বাংলাদেশ অনলাইন : | শনিবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩
আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক পর্যালোচনার আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটনভিত্তিক সংগঠন রাইট টু ফ্রিডমের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম। ২৯ ডিসেম্বর (শুক্রবার) এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত এই আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বিবৃতিতে বলেছেন, বাংলাদেশে নির্বাচনের আর মাত্র কয়েকটি দিন বাকি। আমরা বিশ্বাস করি পর্যায়ক্রমে গণতন্ত্র এবং অধিকারকে লঙ্ঘন করার মূল্য দিতে হবে বাংলাদেশ সরকারকে।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেছেন, অনেক মাস ধরে বাংলাদেশের বন্ধুরা ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের ধরন প্রত্যক্ষ করার পর ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছেন। আগের ওই দুটি নির্বাচনে ভোটারদের অবাধে তাদের ভোটাধিকারের চর্চার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার মাধ্যমে ফল জালিয়াতি করেছে ক্ষমতাসীন দল। বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জেলে রেখে এবং বাছাই করা কিছু প্রার্থীকে প্রতিযোগিতার অনুমতি দেওয়ার মাধ্যমে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। এর মধ্য দিয়ে সেই ঝুঁকি কার্যত সুনির্দিষ্ট রূপ পেয়েছে। এই পর্যন্ত এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এবং তার দল পর্যায়ক্রমিকভাবে রাজনৈতিক প্রতিবাদের এবং ভিন্নমতের স্থান বন্ধ করে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক বহু মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপ এবং বৈশ্বিক মিডিয়া আউটলেট বলে আসছে যে, এই পরিবেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।
বিবৃতিতে রাইট টু ফ্রিডমের প্রেসিডেন্ট বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অবাধ নির্বাচন ও রাজনৈতিক সংলাপের আহ্বান জানিয়ে ব্যাপকভাবে বিবৃতি দিয়ে আসছে। কিন্তু তারা এটাকে সম্ভব করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অর্থপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে চাপ দিতে অনিচ্ছুক।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার উৎসাহিত করার প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দিচ্ছে। যারা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করেছে এমন অল্প কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কিন্তু এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য এসব পদক্ষেপও পর্যাপ্ত নয় বলে প্রমাণিত হয়েছে। একই সময়ে দেশের ভিতরে এবং আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অব্যাহতভাবে সমর্থন দিয়ে আসছে চীন, রাশিয়া ও ভারত।
তিনি আরও বলেন, ২০২৩ সালের শুরু থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি এবং ঘনিয়ে আসা অর্থনৈতিক সংকটের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছে রাইট টু ফ্রিডম। এক্ষেত্রে গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের পক্ষে পরামর্শ দিয়ে আসছে। এখন নির্বাচনের আর মাত্র কয়েকটি দিন বাকি। আমরা বিশ্বাস করি পর্যায়ক্রমে গণতন্ত্র এবং অধিকারকে লঙ্ঘন করার মূল্য দিতে হবে বাংলাদেশ সরকারকে। যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় ‘অ্যাক্টর’ যারা বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত আছে তাদেরকে এটা পরিষ্কার করতে হবে যে, তারা আর বাংলাদেশের সঙ্গে আগের মতো ব্যবসা করতে পারবে না। বিশেষ করে আমরা বাইডেন প্রশাসন এবং কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানাবো বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সব সম্পর্ক পর্যালোচনা করার। তার মধ্যে আছে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় উন্নয়ন সহায়তা, নিরাপত্তা রক্ষাকারী বিষয়ে সহযোগিতা, বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও কূটনৈতিক যোগাযোগ। এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে বাংলাদেশের সরকার ও এর নাগরিক, অন্যরা যারা বিশ্বজুড়ে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় লড়াই করছে তাদেরকে এই বার্তা দিতে হবে যে, যুক্তরাষ্ট্র তার কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে নিজের বক্তব্যকে সমর্থন করছে।
Posted ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh