বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৩
গাজায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে যুদ্ধকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে উতপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রায় সকল স্টেটে ইসরাইল সমর্থক ও মুসলিম শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে এবং কোনো কোনো স্থানে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের সকল বড় সিটিতে গাজায় ইসরাইলের ব্যাপক ধ্বংস ও ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। অনেক স্থানে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়নি এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইসরাইয়েল সমর্থকদের ওপর চড়াও হয়েছে ফিলিস্তিন সমর্থকরা এবং স্যান ফ্রান্সিসকোতে মাররোধের শিকার এক ব্যক্তির মৃত্যু ঘটেছে।
তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিক্ষোভ ও সহিংস ঘটনা এবং বিদ্বেষমূলক প্রচারণার প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। অ্যান্টি-ডিফেমেশন লীগ বলেছে যে, ৭ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৩১২টি ইহুদি বিরোধী ঘটনা রেকর্ড করেছে, যার মধ্যে ১৯০টি ঘটনা ছিল সরাসরি ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ ধরনের ঘটনা ৩৮৮শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে সংস্থাটি তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে। অপরদিকে কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (কেয়ার) গত মাসের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে যে, তারা ৭৭৪টি মুসলিম বিদ্বেষীমূলক আচরণের অভিযোগ পেয়েছে, যার মধ্যে ৭ অক্টোবর থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত সংঘটিত ঘটনাগুলো প্রত্যক্ষভাবে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত।
ফেডারেল কর্মকর্তারা কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রকে একটি অনলাইন ফোরামে হিংসাত্মক ইহুদি-বিরোধী হুমকি দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছে। ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভানিয়া এফবিআইকে অপরাধী, বিরক্তিকর ইহুদি বিদ্বেষী ইমেল প্রেরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থেিদর সতর্ক করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট কোস্টের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে একটি ইহুদি সমর্থক ও ফিলিস্তিন সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় এক মুসলিম ছাত্র আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড স্যালার এবং প্রভোস্ট জেনি মার্টিনেজ শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা আমাদের ক্যাম্পাসে সম্ভাব্য ঘৃণা-বিদ্বেষ থেকে উদ্ভুত দৈহিক সহিংসতার ঘটনায় গভীর বিরক্তি বোধ করেছি। আমাদের ক্যাম্পাসে সহিংসতা অগ্রহণযোগ্য। বিদ্বেষমূলক সহিংসতা নিন্দনীয় এবং আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
পশ্চিম উপকূলে সান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়া থেকে পূর্ব উপকূলে আপস্টেট নিউইয়র্ক পর্যন্ত বেশ কয়েকটি কলেজে ইহুদি-বিদ্বেষী এবং ইসলামোফোবিক ঘটনা দেখা গেছে, যার প্রেক্ষিতে রাজনীতিবিদ এবং নাগরিক অধিকার সংস্থাগুলিকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেছেন। নিউইয়র্কের ইথাকায় অবস্থিত কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বিদ্বেষমূলক ঘটনার প্রেক্ষিতে নিউইয়র্ক স্টেট গভর্নর ক্যাথি সি হকুল বলেছেন, আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই যে, আমরা ঘৃণা এবং ভীতিকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারি না। গভর্নর হিসাবে, আমরা নিউইয়র্কে ইহুদি-বিদ্বেষ, ইসলামফোবিয়া বা বিদ্বেষমূলক যেকোনো পরিস্থিতিতে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করবো এবং নিউয়র্কবাসীদের নিরাপদ রাখতে আমরা সকল সম্ভাব্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে প্রস্তুত।
Posted ৩:০৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh