বাংলাদেশ অনলাইন ডেস্ক : | মঙ্গলবার, ৩০ জুন ২০২০
যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামিমা নূর পাপিয়ার প্রায় ৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের উৎসের সন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই সংক্রান্ত নথিপত্র সংগ্রহও করা হয়েছে। তবে, পাপিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে না পারাসহ বেশকিছু কারণে দুর্নীতির অনুসন্ধান-প্রক্রিয়া থমকে আছে।
দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র জানায়, পাপিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করার আগেই করোনার প্রার্দুভাব শুরু হয়ে যায়। এ কারণে হেফাজতে এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি। ফলে যেসব হিসাবের রেকর্ড পাওয়া গেছে, সেগুলো যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এরই মাঝে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ( র্যাব)-এর অধীনে বক্তব্য নেওয়ার সময় এপ্রিলেই দুই দফা করোনা উপসর্গ দেখা দেয় পাপিয়ার। যদিও শেষপর্যন্ত করোনার নেগেটিভ ফল এসেছে। এরপরও ঝুঁকির একটি বিষয় থেকেই যায়।
ওই সূত্রের দাবি—দুদকের ওপর দিয়েও করোনার বড় ধকল যাচ্ছে। ইতোমধ্যে এক পরিচালকসহ দুই জন মারা গেছেন। আক্রান্তদের তালিকা এখন পর্যন্ত ২০ ছাড়িয়েছে। এছাড়া সংস্থার লোকবলও কম। সবকিছু মিলিয়ে অনুসন্ধান ও তদন্তে কিছুটা গতি কমেছে।
প্রসঙ্গত, বিদেশে অর্থপাচারসহ কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চলতি বছরের ১ মার্চ পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে দুদক। অনুসন্ধানে মাদক ব্যবসা, জাল টাকার ব্যবসা, অনৈতিক কর্মকাণ্ডে কোটি টাকার সম্পদপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পেয়েছে সংস্থাটি।
অনুসন্ধানে পাপিয়ার যেসব অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, তার মধ্যে রয়েছে—হোটেল ওয়েস্টিনে বিল হিসাবে জমা সাড়ে তিন কোটি টাকা। এছাড়া রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা ৬০ লাখ টাকা ও নরসিংদীর একটি বাড়ি।
এছাড়া, পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন চৌধুরীর নামে নরসিংদীর প্রাইম ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও সিটি ব্যাংকে অর্ধডজন অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া দুদক। এসব ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৬ লাখ টাকা জমা আছে বলে জানা গেছে। তবে, এসব সম্পদের কোনো বৈধ উৎস খুঁজে পাননি অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ।
এ বিষয়ে জানতে চাইতে চাইলে শাহীন আরা মমতাজ জানান, ‘সাধারণ ছুটির আগেই কাজ এগিয়ে রেখেছি। তবে, করোনা পরিস্থিতিতে অন্যসব সেক্টরের মতো আমাদেরও কাজের গতি কমে গেছে। এছাড়া, নথিপত্র ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্যের ওপর আমাদের কাজ বেশি নির্ভরশীল। করোনার কারণে সেই কাজ কঠিন হয়ে পড়েছে।’
জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ জানান, ‘অনুসন্ধান চলছে। আইন-কানুন দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্পদের বৈধ উৎস দেখাতে না পারলে পাপিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পাপিয়া ওরফে পিউসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। বাকিরা হলেন সুমন চৌধুরী, সাব্বির খন্দকার ও শেখ তায়্যিবা।
এরপর রাজধানীর বিমানবন্দর ও শেরেবাংলা নগর থানায় অস্ত্র, মাদক ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৯ জুন অস্ত্র আইনের মামলায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১-এর উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আরিফুজ্জামান।
Posted ৭:০৬ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ৩০ জুন ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh