ব্রাজিলের কট্টর ডানপন্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর সমর্থকরা গত ৮ জানুয়ারি দেশটির সুপ্রিম কোর্ট, কংগ্রেস ভবন ও প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দেশটিতে গণগ্রেপ্তার চলছে। এর মধ্যেই দেশটির শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ। এমন নির্দেশের পরপরই ব্রাজিলের সামরিক পুলিশের সাবেক কমান্ডারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। আজ বুধবার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অক্টোবরে বামপন্থী প্রার্থী লুইজ ইনাসিও লুলা ডা সিলভার কাছে নির্বাচনে হেরে যান বলসোনারো। তবে তার সমর্থকরা তার এই হার মেনে নিতে অসম্মতি জানায় এবং তারা সামরিক উত্থানের আহ্বান জানিয়ে লুলার পদত্যাগ দাবি করে। এরপর গত ১ জানুয়ারি লুলার শপথগ্রহণের সপ্তাহখানেক পরেই দেশটিতে এই নজিরবিহীন দাঙ্গার ঘটনা ঘটে।

ব্রাজিলের অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস জানিয়েছে, অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্রাসিলিয়ার সাবেক জননিরাপত্তা প্রধান অ্যান্ডারসন টরেসসহ অন্যান্যরাও রয়েছেন। তবে দাঙ্গায় তার কোনো ভূমিকা থাকার কথা অস্বীকার করেছেন টরেস। এ ছাড়া বলসোনারোর সমর্থকরা কংগ্রেস, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ এবং সুপ্রিম কোর্টে হামলা চালানোর পরে পুলিশ কমান্ডার কর্নেল ফাবিও অগাস্টোকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।

মঙ্গলবার ব্রাসিলিয়ার সাবেক জননিরাপত্তা প্রধান অ্যান্ডারসন টরেসের বিরুদ্ধে ‘কাঠামোগত নাশকতা অভিযান’ পরিচালনার অভিযোগ আনা হয়। ব্রাসিলিয়াতে নিরাপত্তা দেখভালের দায়িত্বে নিযুক্ত রিকার্ডো ক্যাপেলি বলছেন, সরকারি ভবনগুলোতে হামলার আগে টরেসের ‘কমান্ডের অভাব’ ছিল।

বিবিসি বলছে, দাঙ্গার পরে প্রায় দেড় হজার জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ একাডেমিতে আনা হয়। তবে কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে প্রায় ৬০০ জনকে পৃথক জায়গায় নেওয়া হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ আনার জন্য পুলিশ কর্মকর্তারা পাঁচ দিন সময় পাবেন। এদিকে ব্রাজিলিয়ান কংগ্রেস ও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলার দায় বলসোনারোর ঘাড়ে চাপিয়েছেন প্রেসিডেন্ট লুলা। সেইসঙ্গে ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্ব ফেডারেল বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি। তবে লুলার অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বলসোনারো। পাশাপাশি তিনি এই ঘটনার নিন্দাও জানিয়েছেন। তবে বলসোনারো এও দাবি করেছেন, তার সমর্থকদের ‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে’র অধিকার রয়েছে।