বাংলাদেশ অনলাইন : | বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ছয়দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সাম্প্রতিক আলোচিত নামগুলোর একটি হয়ে উঠেছিলেন শরিফ ওসমান হাদি। অল্প সময়েই সমর্থকদের কাছে জনপ্রিয় এই যুবক প্রতিপক্ষের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিলেন।
আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের বিভিন্ন রায় নিয়ে সোচ্চার ছিলেন ওসমান হাদি। সামাজিক মাধ্যম এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের অনুষ্ঠান ও আলোচনায় নিয়মিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর ইনকিলাব মঞ্চ নামে একটি রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক প্লাটফর্ম তৈরির মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হন ওসমান হাদি।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে শুরু করেন প্রচার-প্রচারণাও। এমনই এক প্রচারাভিযানের সময় গত ১২ ডিসেম্বর বন্দুকধারীর গুলিতে আহত হন ওসমান হাদি। রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্কি এলাকার বক্স কালভার্ট রোডে হামলার শিকার হন ইনকিলাব মঞ্চের এই নেতা।
প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় তাকে। পরে উন্নত আইসিইউ সাপোর্টের জন্য তাকে ভর্তি করা হয় ঢাকার এভায়কেয়ার হাসপাতালে। তখন চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, ‘অত্যন্ত শঙ্কটজনক’ তার অবস্থা। এরপর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) তাকে উন্নত চিকিৎসা জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়।
যেভাবে রাজনীতির লাইমলাইটে ওসমান হাদি
রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে লেখাপড়া শেষ করা শরিফ ওসমান হাদি। পাশাপাশি একটি ইংরেজি শেখার কোচিংয়েও ক্লাস নিতেন তিনি।
বরিশালের ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থেকে উঠে আসা যুবক ওসমান হাদি শিক্ষাজীবন থেকেই রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক নানা কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন।
ঝালকাঠির এন এস কামিল মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করার পর ওসমান হাদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পান এবং ঢাকায় চলে আসেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও সক্রিয় কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কখনও দেখা যায়নি তাকে। মূলত ২০২৪ এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানই তাকে তুলে আনে রাজনীতির মঞ্চে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় নানা ভূমিকার মাধ্যমে আলোচনায় আসেন ওসমান হাদি। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক প্লাটফর্ম ‘ইনকিলাব মঞ্চ’ গঠন এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সোচ্চার অবস্থানের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন তিনি।
‘ইনকিলাব মঞ্চ’ গঠনের পর ওসমান হাদি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি রক্ষা, অপরাধীদের বিচার, আহত-নিহত ব্যক্তিদের স্বীকৃতি এবং জুলাই চার্টার ঘোষণার দাবি তুলে সভা-সমাবেশ শুরু করেন। যা তাকে রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে আসে।
অবশ্য এর মাধ্যমে প্রতিপক্ষের চক্ষুশূল হয়ে ওঠেন ওসমান হাদি। তিনি বেশ কয়েকবার ‘আমাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে’ বলেও জানান।
সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া একটি পোস্টে ওসমান হাদি দাবি করেছিলেন, দেশি–বিদেশি অন্তত ৩০টি ফোন নম্বর থেকে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তার বাড়িতে আগুন দেওয়াসহ মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
Posted ১১:১০ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh