মোহাম্মদ আজাদ : | বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই ২০২১
বাইডেন প্রশাসন একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে অন্তসত্ত্বা, মাতৃজনিত অসুস্থতা অথবা অসুস্থ মহিলা ও প্রসূতিদের ডিটেনশন বাতিল করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে। প্রচলিত আইনে অন্তসত্ত্বা বা মাতৃজনিত অসুস্থতার কারণে বা প্রসূতিদের গ্রেফতার, ডিটেনশন বা ডিপোর্ট করার বিধান রয়েছে। এই অমানবিক আইনটি করা হয়েছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সময়।
গত সপ্তাহে ইউএস ইমিগ্রেশন এন্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট বা আইস তাদের ওয়েবসাইটে একটি প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে যে এখন থেকে আইস অন্তসত্ত্বা নারী বা অসুস্থ নারী বা প্রসূতিদের গ্রেফতার করে ডিটেনশনে রাখবে না। সাবেক প্রশাসনের বিধি বাতিল করা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন এক্ষেত্রে কোন বাছবিচার না করেই পাইকারী হারে আনডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্টদের গ্রেফতার করে প্রথমে ডিটেনশন এবং এরপর ডিপোর্ট করার ব্যবস্থা করতো। ওই বিধিতে অন্তসত্ত্বা, অসুস্থ বা প্রসূতিরাও ডিটেনশন ও ডিপোর্টেশন থেকে বাদ পড়তেন না। এর আগে ওবামা প্রশাসনের সময় আনডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্টদের গ্রেফতার, ডিটেনশন ও ডিপোর্ট করা হলেও অন্তসত্ত্বা ও প্রসূতিদের গ্রেফতার করে ডিটেনশনে রাখা হতো না। বাইডেন প্রশাসন শুধু ওবামা আমলের বিধিটি পুনর্বহালই করেনি, বরং নতুন মাত্রা যোগ করেছে যে কোন মহিলা সন্তান প্রসবের এক বছরের মধ্যে গ্রেফতারের আওতায় পড়বেন না বা তাদেরকে ডিটেনশনে রাখা হবে না। বর্তমান প্রশাসনের নতুন বিধির ফলে আনডকুমেন্টেড অন্তসত্ত্বা নারীরা কিছুটা হলেও স্বস্থি লাভ করেছেন।
ইমিগ্রেশন এডভোকেসি গ্রুপের চাপে বাইডেন প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অপরদিকে বাইডেনের সমালোচকরা বলছেন যে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগের ব্যাপারে কঠোর না হয়ে উদার নীতি গ্রহণ করেছেন। বাইডেন এই সমালোচনার উত্তর দিয়ে বলেছেন যে, তিনি ইমিগ্রান্টদের প্রতি অধিকতর মানবিক আচরণ দেখাতে চানবিশেষ করে সেন্ট্রাল আমেরিকান দেশগুলো থেকে আগত যেসব মা বাবা ও শিশুরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে তাদের প্রতি। আইস এর পক্ষ থেকে গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে নতুন বিধি আনডকুমেন্টেড মা’দের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে এবং নবজাত শিশুর বেড়ে উঠা পর্যন্ত তারা যুক্তরাষ্ট্রে নিরাপদে অবস্থানের সুযোগ পাবে। আইস এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টায়ি জনসন এ প্রসঙ্গে বলেছেন, আমরা সন্তানসম্ভবা মহিলাদের জন্য চমৎকার একটি সুযোগ দিচ্ছি। তিনি বলেন, এখন থেকে আইস কোন অন্তসত্ত্বা নারী বা প্রসূতিকে গ্রেফতার করবে না। বা তাদেরকে ডিটেনশনে রাখা হবে না। আইস হেফাজতে নেয়ার পর মহিলাদের প্রেগন্যান্সি পরীক্ষা করা হবে। পরীক্ষায় দি প্রমাণ হয় যে আটক মহিলা অন্তসত্ত্বা তাহলে তাকে মুক্তি দেয়া হবে। তবে কেউ এধরনের কোন নারী যদি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বিবেচিত হয় বা সহিংসতায় জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়া যায় তাহরৈ তাকে ডিটেনশনে রাখা হতে পারে। ট্রাম্পের মেয়াদে ২০১৭ সালে ২,১০০ অন্তসত্ত্বা মহিলাকে গ্রেফতার করার পর ডিটেনশনে রাখা হয়েছিল।
সাম্প্রতিককালে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী বেশির ভাগ মহিলাকে ডিটেনশনে রাখা হয়েছে। তাদের অনেকে অন্তসত্ত্বা রয়েছেন। আটকের পর অনেকে এসাইলাম আবেদন করেছেন। কিন্তু এসাইলাম আবেদনের শুনানি হতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকার কারণে অনেক অন্তসত্ত্বা মহিলা ইতোমধ্যে সন্তান প্রসব করেছেন। আইস বলেছে যে গত সপ্তাহে তারা নতুন বিধান জারি করার পর কমপক্ষে ১৩ জন অন্তসত্ত্বা মহিলাকে গ্রেপতার করেছে। যেসব অন্তসত্ত্বা মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে নতুন বিধিতে তাদেরকে মুক্তি প্রদান করা হবে।
Posted ১২:৩০ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh