বাংলাদেশ রিপোর্ট | শুক্রবার, ০৫ এপ্রিল ২০২৪
নিউইয়র্ক সিটি সাবওয়েতে বিগত কয়েক বছরে অপরাধ বেড়েছে। অপরাধ সংঘটনে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহারও আগের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সিটির প্রধান গণপরিবহন সাবওয়েকে আর নিরাপদ ভাবতে পারছে না সিটিবাসী। ফলে সাবওয়ের যাত্রী সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। সিটি মেয়র সাবওয়েকে নিরাপদ করতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, সাবওয়ে স্টেশন থেকে হোমলেসদের
উচ্ছেদ এবং গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত সাবওয়ে স্টেশনগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য নিয়োগ করেও যাত্রীদের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হচ্ছেন না। এছাড়া নিউইয়র্ক স্টেট সরকার সাবওয়েকে নিরাপদ করতে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের মোতায়েন করেছে। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে যাতে কোনো অপরাধী সাবওয়ে স্টেশন দিয়ে ট্রেনে উঠতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে এখন সিটির বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে গান ডিটেক্টর স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী জুন মাস থেকে নির্বাচিত স্টেশনগুলোতে গান ডিটেক্টর স্থাপনের কাজ শুরু হবে বলে নিউইয়র্ক টাইমসের এক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, সিটির বেশ কিছু নির্বাচিত সাবওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের বহনযোগ্য আগ্নেয়াস্ত্র শণাক্ত করতে ডিটেক্টর স্থাপন করা হবে, যে ডিটেক্টর কোনো যাত্রী আগ্নেয়াস্ত্র বহন করছে কিনা তা শনাক্ত করতে সক্ষম। নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে সাবওয়েতে পুলিশ কর্তৃক আগ্নেয়াস্ত্র খুঁজে পাওয়ার জন্য অফিসারদের টহলের পরিমাণ ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এনওয়াইপিডি ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি স্টেশনে গান ডিটেক্টর স্থাপন করে এর কার্যকারিতা পরীক্ষা করার কাজ শুরু হয়েছে। জানা গেছে, এসব ডিটেক্টর ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ। কেউ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে ডিটেক্টরের একটি লাল বাতি জ্বলে উঠবে।
নিউইয়র্ক টাইমস তাদের রিপোর্টে আরো বলেছে যে, এসব ডিটেক্টর ভ্রাম্যমান ও সহজে বহনযোগ্য বলে তেমন ঝামেলা ছাড়াই সিটির স্ট্যাটেন আইল্যান্ড বরো ছাড়া অপর চার বরোর যেকোনো সাবওয়ে স্টেশনে স্থাপন করা যেতে পারে। উল্লেখ্য, স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে সাবওয়ে ব্যবস্থা নেই। আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, যাত্রীদের আগ্নেয়াস্ত্র অনুসন্ধান বাধ্যতামূলক হবে না, তবে কোনো যাত্রী যদি ডিটেক্টর এড়িয়ে যেতে চান, তাহলে তাকে স্টেশনে অন্য কোনো গেট বা অন্য সাবওয়ে স্টেশনে গিয়ে ট্রেনে উঠতে হবে, যেখানে গান ডিটেক্টর নেই। সাবওয়ে স্টেশনে গান ডিটেক্টর কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করার আগে সিটি ও পুলিশ প্রশাসনকে সিটিবাসীর মতামত জানার জন্য ৯০ দিনের সময় দেওয়া হবে, যাতে তারা সাবওয়েতে নতুন প্রযুক্তি চালু করা নিয়ে তাদের মতামত জানাতে পারেন। লিগ্যাল এইড সোসাইটি এনওয়াইপিডি কর্তৃক সাবওয়ে স্টেশনে এই প্রযুক্তি স্থাপনের বিরোধিতা করেছে। তাদের মতে, এটি আমেরিকায় বসবাসকারীদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ওপর আক্রমণ করার শামিল। সিটি কাউন্সিলের কিছু সদস্য বলেছেন যে, গান ডিটেক্টর স্থাপনে যে অর্থ ব্যয় হবে, তা বরং যারা মানসিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য ব্যয় করা উচিত। সিটি মেয়র মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেছেন যে গান ডিটেক্টর বা স্ক্যানারগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মুখ চিনে রাখা রেকর্ড বা ব্যবহার করে না। তিনি আশা করেন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি নিরাপত্তা ব্যবস্থায় অর্থায়ন করতে পারে। ম্যাসাচুসেটসের এভলভ টেকনোলজির সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ডিটেক্টরগুলি জুন মাসের শেষ নাগাদ নির্বাচিত স্টেশনগুলোতে পরীক্ষামূলকভাবে কাজ করবে।
Posted ৬:২৩ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৫ এপ্রিল ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh