বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে গত ৩০ অক্টোবর সোমবার যুক্তরাষ্ট্র স্টেট ডিপার্টমেন্টের সামনে সমাবেশ করেছে মেরিল্যান্ড বিএনপি। তাদের স্লোগানে গোটা এলাকা প্রকম্পিত করে। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশে পুলিশের হামলা, গুলিবর্ষণ ও নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন এবং গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে স্টেট ডিপার্টমেন্টের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে ম্যারিল্যান্ড বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের সমাবেশে যোগ দেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি, নিউইয়র্ক স্টেট ও নিউইয়র্ক মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর বিএনপিসহ বিভিন্ন স্টেটের নেতৃবৃন্দ।

বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল লতিফ সম্রাট, গিয়াস আহমেদ, জিল্লুর রহমান জিল্লুর ও মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাকসুদুল হক চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী যুবদলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আবু সাঈদ আহমেদ, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির আহবায়ক মাওলানা অলিউল্লাহ আতিকুর রহমান ও সদস্য সচিব সাইদুর রহমান সাঈদ, নিউইয়র্ক মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা, উত্তরের আহ্বায়ক আহবাব চৌধুরী খোকন, যুবদল নেতা জাকির এইচ চৌধুরী, জাসাসের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম ফারুক শাহীন, ওয়াশিংটন ডিসি বিএনপির সভাপতি হাফিজ খান সোহায়েল এবং সেক্রেটারি জাকির হোসেন প্রমুখ। বিভিন্ন স্টেটের নেতাকর্মীরা এই সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশে বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবিলম্বে পদত্যাগ এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

সমাবেশে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন বলেন, বাংলাদেশে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়েছে। অথচ সমগ্র দেশের মানুষ অবিলম্বে শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছেন।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক বিশ্ব এই দাবিতে সরকারকে বার বার সতর্ক করছে। এরইমধ্যে আমেরিকা বাংলাদেশে অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা নিয়ে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা ও কার্যকর করেছে। আমরা অবিলম্বে সরকারকে নির্যাতনের পথ পরিহার করে পদত্যাগের আহ্বান জানাই। অন্যথায় মাশুল দিতে হবে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনোমতেই বাংলাদেশ সুষ্ঠু নির্বাচন যে সম্ভব নয়। তার প্রমাণ বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন, গ্রেপ্তার ও মহাসমাবেশে গুলিবর্ষণ। আমরা এসবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তিনি সরকারকে গণতন্ত্রের পথে হাঁটার আহ্বান জানান। সমাবেশ শেষে সাম্প্রতি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহত বিএনপি নেতাদের জন্য গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত হয় । জামায়াতে ইমামতি করেন বিএনপি নেতা আব্দুল লতিফ সম্রাট ।

জাতিসংঘের সামনে বিএনপির বিক্ষোভ : ঢাকায় বিএনপি’র মহাসমাবেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও পুলিশী হামলার প্রতিবাদে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সামনে ও জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। গত ২৮ অক্টোবর শনিবার পৃথক পৃথকভাবে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ দুটিতে দলের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেন।

সমাবেশে উল্লেখযোগ্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে কেন্দ্রীয় বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য যথাক্রমে আব্দুল লতিফ সম্রাট, গিয়াস আহমেদ ও জিল্লুর রহমান, কেন্দ্রীয় বিএনপি নেত্রী লিটা রহমান, সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কন্ঠশিল্পী বেবি নাজনীন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ জসিম ভূইয়া, বিএনপি নেতা আব্দুস সবুর, মোশাররফ হোসেন সবুজ, এবাদ চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় জাসাস নেতা গোলাম ফারুক শাহীন, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এম এ বাতেন, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির আহবায়ক ওলিউল্লাহ আতিকুর রহমান ও সদস্য সচিব সাইদুর রহমান সাঈদ, নিউইয়র্ক মহানগর (দক্ষিণ)-এর সভাপতি হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা ও সদস্য সচিব মোহাম্মদ বদিউল আলম, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও যুক্তরাষ্ট্র শাখার সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুল হক চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ আন্তর্জাতিক সম্পাদক সাইফুর খান হারুন, যুক্তরাষ্ট্র জাসাস-এর আহবায়ক মোহাম্মদ রহমান সায়েম ও সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মহিলাদল নেত্রী সৈয়দা মাহমুদা শিরিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে বিএনপির নেতা-কর্মীরা শেখ হাসিনার সরকার বিরোধী নানা শ্লোগান দেয় এবং পদত্যাগ দাবি করে ঢাকায় বিএনপি’র মহাসমাবেশে সরকার দলীয় নেতা-কর্মী ও পুলিশী হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।