নিউইয়র্ক : | শুক্রবার, ৩০ জুন ২০২৩
গত ২৬ জুন সিটির জ্যাকসন হাইটস ঈদ মেলায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গ্লোবাল পিস অ্যামব্যাসেডর ড. আবু জাফর মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশিদের বড় সম্পদ ভালোবাসা ও মানবিকতা। এই বৈশিষ্ট্য দিয়েই আমরা বিশ্বজয় করেছি। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও মানবিক বৈশিষ্ট্যগুলো নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। জ্যাকসন হাইটস্ এর রুজভেল্ট ৭৭ স্ট্রিটে বিনোদন মাল্টিমিডিয়া সার্ভিসের ব্যানারে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
মেলার সহযোগিতায় ছিলেন জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস এসোসিয়েশন। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায়, শহীদ হাসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বারী উপস্থিত ছিলেন। মেলায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাপ্তাহিক আজকাল সম্পাদক, ওল্ড এজ হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট শাহ নেওয়াজ, অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, নিউইয়র্ক সিটি মেয়র দপ্তরের এশিয়ান এ্যাফেয়ার্স ভলেন্টিয়ার ফাহাদ সোলাইমান, শাহ গ্রুপের সত্তাধিকারী শাহ্ জে চৌধুরী। দুপুরে মেলার প্রথম পর্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাসেমব্লিওম্যান ক্যাটালিনা ক্রূজ।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন কমান্ডার, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ সমাজে হোম কেয়ার সেবার পাথিকৃৎ, বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট এণ্ড সিইও এবং পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেস এর প্রেসিডেন্ট আবু জাফর মাহমুদ বলেন, এখানে আমরা সবাই বাংলাদেশি আমেরিকান। বাংলাদেশি জীবনের সবকিছুই আমাদের অস্তিত্ব। এসব নিয়েই আমরা আমেরিকান। এগুলো বাদ দিয়ে আমরা আমেরিকান নই।
ভালোবাসাটা আমরা বাংলাদেশ থেকে শিখে এসেছি। ওই ভালোবাসা নিয়েই এখানে আমরা হোম কেয়ার করছি। সেবাদানকারীদেরকে বেচাকেনা করা যায় তখন সেখানে আর মানবতা যখন ব্যবসা হয়ে যায় তখন সেখানে আর ভালোবাসা থাকে না। আমাদের সমাজের যা কিছু সৌন্দর্য্য সেটিসহই আমরা আমেরিকান। তিনি তরুণ শিল্পী কলাকুশলীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই তরুণ বয়সে যেভাবে স্পন্দিত হৃদয়ে তোমরা সঙ্গীত নৃত্য ভালোবাসো, দেশপ্রেম যেন তোমাদের অন্তরে থাকে। দেশটি যদি থাকে তাহলে পূর্ব পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক থাকবে। তোমরা একদিন বাবা হবে দাদা নানা হবে। সেদিন এই সম্পর্কের মর্যাদা অনেক বেশি উপলব্ধি করবে। আর যদি দেশপ্রেম না থাকে নিজেরাও অন্যান্য জাতির মতো হারিয়ে যাবে। তা আমরা চাই না।
আবু জাফর মাহমুদ বাংলাদেশের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা বাংলাদেশের যা কিছু দুর্দশা সব বদলে দেবার কথা বলেছিলাম। আঠারো বছর বয়সে আমি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন কমান্ড করেছি আর এখন একটা মাত্র ব্যাটালিয়ন নয়, পুরো বাংলাদেশ কমান্ড করবো, ইনশাল্লাহ। আমরা ফিরে আসবো আবার। আবার ফেরাবো বাংলাদেশকে। বাংলাদেশ যুদ্ধ স্বাধীন করার পর যে স্বপ্ন ছিল, আবার সেখানে পৌঁছে যাবে। বাংলাদেশ পৌঁছে যাবে সফলতায়।
ড. মাহমুদ বলেন, আমেরিকা আমাদের মিত্র। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শক্তি আমাদের মিত্র। এই মিত্র আজ বাংলাদেশের সাথে। সব বাংলাদেশিদের সাথে। এই মনোবল সহ আমরা আজ আমেরিকান বাংলাদেশি। এই মনোবলই আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে নেবে। তিনি বলেন, জাতির স্বাধীন জীবন যাপনের লক্ষ্যে জীবন উৎসর্গ করার প্রতিজ্ঞাই ছিল মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের তাগিদ। মুক্তিযুদ্ধের আগে আমরা কেউ অস্ত্র হাতে নিইনি, ইউনিফরম পরিনি, যুদ্ধের কথা ভাবতেও পারিনি। যখন আমরা প্রকৃত ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে যাই, যখন আমরা শক্তির ভেতর মানবিকতা ছাড়া আর কিছুই দেখি না, তখন দেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধই অনিবার্য হয়ে ওঠে।
ড. মাহমুদ ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ধর্মের সবচেয়ে বড় শিক্ষা মানুষকে ভালোবাসা। কোনো মানুষকে যেন কষ্ট না দেয়া। এই একই শিক্ষা আমরা বাংলাদেশ থেকে পেয়েছি। আচরণ ও মনোভাবের এই সৌন্দর্য ছাড়া আমাদের কোনো অস্তিত্ব নেই। মনে রাখতে হবে অন্য প্রাণি থেকে মানুষের পার্থক্যের জায়গাটিই হচ্ছে দেশপ্রেম। মেলায় বেশ কয়েকটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান রকমারি পণ্যের স্টল সাজিয়ে বসে। বিনোদন মাল্টিমিডিয়া’র পক্ষ থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বেশ কয়েকজনকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
ড. আবু জাফর মাহমুদের ঈদ শুভেচ্ছা
নিউইয়র্ক : পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সারা পৃথিবীর মুসলিসম উম্মাসহ সকল জাতি গোত্র ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন গ্লোবাল পিস অ্যামব্যাসেডর ডক্টর আবু জাফর মাহমুদ। নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রিয় ব্যক্তিত্ব, বাংলা সিডিপ্যাপ সার্ভিসেস ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট এ- সিইও, পিপল ইউনাইটেড ফর পিস এর প্রেসিডেন্ট ড. আবু জাফর মাহমুদ এক শুভেচ্ছাবার্তায় বলেছেন, সৃষ্টিকর্তার প্রতি প্রেম ও ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা আমাদের মাঝে একটি অসাধারণ শিক্ষা নিয়ে হাজির হয়। এটি আমাদের চেতনা, নৈতিকতা ও মানবিক শিক্ষার এক অসাধারণ পর্ব।
আল্লাহ্ রাব্বুল আল আমীনের প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে আত্মত্যাগ ও ভ্রাতৃত্বের নজির স্থাপনই এই সময়ের বড় করণীয়। ড. আবু জাফর মাহমুদ বলেন, আমাদের যেসব স্বজন হারিয়ে গেছেন, এই পর্যন্ত যেসব মানব মানবী এই পৃথিবীকে আলোকউজ্জ্বল করেছেন, আমাদের দিক নির্দেশনা দিয়েছেন তাদের সবার জন্য দোয়া করার এটি এক উৎকৃষ্ট সময়। এই দিনে আল্লাহ তায়ালা আমাদের ওপর অনেক বেশি সন্তুষ্ট। আল্লাহ আমাদের আত্মত্যাগের প্রতিযোগিতার প্রতি সন্তুষ্ট। আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবাণী দিচ্ছি।
এটি হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর সময় থেকে আমরা বহন করে চলেছি। এই দিনে আমাদের মধ্যে পারস্পারিক ভালোবাসাটা আরো গভীর করার জন্য আল্লাহর নিয়ামত আশা করি এবং আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি।সারা পৃথিবীতে মানুষে মানুষে যে বিভেদ সৃষ্টি করা হয়েছে এটি শয়তানেরই কাজ এই কাজগুলোতে যারা অংশ নেয় এবং যারা নেতৃত্ব করে তারা নিশ্চয়ই আল্লাহ্র পছন্দের বাইরে। আমরা আল্লাহ্র পছন্দের প্রতি সুগভীর আস্থায় অনুগত। আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য একে অন্যের মধ্যে ভালোবাসার প্রকাশ ঘটাবো। আমরা জাতি ধর্ম বর্ণ অঞ্চল নির্বিশেষে আমাদের মধ্যকার ভালোবাসা আরো বেশি বিস্তৃত করবো। আরো বেশি গভীর করবো। ঈদ মুবারক।
Posted ৫:২১ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ৩০ জুন ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh