বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ০৬ এপ্রিল ২০২৩
নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেছেন, প্রতিটি নিউইয়র্কারের জীবনে নারীর শক্তিশালী ভূমিকা রয়েছে, যারা তাদের জন্ম দিয়েছে, তাদের লালন-পালনসহ সব ধরনের সেবা দিয়েছেন। তারা আমাদের মা, বোন, আন্টি, দাদি-নানি, আমাদের শিক্ষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানি যে কেউ হতে পারেন। কঠোর পরিশ্রমী নারী, যারা এই নগরীতে আমাদের জীবনকে স্বচ্ছন্দ করেছেন, তারা সবসময় আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস। তিনি আরো বলেন, নারীদের কাছে আমরা অনেক ঋণী। কিন্তু প্রজন্ম পরম্পরায় সিটিতে বসবাসকারী নারীর স্বাস্থ্যের প্রতি তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়। বহু দশক ধরে স্বাস্থ্যসেবা পুরুষের স্বাস্থ্যের প্রতি অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছে।
মেয়র অ্যাডামস এ প্রসঙ্গে তার ব্যক্তিগত জীবনের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে বলেন, ‘আজ আমি যা, তা একজন নারীর কারণে, যিনি আমার মা ডরোথি অ্যাডামস। আমি আমার মা ও আমার বোনকে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত ও দুর্ভোগ সহ্য করতে প্রত্যক্ষ করেছি। তাদের অবহেলা করা হয়েছে, তাদের কথা কেউ মনে করেনি এবং যে চিকিৎসা তাদের প্রয়োজন তা পাওয়ার জন্য তাদেরকে সংগ্রাম করতে হয়েছে। নিউইয়র্কে চিকিৎসা সেবা পেতে একজন নারীকে কী পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয়েছে, তা খুব বেশি সংখ্যক নিউইয়র্কার জানেন না।
তিনি বলেন, এ অবস্থার পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে আমার প্রশাসন ইতোমধ্যে কঠোর পরিশ্রম শুরু করেছে। নারীর স্বাস্থ্যসেবার ভবিষ্যৎ কী হবে তা নির্ধারণের উদ্দেশ্যে আমরা গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো ‘নারী স্বাস্থ্য শীর্ষ সম্মেলন’ করেছি। নারী মেয়ে, এবং এলজিবিটিকিউ ও অন্যান্যদের স্বাস্থ্যসেবায় সহায়তা দান করার ক্ষেত্রে আমরা নিউইয়র্ককে জাতীয় মডেলে পরিণত করতে যাচ্ছি। এই সম্মেলনে সিটির বিভিন্ন সেক্টরের শতাধিক বিশেষজ্ঞ অংশগ্রহণ করে চারটি প্রধান বিষয়ের ওপর আলোকপাত করেছেন: দীর্ঘদিন যাবত রোগাক্রান্ত নারী, জন্ম সাম্য, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও মানসিক স্বাস্থ্য। কর্মজীবী মা’দের এখন থেকে পে-চেক বা নবজাত সন্তানের মধ্যে একটিকে বেছে নেয়ার প্রয়োজন পড়বে না এবং নারীকে তাদের সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হবে না। কৃষ্ণাঙ্গ ও ল্যাটিনো নারীদের অসমতার মধ্যে থাকতে হবে না।
মেয়র অ্যাডামস আরো বলেন, কৃষ্ণাঙ্গ নারীরা গর্ভধারণ ও সন্তান জন্মদানের সঙ্গে জড়িত জটিলতায় শ্বেতাঙ্গ নারীদের চেয়ে নয় গুণ অধিক সংখ্যায় মারা যায় এবং কোভিড এর সময়ে কৃষ্ণাঙ্গ মাতৃমৃত্যুর হার বেড়েছে। সেজন্য আমরা মাতৃস্বাস্থ্য সেবায় উচ্চতর সমতা আনার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি, যাতে এ ধরনের পরিস্থিতির মাঝেও কেউ অসমতার শিকার না হয় এবং সার্বিক মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস পায়। এছাড়া সিটিতে প্রতি পাঁচজন নারীর মধ্যে একজন বন্ধাত্বের সমস্যায় ভোগেন, এজন্য সিটির যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবায় ঢেলে সাজানো হচ্ছে, যাতে নারীরা মেনোপজ সেবা, বন্ধাত্ব, জন্মনিয়ন্ত্রণ ও গর্ভপাত চিকিৎসার সুযোগ নিতে পারেন।
তিনি বলেন, অনেকের ধারণা নেই যে, নিউইয়র্ক সিটিতে প্রাপ্তবয়স্কা নারীদের মৃত্যুর অন্যতম বড় কারণ হৃদরোগ। আমরা কোভিড পরবতী সময়ে রোগনির্ণয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দান করছি, যাতে জটিল হওয়ার আগেই নিউইয়র্কাররা উপযুক্ত চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পারেন এবং বিনা চিকিৎসায় কেউ মৃত্যুমুখে পতিত না হন।
Posted ২:৫১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৬ এপ্রিল ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh