বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ১১ মে ২০২৩
গত এক বছর যাবত টেক্সাস থেকে বাসযোগে নিউইয়র্কে পাঠানো ইমিগ্রান্টের চাপে দিশেহারা সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস গত সপ্তাহ থেকে নবাগত ইমিগ্রান্টদের আপস্টেট নিউইয়র্কে পাঠাতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু আদালতের হস্তক্ষেপে তা থেমে গেছে। আগামী ১৫ মে এ ব্যাপারে পুনরায় শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
সিটি মেয়র সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, সিটিতে ইমিগ্রান্টদের চাপ কিছুটা হালকা করতে কিছু সংখ্যক ইমিগ্রান্টকে আপস্টেটের কাউন্টিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন। ইমিগ্রান্টদের আবাসন ও খাদ্যের ব্যয় সিটিই বহন করবে বলে মেয়র অ্যাডামস একাধিক কাউন্টি প্রধানের সঙ্গে আলোচনাও করেছেন।
কিন্তু তাদের সম্মতি ছাড়াই ইমিগ্রান্টদের পাঠাতে শুরু করলে অরেঞ্জ কাউন্টি ও রকল্যান্ড কাউন্টিতে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। নিউইয়র্ক সিটি মেয়রের প্রতি রকল্যান্ড কাউন্টি প্রধানের বক্তব্য এতটা আপত্তিকর ছিল যে, বিষয়টি রকল্যান্ড সুপ্রীম কোর্ট আমলে নেয় এবং বিচারক ক্রিস্টিন ডি’আলেসো সাময়িক স্থিতাবস্থার আদেশ দান করেন।
নিউইয়র্ক সিটি থেকে আপস্টেটের যে কাউন্টিগুলোতে ইতোমধ্যে ইমিগ্রান্টরা উপনীত হয়েছে, সেসব কাউন্টিতে স্থানীয় অধিবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং কাউন্টির প্রশাসনের পক্ষ থেকে এরিক অ্যাডামসের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি উত্থাপন করা হয়েছে। অরেঞ্জ কাউন্টির প্রধান নির্বাহী রিপাবলিকান দলীয় স্টিভ নেহাস সাংবাদিকদের বলেছেন যে সিটি হল মঙ্গলবার তাকে এ কথা জানানোর ২৪ ঘন্টার মধ্যে স্থানীয় একটি মোটেলে একদল ইমিগ্রান্টকে বাসযোগে পাঠানো হয়েছে।
এ অবস্থা ঠেকাতে তিনি তার কাউন্টিতে স্থানীয়ভাবে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছেন। রকল্যান্ড কাউন্টিতেও অনুরূপ জরুরী অবস্থান ঘোষণা করা হয়েছে। রকল্যান্ড কাউন্টির প্রধান নির্বাহী এড ডে’ও একজন রিপাবলিকান, তিনি বলেছেন যে তার কাউন্টিতে ইমিগ্রান্ট প্রেরণ বন্ধ করার উদ্দেশে তিনি পুলিশ মোতায়েন করেছেন। তিনি এরিক অ্যাডামসকে এই মর্মে হুমকিও দিয়েছেন যে, “মি: অ্যাডামস, আপনি আমাদের ওপর টেক্কা দেওয়ার দেষ্টা করতে পারেন, কিন্তু রকল্যান্ড কাউন্টির জনগণের পক্ষ থেকে আমি আপনার গলা টিপে ধরতেও প্রস্তুত।
অরেঞ্জ কাউন্টির নির্বাহী স্টিভ নেহাস জানান যে গত সপ্তাহে অ্যাডামস তার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান যে তিনি অরেঞ্জ কাউন্টির নিউরার্গে ক্রসরোড হোটেলে অবস্থানের জন্য প্রায় ৬০ জন ইমিগ্রান্ট প্রেরণ করছেন, যাদের ব্যয় নির্বাহ করবে নিউইয়র্ক সিটি। কিন্তু তিনি জানান এবং তিনি জরুরী অবস্থা জারি করার আগেই নিউইয়র্ক সিটি থেকে বাসভর্তি ইমিগ্রান্ট তার কাউন্টিতে এসে উপস্থিত হয়েছেন। ইতোমধ্যে কাউন্টিগুলোতে জারিকৃত জরুরী অবস্থার কারণে বাসযোগে পাঠানো এসাইলাম আবেদন করতে আগ্রহী ইমিগ্রান্টদের হোটেল, মোটেল বা স্বল্পস্থায়ী ভাড়ায় বাড়ি পাওয়ার সুযোগ হবে না।
রকল্যান্ডের কাউন্টি প্রধান বলেছেন, আমরা আমাদের নিজস্ব বিধিবিধান দিয়ে কাউন্টি পরিচালনা করি এবং বিশেষ উদ্দেশ্যে পরিচালিত নিউইয়র্ক সিটির বিধি অনুসরণ করতে পারি না এবং নিউইয়র্ক সিটি আমাদের উপর তাদের এখতিয়ার প্রয়োগ করতে পারে না। তিনি জানান যে, গত মঙ্গলবার হোটেল ও মোটেলগুলোতে লিখিত নির্দেশ পাঠানো হয়েছে যে তারা যদি জরুরী অবস্থাজনিত সিটির কোড লংঘন করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তবে নিউবার্গের ক্রসরোডস হোটেলের ব্যবসা গত মঙ্গলবারেও স্বাভাবিক ছিল এবং ইমিগ্রান্টদের আগমণ সম্পর্কে হোটেল ব্যবস্থাপনা কিছু জানে না বলে বার্তা সংস্থাগুলোকে জানিয়েছে। হোটেলের রিসেপশন থেকে বার্তা সংস্থাকে জানান হয় যে, তাদের হোটেলে প্রতিরাতের জন্য ভাড়ার পরিমাণ ১৪৪ ডলার এবং এর সঙ্গে ট্যাক্স যোগ হবে। হোটেলে পুরো বুকিং আছে।
তারা জরুরী অবস্থা সম্পর্কে কাউন্টির ফেসবুক পেজে লিখেছে, কিন্তু এর বাইরে তারা আর কিছু জানে না। স্থানীয় বাসিন্দারা নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামসে সিদ্ধান্তকে হটকারী বর্ণনা করে ইমিগ্রান্টদের তাদের কাউন্টিতে স্থান না দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। তাদের মতে নিউইয়র্ক সিটি ইমিগ্রান্টদের চায় না, আমরা তাদের সামাল দেওয়ার সক্ষমতা রাখি না। আমাদের লোকজন কঠোর পরিশ্রমী, তারা খেটে খায়। অতএব একদল লোক বিনা খরচে আবাসন, খাদ্য ইত্যাদি সুবিধা ভোগ করবে এটা কারো কাম্য হতে পারে না।
Posted ৪:২৬ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১১ মে ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh