বাংলাদেশ অনলাইন : | বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
সম্প্রতি ৬ দশমিক ৮ মাত্রার এক ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গেছে মরক্কো। বিশেষ করে দেশটির গ্রামাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘরগুলো মিশে গেছে মাটিতে। ভয়াবহ ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। যারা মারা গেছেন তাদের বেশির ভাগেরই মৃত্যু হয়েছে ধসে পড়া বাড়ি-ঘরের নিচে চাপা পড়ে। তবে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের খুব কাছে থাকা আদাসিল অঞ্চলের ইগিল তালগুমত নামের একটি গ্রামে ভূমিকম্পে কোনো মানুষের মৃত্যু হয়নি। যদিও ওই গ্রামের প্রায় সব বাড়ি-ঘর ভূমিকম্পে পুরো ধসে পড়েছে।
সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানায়, শুক্রবার ভূমিকম্পের কিছু সময় আগে ওই গ্রামবাসীরা কনে পক্ষের আয়োজনে একটি বিয়ে পূর্ববর্তী অনুষ্ঠানে উন্মুক্ত স্থানে সমবেত হয়েছিলেন। সেখানে স্থানীয় সংগীত ও অন্যান্য আয়োজন উপভোগ করছিলেন তারা। আর তখনই শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে পুরো গ্রাম।
অনুষ্ঠানকালে অনেকেই মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করছিলেন। সেসব ভিডিওতে ভূমিকম্পের আতঙ্কজনক সময়ের ফুটেজ ওঠে আসে। ফুটেজগুলোতে সেখানকার আমন্ত্রিত অতিথিদের ভয়ে-আতঙ্কে চিৎকার-চেঁচামেচি করতে শোনা যায়। অনুষ্ঠানে আগত এক অতিথি ভূমিকম্প আঘাত হানার আগ থেকেই ভিডিও করছিলেন। সেই ভিডিওতে দেখা যায় সংগীত শিল্পীরা দেশটির ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে বাঁশি ও ছাগলের চামড়ার তৈরি ড্রাম বাজাচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই সেখানে হই-হুল্লোড় ও মানুষের আর্তনাদ শুরু হয়।
ভূমিকম্প আঘাত হানার পরের দিন অর্থাৎ শনিবার ৩০ বছর বয়সী মোহাম্মদ বাওদাদের সঙ্গে ২২ বছর বয়সী হাবীবা আজদিরের বিয়ের দিন ধার্য করা হয়েছিল। আর সেখানকার রীতি অনুযায়ী, বিয়ের আগের দিন কনের বাড়িতে বিবাহ পূর্ববর্তী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। সেই বিয়ের আয়োজনই সৌভাগ্যক্রমে তাদের ভয়াবহ বিপদ থেকে রক্ষা করেছে।
ভয়াবহ সেই ভূমিকম্পের চতুর্থদিন, মঙ্গলবার বর-কনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় গার্ডিয়ান প্রতিনিধির। তারা দুজন এই কদিনে পোশাকও বদলাতে পারেননি, কারণ সব চাপা পড়ে আছে ধ্বংসস্তূপের নিচে। বর বাওদাদ গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘আমরা বিয়েটা বেশ ঘটা করে উদযাপন করতে শুরু করেছিলাম, আর তখনই আঘাত হানলো ভূমিকম্প। সেসময় আমি ছিলাম আমার গ্রামে। বুঝতে পারছিলাম না আমি আমাদের গ্রামের কথা ভাবব নাকি ওদের (কনে হাবীবা) গ্রামের কী হলো তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করব।’
এ কথা বলেই স্ত্রীর হাত ধরে স্মিত হাসেন বাওদাদ। পরিস্থিতি সহজ করতে গার্ডিয়ান প্রতিনিধি প্রশ্ন করেন কীভাবে তাদের পরিচয় হলো? উত্তরে বাওদাদ বলেন, ‘ভাগ্যই আমাদের মিলিয়ে দিয়েছে।’
Posted ১১:০২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh