য লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিককে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে’। বাংলাদেশে একাধিক মামলার আসামি হওয়ার পর টিউলিপ সিদ্দিকের গত জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার সরকারের ‘সিটি মিনিস্টারের’ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

ইনডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনেও মামলার পূর্বাপর, টিউলিপের প্রতিক্রিয়াসহ এ বিষয়ে নানা তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আজ ঢাকার আদালত রায় ঘোষণার পর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর চিফ সেক্রেটারি ড্যারেন জোনসের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বিবিসি ব্রেকফাস্ট অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘এটা টিউলিপের ব্যক্তিগত বিষয়, যেটা নিয়ে তাঁকেই কথা বলতে হবে। তবে আমার জানাবোঝা মতে, বাংলাদেশে একটি বিচার হয়েছে, যার অংশ তিনি ছিলেন না। তিনি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বিতর্কে যুক্ত হতে চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাঁকে তা করতে দেওয়া হয়নি। তিনি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে এটা আইনি পরিস্থিতির চেয়ে অনেক বেশি রাজনৈতিক পরিস্থিতি। তিনি তাঁর বিরুদ্ধে আনা প্রতিটি অভিযোগ অস্বীকার করে যাচ্ছেন।’

ড্যারেন জোনস আরও বলেছেন, ‘এই সিদ্ধান্ত অপর একটি দেশ এবং একটি বিদেশি আদালত নিয়েছেন। আমি নিশ্চিত যে টিউলিপ পার্লামেন্টে তাঁর আসনের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে যাবেন।’

যুক্তরাজ্যের আরেক সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়েছে ‘বাংলাদেশে দুর্নীতির জন্য টিউলিপ সিদ্দিকের দুই বছরের কারাদণ্ড’। এর প্রতিক্রিয়ায় টিউলিপ বাংলাদেশের এই আদালতকে ‘ক্যাঙ্গারু কোর্ট’ আখ্যায়িত করে রায়কে নাকচ করেছেন বলেও প্রতিবেদনে ফলাও করে প্রকাশ করেছে তারা।

প্রতিবেদনে এ মামলা ও রায়সংক্রান্ত নানা তথ্য তুলে ধরার পাশাপাশি বলা হয়েছে, টেলিগ্রাফ এমন সব নথিপত্র দেখেছে, যাতে টিউলিপ সিদ্দিকের বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র ছিল বলে মনে হয়েছে, যা তাঁর আগের দাবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। অবশ্য যুক্তরাজ্যের এই এমপি বৃহস্পতিবার বলেছেন, তাঁকে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি হিসেবে তুলে ধরার জন্য জাল–জালিয়াতি করে এসব কাগজপত্র তৈরি করা হয়েছে।

টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনেও রায় নিয়ে টিউলিপ ছাড়াও লেবার পার্টি ও প্রধানমন্ত্রী চিফ সেক্রেটারির প্রতিক্রিয়া তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশের আদালতে আরও দুটি দুর্নীতি মামলার বিচার চলছে, যেগুলোয় টিউলিপের নাম রয়েছে। জানুয়ারির প্রথম দিকে এসব মামলার রায় ঘোষণা হতে পারে বলে প্রসিকিউটররা আশা করছেন।

Posted ৯:৪৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

কাঁঠাল সমাচার
কাঁঠাল সমাচার

(1993 বার পঠিত)

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.