বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় আনন্দ উৎসবের দিন ঈদুল ফিতর। রমজানের একমাস সিয়াম সাধনার পর সবাই অপেক্ষায় থাকেন এই দিনটির জন্য। পবিত্র ঈদুল ফিতরের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২১ অথবা ২২ এপ্রিল পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। এবার নূতন স্বাভাবিকতায় ঘরে ঘরে চলছে ঈদের প্রস্তুতি। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের মূল্য বৃদ্ধিতে মধ্যবিত্ত শ্রেনীতে একধরণের টানা পোড়েন চললেও থেমে নেই ঈদের কেনাকাটা। ঈদে ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবারই চাই সাধ্যমত কাপড়-চোপর।
নিউইয়র্কের ঈদ সামনে রেখে জমে উঠেছে ফ্যাশন বাজার। অনেক ফ্যাশন শপেই দেখা যাচ্ছে কেনাকাটার ভীড়। মানুষ বরাবরই সৌন্দর্য্যের পূজারী। প্রতিটি মানুষই চরিত্র, রুচিবোধ, পছন্দ অপছন্দ ভিন্ন মাত্রিক। সবাই চান তার আচার-আচরণ, চলন-বলন ও পোষাক পরিচ্ছদ একান্ত নিজস্বতা। ব্যতিক্রমী ভঙ্গিমায় তুলে ধরতে চান নিজেকে। নানাভাবেই পোষাকে মানুষের ব্যক্তিত্বের বর্হিপ্রকাশ ঘটে। কে না চায় পরিপাটি, সুন্দর ডিজাইন ও ফ্যাশনের নূতন পোষাক। ঋতুভেদে নারী-পুরুষ শিশু সবারই পোষাকের ধরণ ও রং বদলায়।
উৎসব-আনন্দ নূতন ফ্যাশনের পোষাক ছাড়া আজকাল ভাবাই যায় না। বিশেষ করে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদ এলেই বাজার সয়লাব হয়ে যায় নূতন ডিজাইন ও ফ্যাশনের পোষাকে। নূতন পোষাক ছাড়া এখন ঈদের আনন্দ কোনভাবেই পুরো হয় না। তাই রমজানের শুরুতেই জমে উঠে ফ্যাশন শপগুলো। এবারো ঈদকে সামনে রেখে নিউইয়র্কের ফ্যাশন শপগুলো হাল ফ্যাশনের পোষাকে সজ্জিত হয়ে উঠেছে। ক্রমেই ফ্যাশন শপগুলোতে জমে উঠেছে ক্রেতাদের ভীড়। পবিত্র রমজান মাসের অর্ধেক কেটে গেছে। নিউইয়র্কের সর্বত্র মুসলিম কমিউনিটি ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পালন করছে সিয়াম সাধনা।
মুসলিম পরিবারের সদস্য বিশেষ করে ছেলেমেয়েদের জন্য হাল ফ্যাশনের ঈদের পোষাক কেনা আমাদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির একটি অংশ। মহিলাদের শাড়ী, সালোয়ার কামিজ, কুর্তার পাশাপাশি পুরুষরাও এ ব্যাপারে পিছিয়ে থাকে না। ঈদে নুতন পাঞ্জাবী-পাজামা সহ আধুনিক নূতন পোষাকের দিকে ঝোঁক রয়েছে তাদের। তবে এসব কিছুই নির্ভর করে পারিবারিক আয় এবং ক্রয় ক্ষমতার উপর। তারপরও কমবেশী সকলেই চান সাধ্যমতো ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে। এবারো নিউইয়র্কের মুসলিম কমিউনিটি এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। ফ্যাশন হাউজগুলো এই চাহিদার প্রতি খেয়াল রেখে তাদের পশরা সাজিয়েছে। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বড় ধরণের ব্যবসা করার জন্য তারা বছর জুড়ে প্রস্তুতি নিতে থাকেন। হাল ফ্যাশনের ঈদের পোশাক তারা আমদানি করেন বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান থেকে। ক্রেতারাও অপেক্ষা করে পোশাকের নতুন কালেকশনের জন্য। অনেকে আবার নিজ দেশ থেকেও আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে পোষাক-পরিচ্ছদ আনিয়ে রেখেছেন। এব্যাপারে বাংলাদেশী মুসলিম কমিউনিটির বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ এবং ফ্যাশন শপগুলোর মালিকদের সাথে কথা বলে ঈদের বাজার সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া গেছে।
