বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
নিউইয়র্ক সিটিতে যারা এয়ারবিএনবি ও ভিআরবিও’র মতো প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য বাড়ি ভাড়া দিয়ে থাকেন, তাদের ওপর ৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার থেকে কঠোর বিধি প্রয়োগ করতে শুরু করেছে সিটি প্রশাসন। সিটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ধারণা করছেন যে গত বছরের শেষ দিকে এয়ারবিএনবি’তে তালিকাভুক্ত স্বল্পমেয়াদে ১০,০০০ বাড়ি অবৈধভাবে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। নতুন বিধি অনুযায়ী এয়ারবিএনবির মতো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্বল্প মেয়াদে বাড়ি ভাড়া দেওয়ার এখতিয়ার সীমিত হবে। এই পদক্ষেপ নেয়ার ফলে বিধি লংঘনকারী হাজার হাজার বাড়ি এয়ারবিএনবি ও ভিআরবিও’র তালিকা থেকে বাদ পড়বে।
উল্লেখ্য, নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় সিটিতে দীর্ঘদিন ধরেই এয়ারবিএনবি ও ভিআরবিও মতো হোম-শেয়ারিং কোম্পানিগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এ দ্বন্দ্বে নিউইয়র্ক সিটির গৃহীত সর্বশেষ ব্যবস্থা সবচেয়ে কঠোর বলে নিউইয়র্ক টাইমসের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে।
সিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, সিটির বিদ্যমান আবাসিক সংকটের মধ্যে এয়ারবিএনবি এবং অনুরূপ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অধিক মুনাফার লোভে স্বল্পমেয়াদে বাড়ি ভাড়া দেওয়ার পরিণতিতে সিটিতে বাড়ি ভাড়া বাড়তে বাড়তে মাঝারি ও স্বল্প আয়ের বাসিন্দাদের সাধ্যের বাইরে চলে গেছে এবং তারা আবাসন সংকট আরো বৃদ্ধিতে ইন্ধন যোগাচ্ছে। অন্যদিকে এয়ারবিএনবি বলেছে যে, নতুন বিধিসমূহ তাদের মতো প্রতিষ্ঠানের ওপর কার্যত এক ধরনের ‘নিষেধাজ্ঞা’। কিছু সমালোচক বলেছেন যে, সিটি প্রশাসন হোটেল শিল্পের লবিংয়ের খপ্পরে পড়েছে এবং সিটিতে আগত পর্যটকদের স্বল্প ব্যয়ে অবস্থানের সুযোগ বন্ধ করে দিচ্ছে।
নতুন বিধিসমূহ
নিউইয়র্ক সিটির বিদ্যমান আইন অনুযায়ী বাড়ি মালিক যদি বাড়িতে উপস্থিত না থাকে সেক্ষেত্রে কাউকে ৩০ দিনের কম সময়ের জন্য বাড়ি ভাড়া দেওয়া যাবে না এবং ভাড়া দেওয়া হলেও একসঙ্গে দুই জনের বেশি লোক থাকতে পারবে না এবং পুরো বাড়িতে তারা সহজে প্রবেশ করতে পারবে । কিন্তু সিটি বলছে যে, যেসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সিটির বাড়ি ও অ্যাপার্টমেন্টগুলো স্বল্প মেয়াদে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে, তারা বিধিবদ্ধ আইন লংঘন করছে, যা সিটির আবাসন সংকটকে আরো জটিল করছে, যা সিটির কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
এ প্রসঙ্গে নিউইয়র্ক সিটি প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা বলেছেন যে, গত জুলাই মাসে আদালতে দায়ের করা এক মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে এআরবিএনবি’র ২০২২ সালের মোট ৮৫ মিলিয়ন ডলার আয়ের অর্ধেকের বেশি ছিল অবৈধ। এয়ার বিএনবি অবশ্য প্রদর্শিত আয়ের ব্যাপারে আপত্তি করেছে।
মঙ্গলবার থেকে যে বিধিসমূহ প্রযোজ্য হয়েছে, তাতে এয়ারবিএনবি’র মাধ্যমে স্বল্প মেয়াদে যারা বাড়ি ভাড়া দিতে হলে বাড়ি মালিকদের অবশ্যই সিটির সংশ্লিষ্ট বিভাগে তালিকাভূক্ত হতে হবে।
এয়ারবিএনবি, ভিআরবিও, বুকিংডটকমসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবশ্যই সিটির অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে, যাতে সিটির পক্ষে স্বল্পমেয়াদী থাকার সাথে যুক্ত ফি সংগ্রহ করা সহজ হয়। মঙ্গলবার থেকে কার্যকর এ বিধি লংঘিত হলে উপরোক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বল্প মেয়াদে ভাড়া প্রদানকারী বাড়ি ও অ্যাপার্টমেন্ট মালিকরা একাধিকবার বিধি লংঘনের ক্ষেত্রে ৫,০০০ ডলার জরিমানার মুখোমুখি হবেন এবং প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিবারের অবৈধ ভাড়া লেনদেনের জন্য ১,৫০০ পর্যন্ত জরিমানার মুখে পড়বেন।
এয়ারবিএনবি’তে অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া দেওয়ার কারণে বহু অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে বসবাসকারী বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন যে, স্বল্প মেয়াদে থাকা লোকজন নানা অপরাধমূলক কাজ করে, অধিক কোলাহল করে এবং পরিচ্ছন্নতার সমস্যাসহ আরো অনেক ঝুঁকির সৃষ্টি করে।
Posted ৪:৩৬ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh