বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর ২০২১
বিজয়ী হলে ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ কমিউনিটি গঠনে কাজ করবো। আর পরাজিত হলে বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে কমিউনিটির উন্নয়নে সহযোগিতা করবো। এমনটাই ঘোষনা দিয়েছেন রব-রুহুল প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী মোহাম্মদ রব মিয়া। তিনি বলেন, কত টুকু ভোটারদের মন জয় করতে পেরেছি তার ফলাফল ১৪ নভেম্বর পাবো ইনশাল্লাহ।
অপরদিকে একই কথা বলেছেন,নয়ন-আলী প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন তিনি বলেন, ইনশাল্লাহ বিজয়ী হলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলের সবাইকে নিয়ে সোসাইটির উন্নয়নে কাজ করবো। আর পরাজিত হলে সবার আগে আমিই বিজয়ী সভাপতিকে ফুল দিয়ে বরন করে নেবো। তবে জয়ের ব্যাপারে আমরা শতভাগ আশাবাদী। কাজী নয়ন বলেন, আমাদের ভোটার ও সমর্থন বেশি তাই প্রত্যাশাও বেশী।
একই সুরে কথা বললেন, এই প্যানেলের সেক্রেটারি প্রার্থী ও বর্তমান কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, জয়ী হলে আমার উপর অর্পিত গুরু দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবো। সোসাইটির সেক্রেটারি হিসেবে সবাইকে নিয়েই মিলে মিশে কাজ কাজ করবো। আর পরাজিত হলে বিজয়ীদের সোসাইটির উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতা করে যাবো। তিনি বলেন, গত দুইবারই আমি রেকর্ড সংখ্যক ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছি। এবারও ইনশাল্লাহ সর্বোচ্চ ভোট পেয়েই জয় লাভ করার আশা করছি।
অপরদিকে বর্তমান সেক্রেটারি ও পুণরায় সেক্রেটারি প্রার্থী রুহুল আমিন ছিদ্দিকী বলেন, পরাজিত হলে বিজয়ীদের সাদরে গ্রহণ করবো। বিজয়ী হলে প্রতিদ্বন্দী সকলের পরামর্শ নিয়েই কাজ করবো। তিনি বলেন, বর্তমান সেক্রেটারি হিসেবে আমি কতটা সফল তার প্রমান ২১ অক্টোবর ভোটাররাই দিবেন।
মোহাম্মদ রব মিয়া : গ্রেটার নোয়াখালীর ফেনী জেলার দাগনভূঁইয়ার গনিপুর গ্রামের মরহুম আলী আহমেদ মিয়া ও মরহুমা হালিমা খাতুনের ৪ ছেলের মধ্যে প্রথম পুত্র মোহাম্মদ রবমিয়া। সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান হিসেব গ্রামের মক্তবে ধর্মীয় শিক্ষা ও গ্রামের প্রাইমারী স্কুল শেষে দাগনভূইয়া সরকারী আতাতুর্ক হাইস্কুল থেকে ১৯৭৫ সালে মাধ্যমিক পাশ করেন। তিনি ফেনী পলিটেকনিক থেকে ডিপোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে মার্চেন্ট শীপে যোগ দেন। ১৯৮৫ সালে তিনি নিউইয়র্কে আসেন এবং স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। নিউইয়র্কে বর্তমানে নিজস্ব কনষ্ট্রাকশন ব্যবসা করছেন। প্রতিষ্ঠা পেতে তিনি ব্যবসা থেকে শুরু করে সকল ধরনের কাজই করেছেন। প্রবাসী বাংলাদেশীদের কর্মসংস্থানে সবসময়ই সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। দুই সন্তানের জনক মোহাম্মদ রব মিয়ার একমাত্র মেয়ের স্বামী ব্যাংক অব আমেরিকার আইটি অফিসার ও নিউইয়র্কের আইটি জব সেন্টার ফ্যালকন’র পরিচালক। একমাত্র ছেলে কলেজে শেষ বর্ষের ছাত্র।
দাগনভূঁইয়া সমাজকল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও পর্যায়ক্রমে সভাপতি ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন। গ্রেটার নোয়াখালী সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও দু’বারের সভাপতি ছিলেন তিনি। গত নির্বাচনে গ্রেটার নোয়াখালী সোসাইটির নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি গ্রেটার নোয়াখালী সোসাইটির ট্রাষ্টিবোর্ড, অডিট কমিটির প্রধান ও নির্বাচন কমিশনার ছিলেন। মোহাম্মদ রব মিয়া বলেন, আমি দুইবার গ্রেটার নোয়াখালী সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ছিলাম। প্রবাসের একমাত্র সংগঠন যেখানে কোন বিভক্তি নেই। সবাই ঐক্যবদ্ধ। তিনি বলেন, আমার সময়ে ৪শ’ কবরের জায়গা ক্রয় করা হয়েছে। দেনা শেষ করে নোয়াখালী সোসাইটি ফান্ডে পাচলক্ষ ডলার জমা রয়েছে। সোসাইটির সকল কার্যক্রম অনলাইন ভিত্তিক করা হয়েছে। নোয়াখালী সোসাইটির উদ্যোগে এই পর্যন্ত প্রায় ৩০ জন বাংলাদেশীর লাশ দেশে পাঠানো হয়েছে। যে জেলারই হোক আমরা এই সহায়তা করে থাকি। চার্চ ম্যাকডোনাল্ডে নোয়াখালী ভবনে বাংলাদেশ সোসাইটির নিয়মিত বাংলা স্কুল চালু রয়েছে। এই ভবনেই প্রতি মাসে ফ্রি কন্স্যুলেট সেবা দেয়া হয়ে থাকে। এতে বাংলাদেশীরা উপকৃত হচ্ছে। মোহাম্মদ রব মিয়া বলেন, নির্বাচিত হলে বাংলাদেশ সোসাইটিকে বাংলাদশী বান্ধব মডেল সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলবো। সদস্য সংগ্রহ আয়ব্যয় ও যাবতীয় হিসেব অনলাইন ভিত্তিক করা হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভবন নির্মাণসহ সকল ব্যুরোতে কন্স্যুলেট সেবার ব্যবস্থা নেয়া হবে। মোহাম্মদ রব মিয়া বলেন, জয়-পরাজয় আল্লাহর হাতে। বিজয়ী হলে সকলের পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে সোসাইটির কাজ করবো। আর পরাজিত হলে বিজয়ীদের অভিনন্দন জানাবো। তাদের সকল কাজে সহযোগিতা করে যাবো।
আব্দুর রহিম হাওলাদার নয়ন -আলী পরিষদের সিনিয়র সহ সভাপতি পদ প্রার্থী
আব্দুর রহিম হাওলাদার : বর্তমানে বাংলাদেশ সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, কুইন্স কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার (জ্যাকসন হাইটস, ইস্ট এলমার্স্ট, করোনা) মেইনস্টিম সংগঠন সাউথ এশিয়ান আমেরিকান ভোটার এসোসিয়েশন (ঝঅঅঠঅ) এর সহ সভাপতি, বাংলাদেশী আমেরিকান লায়ন্স ক্লাবের ডাইরেক্টর, পপুলার ড্রাইভিং স্কুলের প্রেসিডেন্ট।
বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক দুইবারের বিপুল ভোটে নির্বাচিত সমাজ কল্যাণ সম্পাদক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সহ সাধারণ সম্পাদক, দুবারের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এবং নির্বাচিত সিনিয়র সহ সভাপতি, মুন্সিগঞ্জ বিক্রমপুর সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি, জ্যাকসন হাইটস মসজিদের দুইবারের খাদেম কমিটির সভাপতি, জ্যাকসন হাইটস বিজনেস এসোসিয়েশনের (জেবিবিএ) এর সহ সভাপতি। বাংলাদেশ সোসাইটিতে দায়িত্ব পালনকালে অনেক কাজ সম্পন্ন করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ২০১৩ সালে প্রথম ভ্রামমান কনস্যুলেট ক্যাম্প সেবা সোসাইটির অফিসে চালু করেছেন যা এখনও নিউইয়র্কের বিভিন্ন জায়গায় চালু আছে। ২০১৫ সালে টেক্সাসের এলপাসো কারাগার থেকে অনশনের মাধ্যমে মানবাধিকার সংস্থা ড্রাম এর সহযোগিতায় ৪৫ জন কারাবন্দিকে মুক্তি করে আনা, পেনডামিকের সময় ২০২০ সালে মানুষ যখন প্রাণের ভয়ে বাসা থেকে বাইরে যেতোনা, তখন তিনি নিজের পরিবারকে বাসায় রেখে নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে মানবসেবায় বাসা থেকে বাহিরে ছিলেন। হাওলাদারের শ্লোগান ছিল (আপনারা বাসায় থাকুন আমরা আপনাদের জন্য বাইরে আছি)। বাংলাদেশ সোসাইটির অর্থ খরচ নাকরে প্রথমবারের মত সিটি এবং স্টেট থেকে হাজার হাজার বক্স খাদ্য সামগ্রি, ড্রিংক্স, মেডিসিন, মাক্স, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ইত্যাদি নিডি মানুষের দরজায় পৌঁছে দিয়েছেন। সোসাইটির কবরস্থানে করোনায় মৃত প্রবাসিদের দাফনের ব্যাপারে ফিউনারেল হোম এর সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে মৃত দেহ তাড়াতাড়ি দাফনের ব্যবস্থা করেছেন। তাছাড়া আরও কয়েকজন নিবেদিত প্রাণ সমাজসেবককে নিয়ে নিজেদের অর্থায়নে খাদ্য সামগ্রি অসহায় (বিশেষ করে আন-ডকোমেন্টেড) মানুষের দরজায় পৌঁছে দিয়েছেন। করোনা মহামারির সময়ে ২৪ ঘণ্টা ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য প্রদান থেকে শুরু করে সম্ভব সর্বপ্রকার সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে আব্দুর রহিম হাওলাদার কোভিড হিরোতে আখ্যায়িত হয়েছেন।
মোহাম্মদ আলী : বাংলাদেশ সোসাইটির সেক্রেটারি প্রার্থী ও বর্তমান কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলীর জন্ম ও বেড়ে উঠা নারায়নগঞ্জে। তিনি নারায়নগঞ্জ জেলা সমিতির সাবেক সভাপতি, সেক্রেটারি। নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স কমিউনিটি বোর্ড-১২ এর মেম্বার ও এরিয়া চেয়ারপার্সন মোহাম্মদ আলী ওয়ার্ল্ড হিস্টোরিতে মাষ্টার্স করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তিনি সার্টিফাইড ইনকাম ট্যাক্স প্রস্তুতকারক ও রিয়েল স্টেট ইনভেষ্টর। তিনি ৭৮৬ টিভি ইউএসএ’র একজন উপস্থাপক । দুস্থ শিশুদের সহায়তা প্রতিষ্ঠান দি অপটিমিষ্ট স্থায়ী সদস্য ও সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি, বাংলাদেশী আমেরিকান লায়ন্স ক্লাবের দুবারের নির্বাচন কমিশনার, বর্তমান ডিরেক্টর । নিউ আমেরিকান ভোটার এসোসিয়েশন নাভা, কো-কনভেনর সাউথ এশিয়ান কনভেনশন ২০১৮।
আজীবন সদস্য হিসেবে আছেন বাংলাদেশ সোসাইটিতে, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার, আল-আরাফা ইসলামিক সেন্টার, ফুলতলী, জ্যাকসন হাইটস ও উডসাইড মসজিদে। কমিউনিটি সার্ভিস ও মূলধারার সম্পৃক্ততার জন্য নিউইয়র্ক গভর্ণর, সিটি কাউন্সিলম্যান, সিনেট ম্যাজরিটি লিডার কর্তৃক সাংগঠনিক সম্মাননা ও এনআরবিসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠন থেকে বিশেষ সম্মাননা পেয়েছেন। নারায়নগঞ্জের কদুম রসুল ঐতিহ্যবাহী মিয়াবাড়ীর খাদেম ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান মোহাম্মদ আলীর বাবা মরহুম হাজী সদর উদ্দিন মিয়া ছিলেন ব্রিটিশ সরকারের অবসর প্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা।
দুই সন্তানের জনক মোহাম্মদ আলীর বড় মেয়ে হপস্ট্রা ইউনিভার্সিটিতে আইন বিষয়ে ও ছোট মেয়ে কুইন্স কলেজ এ ইংলিশে গ্র্যাজুয়েশন করেছে। সেক্রেটারি পদে বিজয়ী হলে সোসাইটিকে মূলধারার সাথে সম্পৃক্ত করার কাজ করবেন বলে জানান তিনি। বাংলাদেশ ডে প্যারেড, বাংলাদেশ ভবন ও অনলাইন ভিত্তিক সদস্য সংগ্রহে কাজ করবেন। জয়-পরাজয় যাই হোক। বাংলাদেশ সোসাইটির উন্নয়নে কাজ করার অংগীকার ব্যক্ত করেন মোহাম্মদ আলী। তিনি করোনা মহামারিকালে কমিউনিটির প্রায় দশ হাজার মানুষের মাঝে খাদ্য-সামগ্রী বিতরণ করেন।
রুহুল আমিন সিদ্দিকী : বাংলাদেশ সোসাইটির বর্তমান সেক্রেটারি রুহুল আমিন ছিদ্দিকী এবারও সেক্রেটারি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবার বিজয়ী হলে বাংলাদেশ ভবন ও কমিউনিটি সেন্টার, স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ, কমিউনিটির নতুন প্রজন্মের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থাসহ প্রবাসী বাংলাদেশীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবেন। আর পরাজিত হলেও সোসাইটির অগ্রযাত্রায় বিজয়ীদের সার্বিক সহযোগিতা করে যাবেন বলে জানান রুহুল আমিন ছিদ্দিকী। মুন্সীগঞ্জের টংগীবাড়ীর মান্দ্রা গ্রামে রুহুল আমিন ছিদ্দিকীর জন্ম ও বেড়ে উঠা। মুন্সীগঞ্জ বিক্রমপুর কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও নারায়নগঞ্জ তুলারাম কলেজ থেকে বিএ পাশ করেছেন। ১৯৯৬ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। বাবা মরহুম মোহাম্মদ ছিদ্দিক পাইক’র ৫ ছেলে মেয়ের মধ্যে সবার বড় রুহুল আমিন ছিদ্দিকী। ২ সন্তানের জনক রুহুল আমিন ছিদ্দিকীর ছেলে বাফেলো ইউনিভার্সিটিতে ও মেয়ে ১০ম গ্রেডে পড়ালেখা করছে। নিজের ব্যবসার পাশাপাশি কমিউনিটি সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও কার্যকরী সদস্য ছিলেন। মুন্সীগঞ্জ বিক্রমপুর সমিতির সাবেক সেক্রেটারি ও সভাপতি, উডসাইড বায়তুল জান্নাহ মসজিদের সাবেক সভাপতি, শাপলা ওয়েলফেয়ারের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও বর্তমান উপদেষ্টা এবং দি অপটিমিষ্ট’র স্পন্সর। নির্বাচিত হলে অসম্পূর্ণ কাজ গুলো সবার সহযোগিতা নিয়ে সম্পূর্ণ করবেন বলে জানান রুহুল আমিন ছিদ্দিকী।
Posted ৭:৩২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh