রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ | ৬ পৌষ ১৪৩২

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

ইউরোপে দেশে দেশে কঠোর হচ্ছে অভিবাসন নীতি, বাড়ছে বর্ণবিদ্বেষ

বাংলাদেশ অনলাইন :   |   সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

ইউরোপে দেশে দেশে কঠোর হচ্ছে অভিবাসন নীতি, বাড়ছে বর্ণবিদ্বেষ

যুক্তরাজ্যে অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভ। ফাইল ছবি : এপি, ইউএনবি

ইউরোপে দেশে দেশে অভিবাসনবিরোধী বক্তব্য, নীতি ও রাজনৈতিক তৎপরতা গত এক বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যুক্তরাজ্যসহ একাধিক দেশে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ঘৃণা, বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য এবং কঠোর নীতির দাবি এখন মূলধারার রাজনৈতিক আলোচনার অংশ হয়ে উঠছে। বিশ্লেষকদের মতে, একসময় যা কট্টর ডানপন্থিদের প্রান্তিক অবস্থান হিসেবে বিবেচিত হতো, তা এখন ইউরোপের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক বিতর্কে জায়গা করে নিয়েছে।

গত বছর লন্ডনের রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেয়। ‘তাদের দেশে পাঠিয়ে দাও’ স্লোগানে মুখর এসব সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা অভিবাসনকে জাতীয় পরিচয়ের জন্য হুমকি হিসেবে তুলে ধরেন। একই সময় ব্রিটিশ পার্লামেন্টের একাধিক রাজনীতিবিদ টেলিভিশনে ‘অতিরিক্ত অশ্বেতাঙ্গ মুখ’ দেখা যাচ্ছে—এমন মন্তব্য করে বিতর্ক উসকে দেন। এমনকি যুক্তরাজ্যে দীর্ঘদিন বসবাসকারী, বিদেশে জন্ম নেওয়া নাগরিকদের বহিষ্কারেরও দাবি উঠেছে।

এই প্রবণতা শুধু যুক্তরাজ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। জার্মানির অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি), ফ্রান্সের ন্যাশনাল র‍্যালি এবং যুক্তরাজ্যের রিফর্ম ইউকে— দলগুলো জনমত জরিপে শীর্ষ বা কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে। এসব দল ব্যাপক বহিষ্কার নীতি ও কড়াকড়ি অভিবাসন আইনের পক্ষে সরব।

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য ও নীতি ইউরোপের এই কঠোর মনোভাবকে উৎসাহিত করছে। সম্প্রতি অভিবাসনকে ইউরোপের জন্য ‘সভ্যতাগত হুমকি’ হিসেবে বর্ণনা করা মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল এবং ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী মন্তব্য ইউরোপীয় কট্টর ডানপন্থিদের ভাষার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

বাড়ছে বিভাজন, গভীর হচ্ছে অস্বস্তি

গত এক দশকে ইউরোপে অভিবাসীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউক্রেনের সংঘাত থেকে পালিয়ে আসা লাখো আশ্রয়প্রার্থী এর একটি কারণ। যদিও মোট অভিবাসনের তুলনায় আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা কম, তবুও অর্থনৈতিক স্থবিরতা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভাজনমূলক প্রচার এবং জাতীয়তাবাদী রাজনীতির উত্থান অভিবাসনবিরোধী মনোভাবকে উসকে দিচ্ছে। লন্ডনের কিংস কলেজের পলিসি ইউনিটের পরিচালক ববি ডাফির মতে, যুক্তরাজ্যে জাতীয় বিভাজন ও পতনের অনুভূতি ভয়াবহভাবে বেড়েছে, যা মানুষকে রাজনৈতিক চরমপন্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ২০০৮ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট, ব্রেক্সিট বিতর্ক এবং কোভিড-১৯ মহামারি এই প্রবণতাকে আরও গভীর করেছে।

এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া, বিশেষ করে এক্স (সাবেক টুইটার) বিভাজনকারী কনটেন্ট প্রচার করে এতে ভূমিকা রাখছে।

বর্ণবাদী ভাষা ও ঘৃণাজনিত অপরাধ বৃদ্ধি

যুক্তরাজ্যে পুলিশি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত এক বছরে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে ১ লাখ ১৫ হাজারের বেশি ঘৃণাজনিত অপরাধ নথিভুক্ত হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি।

অনেক রাজনীতিক দাবি করেন, তারা বর্ণ নয় বরং একীভূতকরণ ও সামাজিক সংহতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের মতে, বাস্তবে তারা ক্রমবর্ধমান বর্ণবিদ্বেষ ও হুমকির মুখোমুখি হচ্ছেন।

ব্রিটিশ কৃষ্ণাঙ্গ এমপি ডন বাটলার বলেন, সামাজিক মাধ্যমে তাকে লক্ষ্য করে ঘৃণামূলক মন্তব্য ও মৃত্যুহুমকি আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর কৌশল নিয়ে প্রশ্ন

ডানপন্থিদের মোকাবিলায় ইউরোপের মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোও অভিবাসন প্রশ্নে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে। যুক্তরাজ্যের লেবার সরকার অভিবাসন নীতি কঠিন করার ঘোষণা দিয়েছে, যদিও তারা প্রকাশ্যে বর্ণবাদের নিন্দা করছে। ডেনমার্কের মতো দেশগুলোর উদাহরণ অনুসরণ করে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য অস্থায়ী বাসস্থানের নীতিও বিবেচনায় আনা হচ্ছে।

তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো সতর্ক করে বলেছে, ডানপন্থিদের তুষ্ট করতে গিয়ে ধাপে ধাপে আরও কঠোর নীতি গ্রহণের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। ইউরোপ কাউন্সিলের মানবাধিকার কমিশনার মাইকেল ও’ফ্ল্যাহার্টির কথায়, ‘এক ইঞ্চি ছাড় দিলে আরেক ইঞ্চির দাবি আসবে—এটা কোথায় গিয়ে থামবে?’

সূত্র : এপি

Posted ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.