বাংলাদেশ অনলাইন : | মঙ্গলবার, ০২ মার্চ ২০২১
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার মন্তব্য করেছেন নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ (লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড) থাকছে না । তিনি বলেছেন, ‘স্থানীয় নির্বাচনগুলোর গতিপ্রকৃতি দেখে আমার ধারণা হচ্ছে, বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনের যে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ ও ভারসাম্য রক্ষিত হওয়ার প্রয়োজন ছিল, তা হচ্ছে না। এক কেন্দ্রীয় নির্বাচনে স্থানীয় নির্বাচনের তেমন গুরুত্ব নেই, নির্বাচনে মনোনয়ন লাভই এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় নির্বাচনেও হানাহানি, মারামারি, কেন্দ্র দখল, ইভিএম ভাঙচুর ইত্যাদি মিলে এখন একটা অনিয়মের মডেল তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে সংগঠিত এসব ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলা হলেও অসংখ্য বিচ্ছিন্ন ঘটনা বা দুর্ঘটনা মিলে এক ধরনের অবিছিন্নতা তৈরি হয়, যা নির্বাচনের অনুষঙ্গ হিসেবে রূপ লাভ করে।’
জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষে ২ মার্চ (মঙ্গলবার) মাহবুব তালুকদার লিখিত বক্তব্যে বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরেন। শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা মাহবুব তালুকদারের বক্তব্যের পাল্টা জবাব দেন। সিইসি বলেন, ‘ভেবেছিলাম ভোটার দিবস হিসেবে তিনি কিছু বলবেন। কিন্তু তিনি রাজনৈতিক বক্তব্য রাখলেন। ইসিকে কতখানি হেয় করা যায়, কতখানি নিচে নামানো যায়, অপদস্ত করা যায় তা তিনি করে চলেছেন।’
সম্প্রতি চট্টগ্রামের রাউজান পৌরসভার ভোটের উদাহরণ দিয়ে মাহবুব তালুকদার বলেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে চমক সৃষ্টিকারী পৌরসভা নির্বাচন হয়েছে চট্টগ্রামের রাউজানে। মেয়র ও ১২ জন কাউন্সিলর বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে রাউজান থেকে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও তখন তুলে নেওয়া হয়েছে। ইতিপূর্বে উপজেলা নির্বাচনেও ঠিক এভাবে রাউজানে সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে এটা ‘নির্বাচন’ না বলে ‘মনোনয়ন’ বলাই সম্ভবত অধিকতর সংগত। সারা দেশে যদি এই মডেলে সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জনপ্রতিনিধি হতে পারেন, তাহলে নির্বাচনে অনেক আর্থিক সাশ্রয় হয় এবং সহিংসতা ও হানাহানি থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এতে নির্বাচন কমিশনের দায়-দায়িত্ব তেমন থাকবে না। এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশনের আর প্রয়োজন হবে কি না, সেটা এক বড় প্রশ্ন।
নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার না হলে সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয় উল্লেখ করে মাহবুব তালুকদার বলেন, সংস্কার না হলে নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে সংশ্লিষ্ট সব মহলের ইতিবাচক উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন। নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার না হলে এখন যে ধরনের নির্বাচন হচ্ছে, তার মান আরও নিম্নগামী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
Posted ৩:৫২ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০২ মার্চ ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh