বাংলাদেশ রিপোর্ট : | রবিবার, ৩০ আগস্ট ২০২০
ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (ফেমা) প্রতি সপ্তাহে ৩০০ ডলার হারে কর্মচ্যুত বীমা সহায়তার যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে ২৯টি ষ্টেট ও টেরিটরি ইতোমধ্যে তা অনুমোদন করেছে। অধিকাংশ ষ্টেট গত সপ্তাহগুলোতে এই তহবিল পাওয়ার জন্য ফেমার কাছে আবেদন জানিয়ে আসছিল। জানা গেছে, সেপ্টেম্বরের প্রথম থেকেই নিউইয়র্কসহ অন্যান্য ৩০টি স্টেটে বেকারভাতা প্রদান শুরু হবে। আরিজোনা ও টেক্সাস ইতোমধ্যে এরই মধ্যে কর্মহীনদের মধ্যে এ সহায়তা বিতরণ শুরু করেছে। আগামী সপ্তাহগুলোতে যেসব ষ্টেট এই সহায়তা বিতরণ শুরু করবে সেগুলো হচ্ছে: আলাবামা, আলাস্কা, ক্যালিফোর্নিয়া, কলোরাডো, কানেকটিকাট. জর্জিয়া, আইডাহো, ইণ্ডিয়ানা, আইওয়া, কেন্টাকি, লুইজিয়ানা, মেরিল্যাণ্ড, ম্যাসাচুসেটস, মিশিগান, মিসিসিপি, মিজৌরি, মন্টানা, নিউ হ্যাম্পশায়ার, নিউ মেক্সিকো, নিউ ইয়র্ক, নর্থ ক্যারোলিনা, ওকলাহোমা, পেনসিলভেনিয়া, রোড আইল্যাণ্ড, টেনেসি, ইউতাহ, ভারমন্ট ও ওয়াশিংটন। শিগগিরই অন্যান্য ষ্টেটগুলো এ সহায়তা অনুমোদন করবে। একমাত্র সাউথ ডাকোটা এ ভর্তুকি প্রদানের অসম্মতি জানিয়েছে।ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (ফেমা) কর্মহীন মানুষের সহায়তায় দ্বিতীয় পর্যায়ে যে অর্থ বরাদ্দ করেছে নিউইয়র্ক ষ্টেট গত সোমবার তা অনুমোদন করেছে। কিন্তু কবে নাগাদ এই অর্থ ফেমা থেকে নিউইয়র্ক ষ্টেট সরকারের কাছে পৌঁছবে তা ষ্টেট ডিপার্টমেন্ট অফ লেবার এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি।
ফেডারেল সরকার ষ্টেগুলোকে অতিরিক্ত ১০০ ডলার হারে প্রদানের জন্য আহবান জানালেও নিউইয়র্ক এখনো সে সম্পর্কে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। ষ্টেট ডিপার্টমেন্ট অফ লেবার কবে থেকে ফেডারেল সহায়তা প্রাপকদের কাছে পৌঁছাবে সে সম্পর্কেও কিছু জানা যায়নি।
কর্মচ্যুতরা আসলে কি পরিমাণ অর্থ পাবে তা নির্ভর করবে তারা কোথায় বাস করে তার উপর। এখ নপর্যন্ত শুধু কেন্টাকি ও মন্টানা সাপ্তাহিক ৩০০ ডলার ফেডারেল সহায়তার প্রতি সপ্তাহে অতিরিক্ত ১০০ ডলার করে প্রদানের পক্ষে মত দিয়েছে। এর বাইরে থাকবে মানসম্মত আনএমপ্লয়মেন্ট ভাতা। যেসব কর্মজীবী সপ্তাহে কমপক্ষে ১০০ ডলার হারে আনএমপ্লয়মেন্ট ভাতা পাবেন তারা ফেডারেল সরকারের ৩০০ ডলার সহায়তা লাভের উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবেন। এর ফলে জুলাই পর্যন্ত যারা সপ্তাহে ৬০০ ডলার হারে সহায়তা লাভ করেছে তাদের মধ্য থেকে ১০ লাখের অধিক লোক ৩০০ ডলার সহায়তা থেকে বাদ পড়তে পারেন।
কংগ্রেসের ব্যর্থতায় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা
করোনা মহামারীর কারণে কর্মচ্যুত মানুষের সহায়তায় ৬০ বিলিয়ন ডলার হ্রাস করার অর্থ সার্বিক অর্থনীতিতে ওই পরিমাণ অর্থ প্রবাহ কমে যাওয়া। বেকার হয়ে পড়া লোকদের প্রতি সপ্তাহে ৬০০ ডলার করে প্রদানের ফেডারেল কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর এই সংকট সৃষ্টি হতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ট্রেজারি অর্থনীতিবিদ আর্নি টেডেসি। এ সহায়তা বন্ধ হওয়ার ফলে ইতোমধ্যে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ফেডারেল সহায়তা লাভের জন্য কর্মহীন লোকের সংখ্যা এখনো বেড়ে চলেছে। খুচরা সরবরাহ ব্যবস্থা কর্মহীন লোকদের ভাতার কারণে উপকৃত হয়েছে এবং এর ফলে তাদের সার্ভিস বন্ধ করতে হয়নি। দেশের সবচেয়ে খুচরা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্ট এ বছরের দ্বিতীয় তিন মাসে রেকর্ড পরিমাণ মুনাফা অর্জন করেছে ফেডারেল সহায়তার কারণে ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতা স্বাভাবিক ছিল বলে। কিন্তু আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রাখা বা সহায়তার পরিমাণ নিয়ে গত এক মাস ধরে যে টানাপোড়েন চলছে তাতে ওয়ালমার্ট সহ খুচরা সরবরাহকারীদের ব্যবসায়ে ইতোমধ্যে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে।
মহামারী বিধ্বস্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য কর্মচ্যুতদের প্রদেয় আর্থিক সহায়তা হ্রাস করা এবং এ কর্মসূচির অবসান ঘটিয়ে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের অধিক অর্থ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ে সরবরাহ করা হলে তারা তাদের কর্মীদের কাজে ফিরিয়ে নিতে পারবে এবং সম্ভবত নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সর্বোপরি হুমকির মধ্যে পড়া অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে। কংগ্রেস এবং হোয়াইট হাউজ এ ধরনের এ ধরনের চাপ রয়েছে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এবং নতুন আর্থিক সহায়তা দানের প্রধান উদ্দেশ্যও হবে এটি।
গত জুলাই মাস পর্যন্ত চার মাসে ফেডারেল সরকার কর্মচ্যুতি বীমা সহায়তার আকারে অর্থনীতিতে প্রতি সপ্তাহে ২৫ বিলিয়ন ডলার যোগ করেছে এবং সেই সহায়তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন করে সপ্তাহে মাথাপিছু ৩০০ ডলার করে সহায়তা দেয়া হলে প্রতি সপ্তাহে এই খাতে ব্যয় হবে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার। আর্নি টেডেসির মতে এককভাবে পরিবারগুলোর উপর বিপর্যয়কর প্রতিক্রিয়া পড়ার পাশাপাশি আমেরিকার সার্বিক অর্থনীতিতেও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে। শ্রম বাজারে ইতোমধ্যে বিদ্যমান অবস্থা আরো শোচনীয় হবে। কারণ কর্মসংস্থান সূচক অনুযায়ী গত ১৪ আগষ্ট সমাপ্ত সপ্তাহে নিয়োগ চাহিদা ছিল ২০১৯ সালের এই সময়ের চাহিদার চেয়ে ২০ শতাংশ কম। জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে ফেডারেল আর্থিক সহায়তা সমাপ্ত হওয়ার পর কর্মসংস্থান সার্বিকভাবে হ্রাস পেয়েছে। গত ১৫ আগষ্ট সমাপ্ত সপ্তাহে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা আরো ১১ লাখ বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ মাহমারী জনিত আর্থিক মন্দার কারণে লোক ছাঁটাই অব্যাহত রয়েছে। অর্থচ প্রতি বছর গ্রীস্মেও এই সময়ে বছরের অন্য সময়ের চেয়ে কর্মসংস্থান উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায়। আগামী মাসগুলোতেও বিশেষ করে যেসব জায়গা এখনো করোনা মহামারীর স্পর্শকাতর জায়গাগুলোতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই।
Posted ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ৩০ আগস্ট ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh