বাংলাদেশ ডেস্ক | শনিবার, ০৯ মার্চ ২০২৪
ভারতের অরুণাচল প্রদেশে চীন সীমান্তের কাছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বের দীর্ঘতম দুই লেনের টানেল উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আজ শনিবার (৯ মার্চ) অরুণাচলের সেলা অঞ্চলে টানেলটির উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদি।
হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই সেলা টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল ২০১৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। নরেন্দ্র মোদিই সেটি স্থাপন করেছিলেন। ৮২৫ কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিত ১২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই টানেলে ব্যবহার করা হয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। এই টানেল তুষারপাত দ্বারা প্রভাবিত হবে না। ভারতের জন্য কৌশলগত কারণে এই টানেল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অরুণাচলকে নিয়ে ভারতের সঙ্গে চীনের বিরোধ রয়েছে। প্রদেশটিকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে আসছে বেইজিং। যা নিয়ে দুদেশের মধ্যে সংঘাত বেড়েছে। নবনির্মিত সেলা টানেলটি দিয়ে দ্রুত পৌঁছে যাওয়া যাবে চীন সীমান্ত সংলগ্ন তাওয়াং ও কামেং সেক্টরে। এই টানেল চীন সীমান্তে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বাড়াবে।
এর আগে, তাওয়াং ও কামেঙ্গ সেক্টরে যাওয়ার জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সংকীর্ণ পাহাড়ি পথ ব্যবহার করতে হতো। সংকীর্ণ পাহাড়ি পথে ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে যাওয়া একপ্রকার অসম্ভব ছিল। বর্ষাকালে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে যেত। ফলে দ্রুত সীমান্ত এলাকায় পৌঁছাতে বেশ সমস্যায় পড়তে হতো ভারতীয় সেনাবাহিনীকে। নতুন এই দুই লেনের টানেল দিয়ে সহজেই সাজোয়াঁ গাড়ি, অস্ত্রশস্ত্র চিন সীমান্ত সংলগ্ন তাওয়াং ও কামেং সেক্টরে পাঠাতে পারবে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
টানেলটি নতুন অস্ট্রিয়ান প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে এবং এতে সর্বোচ্চ মানের সুরক্ষা বৈশিষ্ট্যগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘প্রকল্পটি শুধুমাত্র এই অঞ্চলে একটি দ্রুততর এবং আরও দক্ষ পরিবহন রুট প্রদান করবে না বরং এটি দেশের জন্য কৌশলগত গুরুত্ব বহন করবে। টানেলটি একটি লাইফলাইন হবে কারণ এটি তাওয়াংকে সর্ব-আবহাওয়ায় সংযোগ প্রদান করবে।’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯-এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। ১৫ জানুয়ারী ২০২১-এ, প্রথম বিস্ফোরণ চালানোর পর, টানেল ওয়ানের খনন কাজ শুরু হয়। অরুণাচল প্রদেশে যথাযথ রাস্তা এবং রেল সংযোগের অভাবকে উত্তর-পূর্বে সীমান্ত বরাবর চীনের তুলনায় ভারতের জন্য স্বতন্ত্র অসুবিধা হিসাবে দেখা হয়েছিল। আর তাই সেলা টানেল চীন ভারতীয় সীমান্ত পর্যন্ত প্রবেশ পথ সহ অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ভারতকে কৌশলগত সুবিধা দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ১৯৬২ সালে, চীনা সৈন্যরা এই অঞ্চলে ভারতীয় বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল এবং উল্লেখযোগ্যভাবে, সেই বছরের ২৪ অক্টোবর তাওয়াং শহরটি দখল করা হয়েছিল।
Posted ৮:৪২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৯ মার্চ ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh