বাংলাদেশ ডেস্ক : | বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। স্থানীয় সময় গত ২০ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে এক বৈঠকে এই আশ্বাস দেন। ২০ সেপ্টেম্বর সকালেই তিনি নিউ ইয়র্কে পৌঁছান। গত ২১ সেপ্টেম্বর তার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার কথা। তিনি কী ভাষণ দেবেন তা নিয়ে আলোচনা চলছে। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথমবারের মতো সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন বাইডেন। খবর সিএনএনের
প্রেসিডেন্ট বাইডেন সমন্বিতভাবে বিশ্বকে শান্তি-সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেওয়ার জন্য জাতিসংঘের মহাসচিবকে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সহযোগিতা ও সমর্থনের ব্যাপারে আশ্বাস দেন। সাক্ষাতের সময় সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, বিশ্বের উন্নয়ন, শান্তি, নিরাপত্তার জন্য মহামারি করোনা ও জলবায়ুর পরিবর্তন বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিশ্বের পাশে থাকবে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন বিশ্বসভায় দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করতে যাচ্ছেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি ছিল ‘আমেরিকা ফার্স্ট’। এই নীতি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে এনে বিশ্বকে আবার নেতৃত্ব দেওয়ার কথা আগেই বাইডেন ঘোষণা দিয়েছিলেন। সাধারণ পরিষদে সে কথার পুনরাবৃত্তি করতে পারেন বাইডেন। হোয়াইট হাউজ থেকে আভাস দেওয়া হয়েছে যে, বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আবার বিশ্বমঞ্চে ফিরে আসার কথা দৃঢ়তার সঙ্গে সাধারণ পরিষদে উচ্চারণ করবেন বাইডেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন সাধারণ পরিষদে যোগ দিয়ে বিশ্বনেতাদের মন জয় করার চেষ্টা করবেন। হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেছেন, নানা বিষয়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মতপার্থক্য থাকতেই পারে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপারেও অন্যান্য দেশের এমন অবস্থান আছে। তবে শেষ পর্যন্ত বড় কথা হলো, এসব বিরোধ পাশে সরিয়ে রেখে বিশ্বের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির উদ্যোগের কথাই প্রেসিডেন্ট বাইডেন জাতিসংঘে দেওয়া তার প্রথম বক্তৃতায় প্রাধান্য দেবেন।
‘নতুন করে স্নায়ুযুদ্ধ চায় না যুক্তরাষ্ট্র’
বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শীতল হয়ে পড়েছে। দুই পরাশক্তির এমন শীতল সম্পর্ক বিশ্বে নতুন করে স্নায়ুযুদ্ধের সূচনা করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশ্লেষকেরা। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তাঁর দেশ নতুন করে স্মায়ুযুদ্ধে জড়াতে চায় না।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সংস্থাটির সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে স্থানীয় সময় গত ২১ সেপ্টেম্বর বাইডেন এ মন্তব্য করেন। বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে জো বাইডেন বলেন, উদ্ভূত চ্যালেঞ্জের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য যেকোনো দেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এমনকি অন্যান্য বিষয়ে মতবিরোধ থাকার পরও। যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে কোনো স্নায়ুযুদ্ধে জড়াবে না। বিশ্বব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব জোরদারের অঙ্গীকার করে ক্ষমতায় এসেছেন বাইডেন। তবে দুই দশকের আফগান যুদ্ধ থেকে খালি হাতে ফেরার জন্য দেশে-বিদেশে তীব্র সমালোচনার শিকার হয়েছেন তিনি। স্বভাবতই আফগান যুদ্ধ-পরবর্তী মার্কিন কৌশলের আভাস উঠে এসেছে বাইডেনের বক্তব্যে। এ বিষয়ে জো বাইডেন বলেন, আফগান যুদ্ধের সমাপ্তির মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কঠোর কূটনীতির এক নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে শক্তি প্রয়োগের প্রস্তুতি নেবে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সামরিক শক্তি প্রয়োগ সবশেষ উপায় হিসেবে বিবেচিত হবে। বাইডেন গত ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করেন। সমন্বিতভাবে বিশ্বকে শান্তি-সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেওয়ার জন্য বাইডেন জাতিসংঘ মহাসচিবকে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সহযোগিতা-সমর্থনের ব্যাপারে আশ্বাস দেন। জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, বিশ্বের উন্নয়ন, শান্তি, নিরাপত্তার জন্য মহামারি করোনা ও জলবায়ুর পরিবর্তন বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিশ্বের পাশে থাকবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন। এদিকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এবারের অধিবেশনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা চাইলেন বাইডেন
প্রথমবারের মতো জাতিসংঘে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভাষণ দিলেন জো বাইডেন। ভাষণে তিনি পরমাণু সমঝোতা ইস্যুসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন, এর মধ্যে ছিলোন ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সমস্যাও। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, সার্বভৌম এবং গণতান্ত্রিক ফিলিস্তিন রাষ্ট্রই হতে পারে ইসরায়েলের সুরক্ষিত ভবিষ্যতের পথ।
এভাবে জাতিসংঘের প্রথম ভাষণে গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে ৭৬তম সাধারণ অধিবেশনে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা চাইলেন তিনি। বাইডেন বলেন, আমি বিশ্বাস করি, ইসরায়েলে শান্তি ফেরানোর জন্য ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার প্রয়োজন আছে। দুটি আলাদা দেশ তৈরিই এক্ষেত্রে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য সমাধান হতে পারে। এতে একটি ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের ভবিষ্যৎও সুরক্ষিত হবে। এসময় বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে বাঁচতে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আমেরিকা ১০ হাজার কোটি ডলার অনুদান দেবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার জন্য আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল দেশগুলোকে সাহায্য করতে হবে।করোনাভাইরাস মোকাবিলায়ও বিশ্বের দেশগুলোকে আমেরিকা সহযোগিতা করছে দাবি করে জো বাইডেন বলেন, তার দেশ এখন পর্যন্ত কোনও পূর্বশর্ত ছাড়াই বিভিন্ন দেশকে করোনাভাইরাসের ৫০ কোটি ডলার টিকা প্রদান করেছে।
Posted ৫:৫৭ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh