বিয়ে করলেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। গত ৫ জুন তিনি পারিবারিকভাবে বিয়ের পিড়িতে বসেন। ৬৫ বছর বয়সী রেলমন্ত্রী সুজন তার দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন দিনাজপুরের মেয়ে ৩৮ বছর বয়সী শাম্মী আকতার মনিকে। মনি পেশায় আইনজীবী। তারও এটি দ্বিতীয় বিয়ে। ১১ জুন (শুক্রবার) সকালে বিয়ের বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে নিশ্চিত করেছেন শাম্মী আকতার মনির বড় ভাই মো. জাহিদুল ইসলাম মিলন হোসেন।

দিনাজপুরের বিরামপুরের প্রয়াত আব্দুর রহিমের মেয়ে শাম্মী আকতার মনি থাকেন ঢাকার উত্তরায়। তার দুই ভাই বিরামপুরেই থাকেন, সেখানে ব্যবসা করেন তারা। নুরুল ইসলাম সুজনের প্রথম স্ত্রী নিলুফার জাহান ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মারা যান। তাদের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। তিন সন্তানেরই বিয়ে হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মৃত আব্দুর রহিমের পৈতৃক বাড়ি ছিল পাবনায়। পিডিবিতে লাইনম্যান পদে চাকরির সুবাদে তিনি বিরামপুরে আসেন, তারপর নতুনবাজার এলাকায় বাড়ি করে স্থায়ী হন। এর আগে কুষ্টিয়ায় বিয়ে হয়েছিল মনির। ২০১১ সালে ডিভোর্স হয়ে যায়। ওই পক্ষে একটি মেয়ে রয়েছে। এরপর থেকে মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় আছেন মনি।

শাম্মী আকতার মনির বড় ভাই জাহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, মনি ঢাকার উত্তরায় থাকেন। ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ছিলেন। আইন বিষয়ে পাস করে হাইকোর্টে প্র্যাকটিসও করেন। আইনি বিষয়ে পরামর্শ নিতে ২০ দিন আগে রেলমন্ত্রীর কাছে যান তার বোন। পরে তার বোনকে মন্ত্রীর পছন্দ হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘৫ জুন দুই পরিবারের সম্মতিতে পারিবারিকভাবে ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক ঘরোয়া পরিবেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমতিক্রমে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বরের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বিরামপুরের বিচারপতি ইজারুল হক ও তার স্ত্রী, কনের পক্ষে আমি ও আমার ভাই উপস্থিত ছিলাম। ছোট পরিসরে যতটুকু অনুষ্ঠান করা দরকার, সেভাবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে।’

মিলন জানান, শাম্মী আকতার মনি বর্তমানে উত্তরায় আগের বাড়িতেই আছেন। ডিসেম্বরে স্বামী রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের বাড়িতে আনুষ্ঠানিকভাবে যাবেন। এখন মনির বাসাতে আছেন মন্ত্রী।

বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে রেলমন্ত্রী শুক্রবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গত ৫ তারিখে আকদ করেছি। তিনি (স্ত্রী) ল পাস করেছেন। ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার।’

নুরুল ইসলাম সুজন ১৯৫৬ সালের ৫ জানুয়ারি পঞ্চগড়ে জন্মগ্রহণ করেন। পঞ্চগড়-২ (বোদা-দেবীগঞ্জ) আসন থেকে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। তিনিও আইনের ছাত্র ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তখন থেকেই তিনি রাজনীতিতে জড়িত। ডাকসুর বিজ্ঞান মিলনায়তন বিষয়ক সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা নুরুল ইসলাম সুজন সুপ্রিম কোর্ট আইনীজীব সমিতির সাধারণ সম্পাদকও হয়েছিলেন। সুজনের প্রথম স্ত্রী নিলুফার ইসলাম ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগের মারা যান। তাদের তিন সন্তান রয়েছে।

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জিতে প্রথমবার সাংসদ হন পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের নেতা নুরুল ইসলাম সুজন। পরে দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনেও তিনি বিজয়ী হন। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করলে নুরুল ইসলাম সুজনকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।