বাংলাদেশ রিপোর্ট : | শুক্রবার, ০৭ আগস্ট ২০২০
অনুমোদনের অপেক্ষায় আটকা পড়ে আছে ৭ লাখ ৩০ হাজারের অধিক ন্যাচারালাইজেশন বা সিটিজেনশিপের জন্য আবেদন, যা গত এগার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যা এবং ২০১৫ সালের তুলনায় ৮৭ শতাংশ অধিক। ২০১৯ সালে এই সংখ্যা ৯ লাখ ২৫ হাজারের বেশি ছিল। করোনা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের আগে গত মার্চ মাস পর্যন্ত নিয়মিতভাবে সবকিছু চললেও মার্চের পর থেকে সিটিজেনশিপের জন্য ইন্টারভিউ এবং শপথ গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রায় স্থবিরতা বিরাজ করছে। শপথ নেয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন লক্ষাধিক আবেদনকারী। কোনো ডিষ্ট্রিক্ট কোর্টে আগে যেখানে প্রতিদিন কয়েকশ’ লোকের শপথ অনুষ্ঠিত হতো, এখন তা অতি অল্প সংখ্যকে দাঁড়িয়েছে কোর্টে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কারণে। একজন বিদেশিকে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাচারালাইজড সিটিজেন হওয়ার জন্য যে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করতে হয়, শপথ গ্রহণ তার চূড়ান্ত পর্যায়, যা মূলত প্রতিকী অনুষ্ঠানের চেয়েও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। শপথ না হওয়ার কারণে তারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে যেসব সুবিধা লাভের উপযুক্ততা অর্জন করেন তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিশেষত নির্বাচনে ভোট দেয়ার উপযুক্ততা অর্জন। আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে ন্যাচারালাইজেশন ইন্টারভিউয়ে উত্তীর্ণদের শপথ অনুষ্ঠিত না হলে নভেম্বরের ৩ তারিখে তিন লক্ষাধিক ইমিগ্রান্ট সিটিজেন না হতে পেরে ভোট দানের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।
ম্যাসাচুসেটস এর ডিষ্ট্রিক্ট কোর্টের চিফ জাষ্টিস ফ্র্যাঙ্ক ডেনিস সেইলরের কাছে এক আবেদনে সেখানকার আইনজীবীরা শপথ অনুষ্ঠানের জন্য তিনটি বিকল্প উপায়ের কথা বলেছেন। সেগুলো হচ্ছে; অনলাইনের জুম ব্যবহারের মাধ্যমে, অথবা খোলা জায়গায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে; অথবা শপথ স্থগিত রেখে ইন্টারভিউয়ে উত্তীর্ণদের ন্যাচারালাইজেশন সার্টিফিকেট ইস্যু করা, যাতে তারা নাগরিকত্বের অধিকার ও সুবিধাগুলো ভোগ করতে পারেন। কিন্তু এসব বিকল্প গৃহীত হওয়ার সুযোগ নেই বললেই চলে। ট্রাম্পও চান না যে আগামী নির্বাচনে নতুন ইমিগ্রান্ট ভোটার যুক্ত হোক। ইমিগ্রান্ট অধিকার প্রবক্তাদের মতে বৈধ ইমিগ্রান্টদের যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ট্রাম্প প্রশাসন দ্বিতীয় প্রাচীর নির্মাণ করেছেন। অনেক আবেদনকারী আছেন, যারা ২১ পৃষ্ঠার আবেদন ফরম পূরণ করে ৭৩০ ডলার ফি-সহ জমা দিয়েছেন, তাদের আঙুলের ছাপ ও ছবি নেয়া হয়ে গেছে এবং ইনটারভিউয়ের জন্য গত ২০ মাস যাবত অপেক্ষা করছেন। ওবামার সময়ে ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জট ছিল ৩৮৮,৮৩২টি আবেদন। ইমিগ্রান্ট অধিকার প্রবক্তরা বর্তমানে বিপুল পরিমাণ জটকে হোমল্যাণ্ড সিকিউরিটির অযোগ্যতা ও ব্যর্থতা বলে অভিযোগ করছেন। ১৯টি ষ্টেটে এই জট সবচেয়ে বেশি। এর মাঝেও দু:খজনক খবর হলো, এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত গত তিন মাসে হাওয়াই, নেভাদা, নিউ মেক্সিকো, পেনসিলভেনিয়া ও ইউতাহ’য় আবেদনপত্র অগ্রাহ্য করার ঘটনা ঘটেছে।
ইউএসসিআইএস বছরে গড়ে ৭ থেকে সাড়ে ৭ লাখ লোকের ন্যাচারালাইজেশন সম্পন্ন করে। কিন্তু এপ্রিল ও মে মাসে অর্থ্যাৎ দুই মাসে তারা ন্যাচারালাইজ করেছে মাত্র ৪৫ হাজার আবেদনকারীকে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ অবশ্যই একটি বড় কারণ। তবে ২০১৯ সালে ন্যাচারাইজড সিটিজেন হিসেবে শপথ নিয়েছেন ৮ লাখ ৩৪ হাজার জন, যা পূর্ববর্তী ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত বছর স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে অনুমোদন করা হয়েছে ৫ লাখ ৭৭ হাজার জনকে। ইউএসসিআইএস কংগ্রেসের কাছে ১.২ বিলিয়ন ডলার দাবী করেছে তাদের ন্যাচারাইজেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা, গ্রীন কার্ড ইস্যু ও ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু ও নবায়ন করার কাজ দ্রুততর করার জন্য। গ্রীন কার্ডের জন্য বর্তমানে সাড়ে আট লাখ আবেদন জমা হয়ে আছে এবং ওয়ার্ক পারমিটের জন্য ২২ লাখ আবেদন পড়ে আছে।
Posted ৫:০৮ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৭ আগস্ট ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh