বাংলাদেশ অনলাইন : | বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২২
উত্তর কোরিয়াকে নিয়ে উত্তেজনা প্রায় নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে; কিন্তু গত পাঁচ বছরের মধ্যে সম্প্রতি কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে- উত্তর কোরিয়া যদি তাদের সপ্তম পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালায়, তা হলে তারা ‘তুলনাহীন’ প্রতিক্রিয়া দেখাবে। এমন প্রেক্ষাপটে আশঙ্কা করা হচ্ছে, কোরীয় উপদ্বীপে কি আবার যুদ্ধের উত্তেজনা বাড়ছে?
গতকাল বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে উত্তর কোরিয়া জাপানের ওপর দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। জাপান তাদের বাসিন্দাদের তড়িঘড়ি করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে গেছে। জাপান বলছে, এটি শত্রুতা উসকে দেওয়ার জন্য করা হয়েছে। এ ছাড়া উত্তর কোরিয়া বেশ কয়েক দফা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে, যেগুলো দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় গিয়ে পড়েছে। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পাশাপাশি কয়েকশ গোলা সাগরে নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া। দুই কোরিয়ার মধ্যে সাগরে শান্তি বজায় রাখতে ২০১৮ সালে বাফার জোন প্রতিষ্ঠা করা হয়; কিন্তু উত্তর কোরিয়ার গোলা এই বাফার জোনেও নিক্ষেপ করা হয়েছে।
এদিকে গত সোমবার উত্তর কোরিয়ার একটি জাহাজ দুই কোরিয়ার মধ্যে সমুদ্রসীমা অতিক্রম করেছে। সেই ঘটনায় উভয়পক্ষই গোলা বিনিময় করে। দক্ষিণ কোরিয়া বলছে, সমুদ্রসীমা অতিক্রমের ঘটনা ছিল ইচ্ছাকৃত। তা হলে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন আসলে চাইছেন কী? এর জবাবে বিবিসি বলেছে, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের মূল কারণ তিনটি। সেগুলো হলো- তার অস্ত্র প্রযুক্তি পরীক্ষা করে দেখা এবং উন্নত করা, বিশ্বকে তথা যুক্তরাষ্ট্রকে রাজনৈতিক বার্তা পাঠানো এবং ঘরে বসে নিজের জনগণকে শাসনের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা হয়।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ধারণা করছে, ২০১৭ সালের পর উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা না করলেও নিকট ভবিষ্যতে তা আবার শুরু করতে যাচ্ছে। জাপানের রাজধানী টোকিওতে এক সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো হিউন-ডং বলেছেন, উত্তর কোরিয়া যদি তাদের সপ্তম পারমাণবিক পরীক্ষা নিয়ে অগ্রসর হয়, তা হলে অতুলনীয় মাত্রার প্রতিক্রিয়া দেখানো যে প্রয়োজন হয়ে পড়বে, সে বিষয়ে আমরা সম্মত হয়েছি। সংবাদ সম্মেলনে চো-এর সঙ্গে জাপানের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকিও মোরি ও যুক্তরাষ্ট্রের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যানও ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে উত্তর কোরিয়া প্রথম পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। তার পর থেকে এবারই প্রথম রাশিয়া ও চীন নিরাপত্তা পরিষদে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার একটি মার্কিন প্রস্তাবে ভিটো দিয়েছে।
চলতি বছর উত্তর কোরিয়া নজিরবিহীন গতিতে তাদের ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষাও চালিয়ে যাচ্ছে, এরই মধ্যে দেশটি দুই ডজনের বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে, যার একটি জাপানের ওপর দিয়ে উড়েও গেছে। উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের জবাবে গত মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে হওয়া সামরিক মহড়ায় যুক্তরাষ্ট্র ইউএসএস রোনাল্ড রিগানকে ব্যবহার করেছে। ২০১৭ সালের পর এবারই প্রথম দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র যৌথমহড়ায় একটি মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ছিল।
Posted ১১:২৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh