বাংলাদেশ অনলাইন : | শনিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২০
স্থানীয়ভাবে করোনার ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য এর প্রযুক্তি উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছে হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈশ্বিক মহামারী নিয়ে গত ৪ ডিসেম্বর শুরু হওয়া জাতিসংঘের ৩১তম বিশেষ অধিবেশনে এ আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিনকে একটি ‘বৈশ্বিক জনপণ্য’ বিবেচনা করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আইন ও কোভ্যাক্স সুবিধার উদ্যোগ এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। উন্নত দেশগুলোকে ট্রিপস চুক্তির আওতায় আইপি রাইটস ওয়েভার ব্যবহার করে উন্নয়নশীল দেশগুলোয় স্থানীয়ভাবে ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য প্রযুক্তি হস্তান্তর করে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশের সক্ষমতা রয়েছে এবং সুযোগ পেলে ভ্যাকসিন তৈরি করতে প্রস্তুত রয়েছে।
জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) বর্তমান চেয়ার আজারবাইজান ও জাতিসংঘের মহাসচিবের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ বিশেষ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী সবার জন্য করোনা ভ্যাকসিন তৈরির প্রযুক্তি হস্তান্তর, সবার জন্য এ ভ্যাকসিন নিশ্চিত করা, অর্থনৈতিক সহায়তাসহ বৈশ্বিক সহযোগিতা বৃদ্ধির তাগিদ দিয়ে বলেন, যথাসময়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ও সাশ্রয়ী মূল্যে সবার জন্য মানসম্মত ভ্যাকসিন প্রাপ্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ২০৩০ সালের উন্নয়ন এজেন্ডা সমতার নীতি দ্বারা পরিচালিত এসডিজি অর্জনে সার্বজনীন স্বাস্থ্য কাভারেজের মৌলিক ভূমিকার স্বীকৃতি দেয়। একইভাবে যখন ভ্যাকসিন প্রাপ্তির কথা আসে, তখন কাউকে পেছনে রাখা সমীচীন হবে না। এটি মহামারী পরাস্ত করার পাশাপাশি জীবন রক্ষা ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে ত্বরান্বিত করতে আমাদের সহায়তা করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯-এর পরিপ্রেক্ষিতে আর্থিক সহায়তাসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেগুলোকে বিশেষভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। জাতীয় সরকারগুলোর পাশাপাশি জাতিসংঘ, আইএফআই ও সুশীল সমাজকে তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে এবং কভিড-১৯ মোকাবেলায় পরস্পরকে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করতে হবে।
তিনি বলেন, সারা বিশ্ব এখনো এ মারাত্মক ভাইরাস এবং এর প্রভাব মোকাবেলায় এক কঠিন সময় পার করছে। এ প্রেক্ষাপটে এ অধিবেশন সর্বোচ্চ গুরুত্ব বহন করে। কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
এ সময় কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় যৌথ পদক্ষেপ, বৈশ্বিক সংহতি এবং বহুপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় সবার সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিদিন শত শত মানুষ মারা যাচ্ছে। একই সঙ্গে এ মহামারী অনেকের দারিদ্র্য বাড়িয়েছে এবং আরো অনেককে ক্রমেই দারিদ্র্যের দিকে ঢেলে দিচ্ছে। সব দেশেই অপুষ্টি, বৈষম্য ও ক্রমবর্ধমান অসমতা চেপে বসছে এবং শিক্ষাব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে। মানুষের জীবন-জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
করোনা মহামারীর কারণে বাংলাদেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, কভিড-১৯ আমাদের অর্থনীতি, জীবন-জীবিকা ও আমাদের অভিবাসী জনগোষ্ঠীকে ব্যাপক প্রভাবিত করেছে। একই সঙ্গে আমাদের কষ্টার্জিত উন্নয়নকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।
এ সময় করোনা মহামারীর ছোবল হতে মানুষের জীবন ও জীবিকা বাঁচাতে ১৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে মহামারীর দ্বিতীয় প্রবাহ সামাল দিতে সরকারের ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়ার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
Posted ৯:৪৫ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh