নিউইয়র্ক সিটির গণপরিবহন ব্যবহারে ত্যক্ত-বিরক্ত অনেক নারী যাত্রী, যারা করোনা মহামারী চলাকালে তাদের কর্মস্থলে যাতায়াতের জন্য অথবা ঘোরাঘুরির জন্য অন্যান্য উপায়ের ব্যবস্থা করতে পেরেছিলেন, তাদেরকে পুনরায় গণপরিবহন ব্যবহারে আকৃষ্ট করা মেট্টোপলিটান ট্রানজিট অথরিটির জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

যেসব নারী ইতিপূর্বে সাবওয়ে ব্যবহার করতেন, তাদের অনেকের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের প্রতি পুরুষ সহযাত্রীদের আপত্তিকর দৃষ্টিতে তাকানো অথবা ভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হওয়ার। এজন্য তাদেরকে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে গণপরিবহন, বিশেষ করে সাবওয়ে ব্যবহার করতে হয়েছে। এখন অনেক নারী নিরাপত্তার অভাবের কথা বলছেন, যা মহামারীকালে চূড়ান্ত রূপ ধারণ করেছিল। তারা তাদের গন্তব্যে যেতে তখন ভিন্ন যানবাহন ব্যবহার করেছেন।

অধিক সতর্ক নারী যাত্রীরা গণপরিবহন ব্যবহার প্রায় পুরোপুরিই বন্ধ করেছেন। যারা ট্যাক্সি ভাড়া দেওয়ার সামর্থ রাখেন তারা ট্যাক্সিতে যাতায়াত করছেন, অনেকে বাইসাইকেল ব্যবহার করছেন। আবার অনেকে শুধু দিনের বেলায় অথবা একজন সঙ্গীকে নিয়ে যাতায়াত করেন। ম্যানহাটানের এক ফার্নিচার স্টোরে রাতের শিফটে কাজ করতেন স্টেফানি এনজি। তিনি তার চাকুরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন, কারণ তিনি রাতের বেলায় ট্রেনে বাড়ি ফিরতে সাচ্ছন্দ অনুভব করেন না। তিনি বলেন যে নারী হিসেবে তাকে প্রচুর সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়।

নারী যাত্রীদের সাবওয়ে ব্যবহারে অনীহা এমটিএ’র জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করেছে। করোনা মহামারীর আগে এমটিএ’র পরিচালন ব্যয়ের ৪০ শতাংশ রাজস্ব আয় হতো যাত্রী ভাড়া থেকে। যাত্রী সংখ্যায় ধস নামায় বর্তমানে পরিচালন ব্যয়ের মাত্র ২৩ শতাংশ আসছে যাত্রী ভাড়া থেকে। রিমোট কাজ করার সুবিধার কারণেও গণপরিবহনে যাত্রী সংখ্যা ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমসের এক রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত যাত্রী সংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়ে ৩৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

তবে নারী যাত্রী সংখ্যা আগের তুলনায় এখনো কম বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এমটিএ’র বিশ্লেষণ অনুযায়ী সাবওয়ের নারী যাত্রীর ফিরে আসা তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ শুধু নিউইয়র্কে নয়, বিশ্বব্যাপী প্রবণতা হচ্ছে গণপরিবহনের যাত্রীদের মধ্যে পুরুষের তুলনায় নারী যাত্রীর আধিক্য। এমটিএ লিঙ্গ অনুসারে যাত্রী সংখ্যার পৃথক কোনো পরিসংখ্যান না রাখলেও তারা দৃশ্যত নারী যাত্রী কম দেখতে পাচ্ছে এবং তারা গণপরিবহন ব্যবহার পুরোপুরি ত্যাগ করেছে কিনা সে সম্পর্কেও নিশ্চিত হতে পারছে না।