জ্যাকসন হাইটসে উপমহাদেশীয় ঐতিহ্যবাহী পোষাকের স্টোরগুলোর মতো সিটির বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকা, জ্যামাইকা, এস্টোরিয়া, ব্রুকলীন, ব্রঙ্কসেও গড়ে উঠেছে অনেকগুলো নূতন ফ্যাশন শপ। ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ফ্যাশন শপগুলো সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে হাল ফ্যাশানের নূতন পোষাক আমদানী করেছে। ফ্যাশন শপগুলোকে সাজানো হয়েছে এবং ক্রেতারা ভীড় করছেন। ঈদে প্রতিটি ফ্যাশন শপেই আকর্ষনীয় মূল্য ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফ্যাশন শপগুলো পোষাকের সাথে রেখেছে রকমারী জুয়েলারী।
একাধিক দোকানির সাথে কথা বলে জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে তারা দোকানে সব বয়সী মানুষের জন্য নানা ডিজাইনের পোশাক সংগ্রহ করেছেন। নারীদের জন্য শাড়ির পাশাপাশি রয়েছে ত্রিপিস। তরুণ-তরুণীদের জন্য রয়েছে তাদের পছন্দের সব ধরণের পোশাক। ছেলে শিশুদের জন্য রয়েছে পাজামা-পাঞ্জাবী আর মেয়ে শিশুদের জন্য সালোয়ার-কামিজ, ফ্রকস, লেহেঙ্গা। রয়েছে সুন্দর সুন্দর জুতা, মাথার ব্যান্ড ও ক্লিপ। পরিবারের বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্যও রয়েছে নানা পোষাক। দোকানগুলোতে দেখা গেছে বাবা-মা কিংবা অভিভাবকরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শুরুতে ছেলেমেয়েদের কেনাকাটা করছেন।
আল-হামরা কালেকশন:
জ্যামাইকার ১৬৭-১৩ হিলসাইড এভিনিউয়ের ‘আল-হামরা কালেকশন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২৫ শতাংশ বিশেষ ছাড় দিয়েছে। পাইকারি ও খুচরা বিক্রয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠান আল-হামরায় পাঞ্জাবি, হরেক রকমের শাড়ি. গালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া ছাড়াও রয়েছে জামদানি, মসলিন শাড়ির বিশাল সমাহার। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আমাদের প্রতিটি আইটেমেই আধুনিকতার ছোঁয়া রযেছে, যা ক্রেতাদের আকর্ষণ করবে। উল্লেখ্য, আল-হামরা নিউইয়র্কের অন্যতম বাংলাদেশি মালিকানাধীন ফ্রাতেমা ব্রাদার্সের সহযোগী প্রতিষ্ঠান।
ইন্ডিয়ান শাড়ি প্লেস:
জ্যাকসন হাইটসের ইন্ডিয়ান শাড়ি প্লেসে (আইএসপি) চলছে বিরাট মূল্যহ্রাস। এটি গত ২৩মার্চ থেকে শুরু হয়েছে, চলবে আগামী ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত। ঈদের পরও তারা এটি চালু রাখবে। আইএসপিতে বিভিন্ন শাড়ি, পাজামা, পাঞ্জাবী, টাই, পিস কাপড়, পেটিকোট, ব্লাউজ, শেরওয়ানি, লুঙ্গিসহ বিভিন্ন ধরণের পোশাক বিক্রি হচ্ছে। ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে। অন্যান্য দোকানেও রয়েছে বিভিন্ন বাহারি পোশাক, গহনা এবং নিত্যপন্য।
Posted ৬:০২ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh