বাংলাদেশ ডেস্ক : | বৃহস্পতিবার, ০২ মার্চ ২০২৩
যুক্তরাষ্ট্রে নতুন বাড়ি বিক্রির সংখ্যা বাড়ছে। সর্বশেষ গত জানুয়ারিতে এক লাফে বাড়ি বিক্রি বেড়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। যা সর্বশেষ ১০ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এ তথ্য প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণনা ব্যুরো এবং ডিপার্টমেন্ট অব হাউজিং অ্যান্ড আরবান ডেভেলপমেন্ট। খবর আনাদোলু এজেন্সি। একক পরিবারের জন্য নির্মিত নতুন বাড়ি বিক্রির পরিমাণ ৭ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে গত মাসে ৬ লাখ ৭০ হাজার ইউনিটে পৌঁছেছে। বাণিজ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বরেও প্রত্যাশার চেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছিল। এর আগে ডিসেম্বরের জন্য ৬ লাখ ১৬ হাজার ইউনিট বিক্রির পূর্বাভাস দেয়া হলেও মাস শেষে তার পরিমাণ দাঁড়ায় ৬ লাখ ২৫ হাজার ইউনিট।
নতুন বাড়ি বিক্রির জন্য যখন দু পক্ষের মধ্যে চুক্তি হয়, তখন সেটিকেই এক ইউনিট হিসেবে গণ্য করা হয়। কত ইউনিট বাড়ি বিক্রি হচ্ছে তা একটি দেশের আবাসন খাতের ব্যবসার সূচক হিসেবেও কাজ করে। যুক্তরাষ্ট্রে অঞ্চলভিত্তিক হিসাবে দেখা গেছে, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে বাড়ি বিক্রির পরিমাণ বেড়েছে। তবে মধ্যপশ্চিম, উত্তর-পূর্ব এবং পশ্চিমাঞ্চলে কিছুটা কমেছে। রয়টার্সের অর্থনীতিবিদদের জরিপের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, একক পরিবারের বসবাসের মতো বাড়ি বিক্রির পরিমাণ ৬ লাখ ২০ হাজার ইউনিটে পৌঁছবে। তবে জানুয়ারির হিসাব তা ছাড়িয়ে গেছে। অবশ্য এ সময় বাড়ি বিক্রির সংখ্যা বাড়লেও দাম কমেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফেডারেল রিজার্ভের আগ্রাসী সুদের হার বৃদ্ধিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আবাসন খাত।
অর্থনীতি শ্লথ ছিল চতুর্থ প্রান্তিকে
বছরের শেষ তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ হারে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি দেশটির বাণিজ্য বিভাগের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়, যা আগের অনুমানকৃত ২ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির চেয়ে কম। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে বেশ কয়েক দফা সুদের হার বাড়ায় ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড)। তবে ফেডের ধারাবাহিক সুদের হার বৃদ্ধির ফলে যতটা ধারণা করা হয়েছিল, তার তুলনায় অর্থনীতিতে প্রভাবে মাত্রা অনেক বেশি হবে বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
এছাড়া অর্থনৈতিক অবস্থা নির্ণয়ের বিভিন্ন মাপদণ্ড যেমন চাকরির প্রতিবেদন কিংবা খুচরা বিক্রয়বিষয়ক তথ্যগুলো ইঙ্গিত করে যে উচ্চ সুদের হার বেঁধে দিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ফেডের চেষ্টা মূলত প্রবৃদ্ধির গতি কমিয়ে দিয়েছে। ফেড বরং এক্ষেত্রে অন্য উদ্যোগও নিতে পারত। চলতি মাসের শুরুতে সুদহার এক-চতুর্থাংশ পয়েন্ট বাড়িয়েছে ফেড। প্রায় এক বছরের মধ্যে যা এটির বেঞ্চমার্ক হারের সবচেয়ে কম বৃদ্ধি। তবে যারা মনে করছেন ভবিষ্যতে ফেডকে সুদহার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ধীর গতি অনুসরণ করতে হবে, তাদের জন্য এটি ভালো খবর বলে মনে হলেও প্রতিবেদনে মূল্যস্ফীতি বিষয়ক কিছু খারাপ খবরও ছিল।ব্যক্তিগত খরচ পরিমাপক সূচক অনুসারে (পিসিই) মূল্য সূচক তৃতীয় প্রান্তিকে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। প্রাথমিক প্রতিবেদনে এটি ৩ দশমিক ২ শতাংশ ধরা হয়েছিল। এছাড়া পিসিই ডিফ্লেটার প্রতিবেদন অনুসারে ভোক্তা ব্যয়ের পরিমাণ আগের ৩ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ হয়েছে।
প্রতিবেদনে সবচেয়ে বড় খবরটি ছিল মূল্যস্ফীতি নিয়ে। ফেড ঠিক যেমনটা ভেবেছিল তার চেয়ে এটা ছিল অনেকটা বেশি। পিএনসি প্রধান অর্থনীতিবিদ গাস ফাউচার বলেন, চতুর্থ প্রান্তিকে মূল্যস্ফীতি হার হ্রাসে ফেডের সুদহার সংশোধন নিকটবর্তী মেয়াদে এটিকে আরো বাড়িয়ে দেয়। এর মানে হচ্ছে, ২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধে উচ্চ হারের প্রভাব থেকে অর্থনীতিকে বাঁচাতে হবে। পিএনসির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, গত বছরের শুরু থেকে ফেডের সুদের হারে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ২০২৩ সালে দেশটিকে মন্দার দিকে ঠেলে দিতে পারে। তবে শ্রমবাজারের শক্তি, শক্তিশালী ভোক্তা ব্যালান্স শিট এবং একটি সুষম ভারসাম্যপূর্ণ হাউজিং বাজারের কারণে মন্দাটি হালকা হওয়া উচিত বলে মনে করেন ফাউচার।
তিনি আরো বলেন, ভোক্তা ব্যয় হ্রাস ও নিম্নমুখী রফতানির কারণে সামগ্রিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার কমেছে। তবে পিসিই মূল্যসূচক এবং ডিফ্লেটার উভয়ই আগের প্রান্তিকের তুলনায় ভালো অবস্থানে রয়েছে। পিসিই মূল্যসূচক গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে ৭ দশমিক ৫ শতাংশে পৌঁছে, যেখানে পিসিই ডিফ্লেটার দ্বিতীয় প্রান্তিকে হয় ৯ শতাংশ। তবে প্রতিবেদনগুলোতে তুলে ধরা হয়, এক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে ফেডের আক্রমণাত্মক সুদের হার। যদিও দেশটিতে বেকারত্ব বিমা দাবির পরিমাণ কমে এসেছে। প্রযুক্তি, মিডিয়া এবং বন্ধকী শিল্পের মতো কিছু সেক্টরে ছাঁটাই সত্ত্বেও মার্কিন শ্রমবাজার শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে।
Posted ৭:২৮ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০২ মার্চ ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh