রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
যুক্তরাষ্ট্রে ৪০ বছরে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতির আশংকা : গ্যাসোলিনের দাম বেড়েছে ৫৭% শতাংশ

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ : দ্রুত বাড়ছে পণ্যমূল্য

বাংলাদেশ রিপোর্ট :   |   বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ : দ্রুত বাড়ছে পণ্যমূল্য

ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের প্রায় সকল দেশে জ্বালানি তেলসহ সকল পন্যের দাম বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে এবং গত ৭ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেলের মূল্য জাতীয়ভাবে বেড়ে প্রতি গ্যালন ৪.২৫ ডলারে উন্নীত হয়েছে। সিবিএস এর রিপোর্ট অনুযায়ী জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ৬০ শতাংশ, গ্যাসোলিনের ৫৭ শতাংশ এবং ডিজেলের ৪৪ শতাংশ। সব ধরণের খাদ্যদ্রব্যের মূল্যও বেড়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার অনেক জায়গায় প্রতি গ্যালন জ্বালানি তেলের দাম ৬ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতির মুখে পড়তে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ ঘোষণা করায় জ্বালানির মূল্য যে সামনের দিনগুলোতে আরও বৃদ্ধি পাবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। রাশিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তেল আমদানির পরিমাণ প্রায় ১০ শতাংশ। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়া থেকে আমদানি বন্ধ করার ঘোষণাকালে বলেছেন যে, আমরা পুতিনের যুদ্ধের খরচ জোগান দিতে পারি না। তিনি বলেন, স্বাধীনতা রক্ষা করার একটি ব্যয় আছে এবং আমরা সে ব্যয় করছি। এদিকে অর্থনীতিবিদরা বলছেন যে, ইতোমধ্যে তেলের মূল্য যা বেড়েছে তাতে মূল্য এই পর্যায়ে থাকলেও সাধারণ আমেরিকান পরিবারগুলোকে গ্যাস পাম্পে বার্ষিক প্রায় ২,০০০ ডলার ব্যয় করতে হবে। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর গত ১৩ দিনে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে টালমাটাল অবস্থায় পড়েছে বিশ্ব। রাশিয়ার তেলের ওপর পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞা আরোপ হলে পুরো ইউরোপে গ্যাস বন্ধের হুমকি দিয়েছে রাশিয়া। এরই মধ্যে বিশ্ববাজারে ব্যারেলপ্রতি অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ১৩০ ডলারে পৌঁছেছে, তা দ্বিগুণের বেশি বেড়ে প্রতি ব্যারেল ৩০০ ডলারে পৌঁছাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে, তৃতীয় দফার আলোচনাও শেষ হয়েছে সিদ্ধান্ত ছাড়াই। এরই মধ্যে ইউক্রেনের ২০ লাখ নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক উল্লেখ করে সবকিছু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই সবাইকে সংযম দেখাতে বলেছে চীন। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়- ইউক্রেনে আগ্রাসনের জেরে রাশিয়াকে আরও চাপে ফেলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে মস্কোর তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সম্ভাবনা মেপে দেখছে। তবে জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস এ ধরনের পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের গ্যাসের ৪০ শতাংশ এবং তেলের ৩০ শতাংশের জোগান পায় রাশিয়া থেকে। এ সরবরাহ হঠাৎ বন্ধ করা হলে সহসাই কোনো বিকল্প উৎস থেকে জোগান দেওয়া সম্ভব নয়। রুশ উপপ্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক বক্তৃতায় বলেন, ইউরোপের বাজারে রাশিয়ার তেলের একটি বিকল্প দ্রুত খুঁজে বের করা অসম্ভব। এটা করতে অনেক সময় দরকার এবং ইউরোপের ভোক্তাদের জন্য এটা অনেক বেশি ব্যয়সাপেক্ষ হবে। শেষ পর্যন্ত এর ফলাফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে তারাই।

পশ্চিমারা মস্কোর তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে জার্মানিতে মূল পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে রাশিয়া। দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক বলেছেন, ‘রাশিয়ার তেলের ওপর অবরোধ আরোপ করা হলে আন্তর্জাতিক বাজারে এর ধ্বংসাত্মক প্রভাব পড়বে। তেলের ওপর অবরোধ আরোপ করা হলে এর জবাব দেওয়া হবে। কারণ একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সমঅধিকার আমাদেরও আছে এবং বিদ্যমান নর্ড স্ট্রিম ১ গ্যাসপাইপ দিয়ে গ্যাস সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা দেব আমরা।’


রাশিয়া বিশ্বের শীর্ষ প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনকারী দেশ, ক্রুড অয়েল বা অপরিশোধিত তেল উৎপাদনে তাদের অবস্থান দ্বিতীয়। জ্বালানি খাতে কোনো ধরনের অবরোধ আরোপ করা হলে তা সে দেশের অর্থনীতিকে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। অবরোধ আরোপের জন্য পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি দাবি জানিয়ে আসছে ইউক্রেন, কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বিশ্বের অনেক দেশেই উদ্বেগ রয়েছে, কারণ সে রকম পদক্ষেপ নেওয়া হলে আন্তর্জাতিক বাজারে তার প্রভাব হবে ব্যাপক। এমন অবরোধ আরোপের শঙ্কায় গত ৭ মার্চ এক পর্যায়ে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৩৯ ডলারে পৌঁছায়, যা গত ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। যুক্তরাজ্যেও পেট্রোলের গড় দাম লিটারপ্রতি ১৫৫ পেনিতে পৌঁছেছে, যা রেকর্ড। রয়টার্স জানিয়েছে, মিত্রদের ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে রাশিয়ার তেলের ওপর অবরোধ আরোপ করতে পারে। যদিও সে দেশে রাশিয়া থেকে মাত্র ৩ শতাংশ তেল আমদানি করা হয়। জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজ বিস্তৃত পরিসরে অবরোধ আরোপের ধারণা নাকচ করে বলেছেন, ইউরোপ অবরোধের তালিকা থেকে সংগত কারণেই রাশিয়ার জ্বালানি খাতকে ছাড় দিয়েছে, কারণ এ মুহূর্তে অন্য কোনো উপায়ে ওই সরবরাহের ঘাটতি মেটানো সম্ভব নয়। তবে ইউরোপের দেশগুলো ধীরে ধীরে রাশিয়ার জ্বালানি খাতের ওপর এ নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে চায়। আলেকজান্ডার নোভাক বলছেন, ‘তেল ও পেট্রোকেমিক্যালের ওপর সম্ভাব্য অবরোধ আরোপ নিয়ে যেসব বিবৃতি ও আলোচনা শুনতে পাচ্ছি তাতে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা দেখছি আমাদের অংশীদাররা, জাহাজ কোম্পানি, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপক চাপের মুখে পড়েছে।’

তৃতীয় দফার আলোচনা অগ্রগতি ছাড়াই শেষ : বেলারুশে গত ৭ মার্চ সন্ধ্যায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে অনুষ্ঠিত তৃতীয় দফার আলোচনা থেকে প্রত্যাশিত ফল পাওয়া যায়নি। আলোচনা অনেকটা ব্যর্থ হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। মস্কো ও কিয়েভ উভয় পক্ষের প্রতিনিধি দল এ কথা জানিয়েছে। রুশ প্রধান আলোচক ও প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সহযোগী ভøাদিমির মেডেনস্কি বলেন, ‘আলোচনায় প্রত্যাশিত ফল আসেনি।’ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের উপদেষ্টা মিখাইল পডোলিয়াকও স্বীকার করেছেন, পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটানোর মতো কোনো ফল পাওয়া যায়নি। তবে উভয় পক্ষ আলোচনা চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে। শিগগিরই চতুর্থ দফার আলোচনা হবে বলেও জানা গেছে। তবে কোনো পক্ষই দিনক্ষণের কথা উল্লেখ করেনি। আলোচনায় রাশিয়ার মূল শর্তসমূহের মধ্যে রয়েছে দোনেৎস্ক ও লুগানস্ক প্রজাতন্ত্র এবং ক্রিমিয়ার ওপর রাশিয়ার সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি। এসব শর্ত মানা হলেই কেবল ইউক্রেনে সামরিক অভিযান বন্ধ করবে রাশিয়া।


সর্বোচ্চ সংযম দেখাতে বললেন চীনের প্রেসিডেন্ট : ইউক্রেন পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক বর্ণনা করে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং সব পক্ষকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজের? সঙ্গে গত ৮ মার্চ এক ভার্চুয়াল বৈঠকে শি এ আহ্বান জানান বলে জানায় বিবিসি। শি বলেন, ইউক্রেন পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইর চলে না যায় সবার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেদিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। তিনি বৈঠকে অংশ নেওয়া তিন দেশকে একজোট হয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি আলোচনায় সমর্থন দেওয়ার কথাও বলেন। চীন ও রাশিয়ার মধ্যে ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। যে কারণে ইউক্রেনে আগ্রাসনের পরও রাশিয়ার কোনো ধরনের নিন্দা বা সমালোচনা করেনি বেজিং। ইউক্রেনে ?হামলার কারণে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যে নিন্দা প্রস্তাব তোলা হয় তাতেও ভোটদান থেকে বিরত ছিল চীন।

যুদ্ধ চলছেই


ইউক্রেনে যুদ্ধের হাত থেকে বাঁচতে সে দেশ ছেড়ে পালানো লোকের সংখ্যা এখন ২ মিলিয়ন বা ২০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা। এর মধ্যে রাজধানী কিয়েভের পশ্চিম দিকের শহর ইরপিন থেকে আরও বেসামরিক মানুষ বেরিয়ে যেতে শুরু করেছে। ইউক্রেনের শহরগুলোয় ভারী গোলাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়ার বাহিনী। ফলে বেসামরিক বাসিন্দারা যুদ্ধ ক্ষেত্র ছাড়তে পারছে না। কিয়েভ, চেরনিহিভ, সুমি, খারকিভ ও মারিউপোলের বেসামরিক বাসিন্দাদের সরে যেতে ‘মানবিক করিডোর’ ঘোষণা করেছে রাশিয়া। এর আগেও এ রকম করিডোর ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু যুদ্ধ বন্ধ না হওয়ায় তা কার্যকর হয়নি। বেসামরিক বাসিন্দাদের যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে নিরাপদে সরে যেতে দেওয়ার জন্য ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মানবিক কার্যক্রমের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা শাখা জানাচ্ছে, খারকিভের কাছাকাছি লড়াইয়ে রাশিয়ার একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। ভিতালি গেরাসিমভ রাশিয়ান বাহিনীর একজন মেজর জেনারেল পদমর্যাদার কর্মকর্তা। জাতিসংঘের সবশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইউক্রেনে ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ২০৭ জন বেসামরিক লোক হতাহত হয়েছেন। জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক কমিশনার লিজ থ্রোসেল বলেন, এর মধ্যে ৪০৬ জন নিহত এবং ৮০১ জন আহত হয়েছেন, তবে প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে। রাশিয়া থেকে তেল আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা : রাশিয়া থেকে তেল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত ৮ মার্চ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের প্রতিশোধ হিসেবে মস্কোর ওপর চাপ বাড়াতে রাশিয়ার তেল ও অন্যান্য জ্বালানি আমদানির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছেন। রয়টার্সের আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালের শেষ নাগাদ পর্যায়ক্রমে রাশিয়া থেকে তেল এবং জ্বালানি পণ্য আমদানি বন্ধ করবে যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, রাশিয়ার ওপর তাদের তেল এবং জ্বালানি পণ্যের নির্ভরতা কমাতে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে যোগ দিচ্ছে তাঁর দেশ। আলোচনায় সমাধান দেখছেন জেলেনস্কি : রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান সংকটে ক্রিমিয়া, দোনেস্কো ও লুগানস্ককে ইউক্রেনের স্বীকৃতি দেওয়া এবং ন্যাটোতে যোগ না দেওয়াকেই একমাত্র সমাধান বলে জানিয়েছে মস্কো। তবে এমন দাবি নাকচ করে দিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, পুতিনের সঙ্গে আলোচনাতেই কেবল সমাধানের পথ খুলতে পারে। গত ৮ মার্চ মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটোতে যোগাদানে অস্বীকৃতি এবং ক্রিমিয়া, দোনেস্কো ও লুগানস্ককে ইউক্রেনের স্বীকৃতি দেওয়ার রুশ দাবির বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, আমরা আল্টিমেটাম শুনতে রাজি নই? তবে এই মুহূর্তে আমাদের কাছে সম্ভব্য কিছু সমাধান রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের এমন উদ্যোগ নিতে হবে যাতে করে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসা যায়।

ইউক্রেন যুদ্ধে ২ থেকে ৪ হাজার রুশ সেনা নিহত হয়েছে: পেন্টাগন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ গত ৮ মার্চ আইনপ্রনেতাদের জানিয়েছেন, তারা ধারণা করছেন যে রাশিয়ার প্রায় দুই সপ্তাহের ইউক্রেন আগ্রাসনে মস্কোর দুই থেকে চার হাজার সৈন্য নিহত হয়েছেন। খবর এএফপি’র। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা রুশ আগ্রাসন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের পুরো চিত্র তুলে ধরেছেন। এক্ষেত্রে ধারণা করা হচ্ছে- বিশ্বব্যাপী ব্যাপক বিরোধিতার মুখেও পুতিন প্রতিবেশি দেশ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের গতি বাড়ানো অব্যাহত রাখবেন। হাউস ইন্টেলিজেন্স কমিটির এক শুনানিতে এ সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার কতজন সৈন্য মারা গেছেন জানতে চাইলে পেন্টাগনের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক লে. জেনারেল স্কট বেরিয়ার বলেন, এ যুদ্ধে রাশিয়ার ‘দুই থেকে চার হাজার সৈন্য নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

বন্ধু নয়, এমন দেশের তালিকা প্রকাশ রাশিয়ার

ইউক্রেনে হামলার পর কোন কোন দেশ বন্ধু, আর কোন কোন দেশ বন্ধু নয়-এমন তালিকা করেছে রাশিয়া। রুশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বন্ধু নয়, এমন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক এখন থেকে পর্যালোচনা করবে সরকারের একটি কমিশন। আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যেসব দেশ ও অঞ্চল ‘অবন্ধুসুলভ পদক্ষেপ’ নিয়েছে, তাদের তালিকা গত ৭ মার্চ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর এসব দেশ এবং অঞ্চলের প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকের বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্ত নিল দেশটি। রাশিয়ার বন্ধু নয়, এমন দেশের তালিকায় রয়েছে আলবেনিয়া, অ্যান্ডোরা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো, আইসল্যান্ড, কানাডা, লিশটেনস্টাইন, মাইক্রোনেশিয়া, মনাকো, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, দক্ষিণ কোরিয়া, সান মারিনো, উত্তর মেসিডোনিয়া, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র, তাইওয়ান, ইউক্রেন, মন্টেনেগ্রো, সুইজারল্যান্ড ও জাপান। এ ছাড়া ব্রিটিশশাসিত জার্সি দ্বীপপুঞ্জ, অ্যাঙ্গোলা, ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ, জিব্রালটার এলাকাও রয়েছে নিষেধাজ্ঞার আওতায়।

জেলেনস্কিকে সর্বোচ্চ সম্মান দেবে চেক প্রজাতন্ত্র

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর চরম বীরত্ব ও সাহসিকতার সঙ্গে তা মোকাবিলা করার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রাশিয়ার বিরুদ্ধে দেশ রক্ষার ডাক দিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। এমন বীরত্বপূর্ণ ও সাহসী মনোভাবের কারণে জেলেনস্কিকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত করতে চায় চেক প্রজাতন্ত্র। গত ৭ মার্চ চেক প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট মিলোস জেমান এ কথা জানান। মিলোস জেমান ২০১৩ সালে চেক প্রজাতন্ত্রে ক্ষমতায় আসেন। আগে থেকেই তিনি মস্কোপন্থী হিসেবে পরিচিত। তবে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া যখন ইউক্রেনে হামলা শুরু করে, তখন তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে ‘পাগল’ বলে মন্তব্য করে আলোচনায় আসেন। স্থানীয় সময় গত ৭ মার্চ রাজধানী প্রাগে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রেসিডেন্ট মিলোস। করোনা মহামারির কারণে দুই বছর ধরে এ আয়োজন স্থগিত ছিল। এবারের আয়োজনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনকে সমর্থন দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে জানান। তিনি বলেন, ‘আমি একজন সাংসদের সঙ্গে আলাপ করেছি, চেক প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মানের জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নাম প্রস্তাব করুন। এমন প্রস্তাবে আমি অবশ্যই সম্মতি দেব।’

ইউক্রেন ছাড়ল ২০ লাখ মানুষ

রাশিয়ার হামলার জেরে ইউক্রেন ছেড়েছে ২০ লাখের বেশি মানুষ। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম বিবিসিকে এই তথ্য জানিয়েছে। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে দলে দলে মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে পালাচ্ছে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অল্প সময়ের ব্যবধানে এত শরণার্থীর ঢল এর আগে দেখেনি ইউরোপ। এর আগে গ্রান্ডি বলেছিলেন, রুশ হামলা শুরুর পর প্রথম দফায় যারা ইউক্রেন ছেড়েছিল, তাদের সঙ্গে ‘কিছু সম্পদ ছিল’।

অনেকে গাড়ি নিয়ে ইউক্রেন ছেড়েছে এবং তাদের অনেকে সঙ্গে ইউরোপে অন্য দেশগুলোয় অবস্থানরত অনেকের যোগাযোগ ছিল। ফলে তারা তাদের পরিবার, বন্ধু, তাদের পরিচিতজনদের কাছে যেতে পেরেছে। তবে তিনি সতর্ক করে এ-ও বলেছেন, কিন্তু এই সংঘাত যদি দীর্ঘদিন ধরে চলে, তবে যাদের সম্পদের পরিমাণ কম এবং যোগাযোগ রয়েছে অল্পবিস্তর, তারাও বাধ্য হবে ইউক্রেন ছাড়তে। বার্তা সংস্থা এএফপিকে গ্রান্ডি বলেন, শরণার্থীর এই ঢল মোকাবিলায় ইউরোপীয়দের পরিস্থিতি জটিলাকার ধারণ করবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইউক্রেনীয়দের সঙ্গে সব ইউরোপীয়কে আরও বেশি একাত্মতা প্রকাশ করতে হবে মন্তব্য করেছেন তিনি। এই পরিস্থিতির সঙ্গে বসনিয়া ও কসোভো যুদ্ধের তুলনা করেছেন গ্রান্ডি। তিনি বলেন, যুদ্ধের সময় এই দুই দেশ ও অঞ্চলের মানুষ গণহারে ওই সব এলাকা ছেড়েছিল। ২০ থেকে ৩০ লাখ মানুষ ওই এলাকা ছেড়েছিল। কিন্তু এসব মানুষ প্রায় ৮ বছরে ওই এলাকা ছেড়েছিল।

Posted ৭:১০ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.