বাংলাদেশ ডেস্ক : | বৃহস্পতিবার, ০৭ অক্টোবর ২০২১
পানামা পেপারসের মতো এবার বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারির গোমর ফাঁস করল ‘প্যান্ডোরা পেপারস’। কর ফাঁকি দিয়ে বিদেশে অর্থ পাচার ও অর্থনৈতিক লেনদেনের গোপনীয়তার ওপর বিশদভাবে ‘প্যান্ডোরা পেপারস’ নামে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে)। স্থানীয় সময় গত ৩ অক্টোবর প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভদ্মাদিমির পুতিন, যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার, জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ, চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রে বাবিসের মতো নেতার নাম দুর্নীতির চিত্র।
বিবিসি বলছে, অফশোর কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগকারী হিসেবে যাদের নাম পাওয়া গেছে, তাদের মধ্যে বিভিন্ন দেশের সাবেক ও বর্তমান ৩৫ নেতা এবং তিনশর বেশি সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন। ৯০টির বেশি দেশের এসব কর্মকর্তার মধ্যে মন্ত্রী, বিচারক, মেয়র ও সেনাবাহিনীর জেনারেলরা রয়েছেন। আরও আছেন শতাধিক বিলিয়নেয়ার, বিভিন্ন ক্ষেত্রের জনপ্রিয় ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীরা। ফাঁস হওয়া নথিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভদ্মাদিমির পুতিনের মোনাকোয় গোপন সম্পদ এবং আন্দ্রে বাবিসের ফ্রান্সে দুই কোটি ২০ লাখ ডলার দিয়ে প্রাসাদ কেনার তথ্য বেরিয়ে এসেছে। দেশটিতে চলতি সপ্তাহের শেষে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি। এতে দেখা গেছে, জর্ডানের বাদশাহ গোপনে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশে ১০ কোটি ডলারের সম্পদ করেছেন। যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ও তার স্ত্রী লন্ডনে একটি অফিস কেনার সময় তিন লাখ ১২ হাজার পাউন্ড কর ফাঁকি দিয়েছেন।
গত ৩ অক্টোবর আইসিআইজে এক টুইটবার্তায় জানায়, বিভিন্ন মাধ্যমে গোপনে সংগ্রহ করা এক কোটি ১৯ লাখ নথি পর্যালোচনা করে প্যান্ডোরা পেপারস তৈরি করা হয়েছে। ১১৭টি দেশের ছয় শতাধিক সাংবাদিক এ বিশাল কর্মযজ্ঞে যুক্ত রয়েছেন। বিশ্বের প্রায় সব দেশ ও অঞ্চলের অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারির চিত্র উঠে এসেছে তাদের প্রতিবেদনে। প্যান্ডোরা পেপারস কেলেঙ্কারির সঙ্গে আরও যাদের নাম জড়িয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন- রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভদ্মাদিমির পুতিনের বেশ কয়েকজন ঘনিষ্ঠ ও প্রভাবশালী ব্যক্তি। এর মধ্যে গেনাডি তিমচেঙ্কোর অন্যতম। এ ছাড়া পুতিনের খুবই ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত প্রভাবশালী নারী স্লেটলানা ক্রিভোনোগিখের নামও রয়েছে।
তারা পুতিনের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করেছেন। আরব বিশ্বের দীর্ঘকাল ক্ষমতাসীন রাজা জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ নিজে দানশীল হিসেবে পরিচিত। সেই তিনিই নিজ দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে ক্যালিফোর্নিয়া, ওয়াশিংটন, লন্ডনসহ বড় বড় শহরে বিলাসবহুল ভবন কিনেছেন বলে প্যান্ডোরা পেপারসে উঠে এসেছে।
এদিকে, পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী শওকত তারিনসহ দেশটির প্রায় ৭০০ ব্যক্তির নাম এসেছে প্যান্ডোরা পেপারসে। তাদের বেশিরভাগই অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে বিদেশে প্রচুর সম্পদ গড়ে তুলেছেন। পাচারের অর্থে করমুক্ত কোম্পানি (ট্যাক্স হ্যাভেন) পরিচালনার জন্য বিশ্বে বহুল আলোচিত ও সমালোচিত দেশ পানামা, সুইজারল্যান্ড ও বেশ কিছু দ্বীপ-দেশ। এর আগে ২০১৬ সালে প্রকাশিত পানামা পেপারসে দেখা গিয়েছিল দুর্নীতির বৈশ্বিক চিত্র।
পানামা পেপারস প্রকাশের পর বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অর্থ পাচারের চিত্র সামনে আসে। এর ধাক্কায় আয়ারল্যান্ড ও পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীরা ধরাশায়ী হন। আইসিআইজে গত ৩ অক্টোবর টুইটবার্তায় ইঙ্গিত দিয়েছে, অর্থনৈতিক অস্বচ্ছতার জন্য এবারও বড় বড় মুখ বিপাকে পড়েছেন। এবার অন্যতম বড় মুখ চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী আনদ্রেজ বাসিস। ১৩ মিলিয়ন ডলার পাচার করে ফ্রান্সে বিলাসবহুল বাড়ি কেনার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। করমুক্ত কোম্পানি পরিচালনার সুযোগ থাকায় বিশ্বজুড়ে বিশেষ পরিচিতি রয়েছে পানামার। দেশটি এখনও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ট্যাক্স হ্যাভেন লিস্টে রয়েছে। ফলে প্যান্ডোরা পেপারসেও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে দেশটির সরকারের। এরই মধ্যে আইসিআইজের কাছে তারা চিঠি লিখেছে।
চিঠিতে তারা অনুরোধ করেছে, পানামা সম্পর্কে বিশ্বের মানুষের ভুল ধারণা তৈরি হয়, এমন কোনো কাজ যেন না করা হয়। তবে এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি সংস্থাটি। বিভিন্ন দেশ থেকে পাচার হওয়া বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার দিয়ে গড়ে ওঠে অফশোর শেল কোম্পানি। নিজ দেশকে ফাঁকি দিয়ে বড় বড় ব্যবসায়ী, রাজনীতিক, সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান, রাজপরিবারের সদস্য, বিনোদন ও ক্রীড়াজগতের তারকারা এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন। পানামার মতো দেশে গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। আইসিআইজের বিশদ অনুসন্ধানে উঠে এসেছে সেই চিত্র।
এক কোটি ২০ লাখ গোপন নথি ফাঁস : প্যানডোরা পেপারস ফাঁস হওয়ায় বিশ্বজুড়ে তোলপাড়। নয়াচাঞ্চল্য শুরু হয়েছে অনেক দেশের শীর্ষ ক্ষমতাবলয়ে। এবার অভিযুক্তদের অন্যতম পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের একাধিক ঘনিষ্ঠজন ও জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ। এছাড়া জানা গেল মোনাকোয় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের গোপন সম্পদ এবং কর ফাঁকি দিয়ে টনি ব্লেয়ারের অফিস ভবন কেনার খবর। ফিনসেন ফাইলস, প্যারাডাইস পেপারস, পানামা পেপারস এবং লাক্সলিকসের ধারাবাহিকতায় এবার ৯৫ হাজার অফশোর ফার্মের ১ কোটি ২০ লাখ গোপন নথি ফাঁস হয়েছে, যাতে বেরিয়ে আসছে বিশ্বনেতা, রাজনীতিবিদ ও ধনকুবেরদের গোপন সম্পদ এবং লেনদেনের তথ্য। এর নাম দেয়া হয়েছে ‘প্যানডোরা পেপারস’। ১১৭টি দেশের সাড়ে ছয়শর বেশি সাংবাদিকের বিশ্লেষণ ও তদন্তের পর এখন ধারাবাহিকভাবে এসব তথ্য প্রকাশ করছে ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে)। বিশ্বজুড়ে ৩৫ জন রাষ্ট্রনেতা, ৩০০ সরকারি কর্মকর্তা, শখানেক বিলিয়নেয়ারের গোপন সম্পদ ও লেনদেনের তথ্য এসেছে এসব নথিতে। এসব বিলিয়নেয়ারের মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়িক নেতা, রকস্টার ও বিনোদন জগতের তারকারা।
অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংগঠন আইসিআইজে জানায়, লন্ডনে একটি অফিস কেনার সময় সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ও তার স্ত্রী শেরি ব্লেয়ারের ৩ লাখ ১২ হাজার পাউন্ডের কর ফাঁকি দেয়ার তথ্য প্যান্ডোরার নথিতে এসেছে। জর্ডানের বাদশাহ গোপনে মালিবু এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন। লন্ডন ও দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডে আটটি সম্পত্তি কিনেছেন। এ সপ্তাহে নির্বাচনের মুখে থাকা চেক প্রধানমন্ত্রী কীভাবে ফ্রান্সের দক্ষিণে ১ কোটি ২০ লাখ পাউন্ডের দুটো ভিলা কেনার ক্ষেত্রে অফশোর কোম্পানিকে কাজে লাগানোর বিষয়টি চেপে গেছেন, তাও উঠে এসেছে ফাঁস হওয়া নথিতে। আজারবাইজানের ক্ষমতাসীন অলিয়েভ পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অর্থ লুকাতে এ পরিবার একটি বিশাল অফশোর নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। তারা ?যুক্তরাজ্যে ৪০ কোটি পাউন্ডের সম্পত্তি কেনাবেচায় কীভাবে জড়িত, তা নথিতে উঠে এসেছে। এছাড়া অন্যদের মধ্যে আছেন কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা ও তার পরিবারের ছয় সদস্য। গোপন সম্পদ এবং লেনদেনের তালিকায় আরো আছেন সাইপ্রাস ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ডন জানায়, প্যানডোরা পেপারসে যাদের নাম এসেছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী শওকত তারিন, শিল্প ও উৎপাদনমন্ত্রী খোশরো বখতিয়ারের পরিবার, সিনেটর ফয়সাল ভাদা, ইমরানের দল তেহরিক ই ইনসাফের নেতা আবদুল আলিম খান, পাকিস্তান মুসলিম লিগের (কিউ) নেতা চৌধুরী মনিস এলাহী, পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা শারজিল মেমন এবং সফটওয়্যার কোম্পানি এক্সাক্টের সিইও শোয়াইব শেখ। জিও নিউজ জানায়, অফশোর কোম্পানিতে যাদের বিনিয়োগের তথ্য প্যানডোরা পেপারসে এসেছে, তাদের মধ্যে পাকিস্তানির সংখ্যা সাতশর বেশি। এর মধ্যে দেশটির সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারাও আছেন।
আইসিআইজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের একজন বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা লন্ডনের একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের মালিকানা হস্তান্তর করেছিলেন পাকিস্তানের লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাফাত উল্লাহ শাহর স্ত্রীর নামে। কাজটিও করা হয়েছিল অফশোর কোম্পানির লেনদেনের আড়ালে। পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের সহযোগী জেনারেল সাফাত অবশ্য দাবি করেন, ওই অ্যাপার্টমেন্ট কেনার ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়নি। জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ বিন আল-হুসেইন যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে ৭ কোটি পাউন্ডের (১০ কোটি ডলার) গোপন সম্পদের এক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন বলে উঠে এসেছে প্যানডোরা পেপারসে ফাঁস হওয়া তথ্যে। এসব আর্থিক নথিতে বাদশাহর মালিকানাধীন কয়েকটি অফশোর কোম্পানির একটি গোপন নেটওয়ার্ক চিহ্নিত করা হয়েছে। ১৯৯৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ১৫টি বাড়ি কেনেন দ্বিতীয় আবদুল্লাহ।
বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের ম্যালিবু এবং যুক্তরাজ্যের অ্যাসকট ও লন্ডনে এসব বাড়ি কিনেছেন আবদুল্লাহ। তবে বাদশাহর আইনজীবীরা বলছেন, ব্যক্তিগত সম্পদ ব্যবহার করেই তিনি এসব বাড়ি কিনেছেন এবং এক্ষেত্রে অফশোর কোম্পানিকে কাজে লাগানোয় ‘অনুচিত’ কিছু ঘটেনি। বিবিসি বলছে, বিভিন্ন দেশ থেকে মোটা অঙ্কের আন্তর্জাতিক সহায়তা পায় জর্ডান। এসব দেশের অন্যতম যুক্তরাজ্য। জর্ডানকে দেয়া সহায়তা তহবিল দ্বিগুণ বাড়িয়ে ২০১৯ সালে ৬৫ কোটি পাউন্ডে উন্নীত করে যুক্তরাজ্য। জর্ডানের বাদশাহ পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে নমনীয় সম্পর্ক রাখেন। তবে নিজ দেশে তার বিরুদ্ধে কর্তৃত্ববাদী শাসনের অভিযোগ রয়েছে।
মালিবুতে জর্ডানের বাদশাহর প্রতিবেশীদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক ও অভিনেতা স্যার অ্যান্থনি হপকিন্স, অভিনেত্রী জুলিয়া রবার্টস, টিভি ব্যক্তিত্ব সায়মন কাউয়েল, মডেল ও সংগীতশিল্পী গিনেথ প্যালট্রো, চলচ্চিত্র পরিচালক অভিনেত্রী ও সংগীতশিল্পী বারবারা স্ট্রেইস্যান্ড। এসব কোম্পানিতে যাদের নেয়া হয়েছিল, তারা বাদশাহর পরিচয় গোপন রাখার বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন। কোম্পানির অভ্যন্তরীণ একটি নথিতে বাদশার কথা বোঝাতে লেখা হয়, ‘আপনি জানেন তিনি কে।’ তবে বাদশাহর আইনজীবীরা বলছেন, তার সম্পদের এসব তথ্য সঠিক ও হালনাগদ নয়। তাদের দাবি, বিদেশে আবদুল্লাহর সব সম্পত্তি তার ব্যক্তিগত সম্পদের মাধ্যমে অর্জিত। সেখান থেকে জর্ডানের জনগণের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পে তহবিলও দেয়া হয়।
Posted ৭:৪০ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৭ অক্টোবর ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh