বাংলাদেশ অনলাইন : | বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি, আওয়ামী লীগ নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া এবং আগামী সংসদের সম্ভাব্য বিরোধী দলসহ বিভিন্ন বিষয়ে আওয়ামী লীগের কাছে জানতে চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সংস্থাটির প্রতিনিধিরা সরকারি দলের প্রতিনিধি দলের কাছে এমন প্রশ্ন করেছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ২৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) বিকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে ইইউ দল জানতে চেয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কতটা প্রস্তুত, নির্বাচন বিরোধীদের অবস্থা কী, তারা মেজর কোনও সমস্যা করতে পারবে কিনা, এগুলো নিয়ে অনেক প্রশ্ন, অনেক কথা হয়েছে।
ইইউ প্রতিনিধিরা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের বক্তব্য শুনেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় এই নির্বাচনে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্বাচনটা আমাদের করতে হয়েছে। ২৭টির মতো দল আছে, ১ হাজার ৮৯৬ জন প্রার্থী আছেন। এসব বিষয় তারা পজিটিভলি নিয়েছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের নির্বাচন সামনে রেখে তাদের যে দায়িত্ব, তারা আসলে বলার চেয়ে শুনতে আগ্রহী ছিলেন বেশি। তারা তেমন মন্তব্য করতে চাননি। আমরাও ইনসিস্ট করিনি। আমরা আমাদের নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছি। বিএনপি কেন আসেনি।
ইইউ প্রতিনিধিরা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন জানিয়ে সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা বলেছেন, আওয়ামী লীগের লোকজনই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন কিনা? বাইরের কে কে আছেন? অনেকেই কি বিএনপি থেকে এসে প্রার্থী হয়েছেন? স্বতন্ত্র শুধু আওয়ামী লীগের না। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আমাদের জবাব দিয়েছি। তারা সেটা শুনেছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাদের বহিষ্কার এবং সদস্য পদ স্থগিত করার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, দলীয় যে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ক্যাম্পেইন চালাতে পারেন। সে অধিকার দেওয়া হয়েছে। যিনি স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন, তিনি যদি আওয়ামী লীগের হন, তার সঙ্গে যদি আওয়ামী লীগের অন্য নেতাকর্মীরা কাজ করেন, তাহলে কোনও সমস্যা দেখি না। আমরা নতুন অভিজ্ঞতা বিশ্বকে দেখাতে চাচ্ছি। জনমত নিয়ে এটাও ডেমোক্র্যাসি। জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউকে বহিষ্কার করার ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। তারা বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ করতে পারে, কিন্তু সরাসরি বহিষ্কার করতে পারবে না।
তিনি বলেন, আমরা কাউকে সাপোর্ট দিতে পারি না? দিই তো। কোথাও কোথাও ১৪ দলের নৌকা দিয়েছি। সেখানে আমাদের সাপোর্টের বিষয় তো আছেই। বিএনপি বলবেই ভাগাভাগি। তারা নিজেরাই তো ভুয়া হয়ে গেছে। ভুয়ারা কত কথাই বলবে।
ভোটার উপস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক হবে। এ নিয়ে আমাদের কোনও দুশ্চিন্তা নেই। আমাদের একটা প্রবাদ আছে…যাকে দেখতে নারী তার চলন বাঁকা। এই নির্বাচনে তারা (বিএনপি) নেই। তাই এই নির্বাচনের চলন বাঁকা।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ইইউ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিএনপির নির্বাচন পণ্ডের সহিংসতা নিয়েও কথা হয়েছে। বিএনপি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জবাব দিচ্ছে সহিংসতা করে, সেটি আমরা তাদের বলেছি। ভয়ভীতি এসব আছে। তারপরও আমরা বলেছি ভোটের টার্নআউট সন্তোষজনক হবে। কারণ, মানুষের আগ্রহ আছে। সারা দেশের ভোটারদের মধ্যে লক্ষ করা যাচ্ছে, তাতে টার্নআউট নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই। বিএনপি একটি বড় দল, টার্ন আউট নিয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে। পৃথিবীর গণতান্ত্রিক দেশের স্ট্যান্ডার্ড বজায় থাকবে, সেটাই আমরা তাদের বলেছি।
ভায়োলেন্স নিয়ে তারা জানতে চেয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা বলেছি, ভায়োলেন্স তো হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জবাব দিচ্ছে ভায়োলেন্স দিয়ে। পাঁচ বছর পরপর নির্বাচন করা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। নির্বাচিত সরকার আরেকটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে, এটাই সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। তিনি বলেন, তাদের আসলে মাথাব্যথা ইউক্রেন নিয়ে, গাজা-ইসরায়েল-ফিলিস্তিন নিয়ে। কাজেই শক্তিধররা বেশি মাথা ঘামাচ্ছেন এসব নিয়ে। কঙ্গোতে একটা নির্বাচন হয়েছে, কারও সঙ্গে কারও যোগাযোগ নেই। ফলাফল হয়ে গেছে। পাকিস্তানও যে ভালো গণতন্ত্রের উদাহরণ, এটা কেউ বলবে না।
এর আগে বিকাল ৪টার দিকে তেজগাঁওয়ে ঢাকা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আসেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুই সদস্যের প্রতিনিধি। তারা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত প্রমুখ।
Posted ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh