বাংলাদেশ অনলাইন : | বৃহস্পতিবার, ০১ জুন ২০২৩
জাপানে জন্মহার বাড়াতে শিশুকল্যাণ খাতে ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলার বরাদ্দ করার ঘোষণা দিয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। ৩১ মে (বুধবার) দেশটির মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। আগামী তিন বছরের মধ্যে এই খাতে বরাদ্দের অর্থের পরিমাণ দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা তার রয়েছে বলেও বৈঠকে জানিয়েছেন কিশিদা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যতই অর্থনৈতিক চাপ আসুক— সামনের বছরগুলোতে বরাদ্দের পরিমাণ বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে তার সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
জাপানের অর্থমন্ত্রী শিগেইউকি গোতো এক সংবাদসম্মেলনে জানিয়েছেন, শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্ক তরুণ-তরুণীদের উচ্চশিক্ষায় ভর্তুকি, দরিদ্র্য শিশুদের ওপর নিপীড়ন প্রতিরোধ, প্রতিবন্ধী শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা প্রভৃতি খাতে ব্যয় করা হবে বরাদ্দের এই অর্থ। তবে কোন উৎস থেকে বিপুল পরিমাণ এই অর্থ জোগাড় করা হবে— সে সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ ঋণগ্রস্ত জাপান। দেশটির জাতীয় অর্থনীতির আকার ৫ লাখ ১৫ হাজার কোটি ডলার কিন্তু সরকারের ঋণ ইতোমধ্যে অর্থনীতির আকারের প্রায় দ্বিগুণ অঙ্ক ছুঁয়েছে। সম্প্রতি শিক্ষাখাতে বরাদ্দের অর্থ জোগাড়ের জন্য নতুন ধরনের বন্ডও বাজারে ছাড়তে হয়েছে জাপানের সরকারকে।
জাপানের রাজনীতি ও অর্থনীতি বিশ্লেষকদের মতে, দুই বৈরী প্রতিবেশী চীন ও উত্তর কোরিয়ার হুমকি মোকাবিলায় সামরিক খাতে ব্যয় বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে সরকার এবং অন্যান্য খাতেও বরাদ্দ বিগত বছরগুলোর তুলনায় তেমন হ্রাস করা হয়নি। দেশটির অর্থনৈতিক চাপের মূল কারণ হিসেবে এটিকেই উল্লেখ করেছেন তারা।
জাপানের আয়তন ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৯৭৫ বর্গকিলোমিটার এবং মোট জনসংখ্যা ১২ কোটি ৪৮ লাখ চল্লিশ হাজার। গত একদশক ধরেই জন্মহারে নিম্নগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে দেশটিতে। তবে সম্প্রতি এই নিম্নগতি ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ২০২২ সালে জাপানে জন্ম নিয়েছে ৮ লাখেরও কম সংখ্যক শিশু। দেশটির ইতিহাসে এর আগে এক বছরে এত কম সংখ্যক শিশু জন্মানোর রেকর্ড নেই।
নিম্ন জন্মহারের ও মানুষের গড় আয়ুর উর্ধ্বগতির ফলে জাপানের শ্রমবাজারে ইতোমধ্যেই ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে, সেই সঙ্গে হুমকির মুখে পড়েছে দেশটিতে বসবাসরত বিভিন্ন বয়সী মানুষের আনুপাতিক ভারসাম্যও।
কয়েক মাস আগে এক ভাষণে জাপানের প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, যদি আরও কয়েক বছর এই অবস্থা চলে— সেক্ষেত্রে দেশ হিসেবে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে জাপান।
Posted ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০১ জুন ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh