নিউইয়র্ক : | বৃহস্পতিবার, ২২ জুন ২০২৩
যথাযথ গুরুত্ব সহকারে ওয়ার্ল্ড রিফিউজি ডে পালন করেছে ইন্টারফেইথ সেন্টার অফ ইউএসএ। গত ২০ জুন মঙ্গলবার জ্যামাইকায় দারুল উলুম মুসলিম সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠির শরণার্থীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেস এর প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন কমান্ডার, গ্লোবাল অ্যামব্যাসেডর ফর পিস ড. আবু জাফর মাহমুদ বলেছেন, পৃথিবীর ১০০ মিলিয়নের বেশি শরণার্থীর শান্তি ও নিরাপদে ঘরে ফেরার অনুকুল পথ তৈরির জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সবাই হাতে হাত ধরে মানুষকে মানুষের শেকড় থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া থেকে রক্ষা করতে হবে। প্রয়োজনে লড়াই সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
ইন্টারফেইথ সেন্টার অফ ইউএসএ’র প্রেসিডেন্ট ইমাম মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কো স্পন্সর ছিল নিউইয়র্ক স্টেট ২৪ এর অ্যাসেম্বিøম্যান ডেভিড আই ওয়েপরিন ও তৃণমূল সংগঠন ইউএনএ-ইউএসএ।
বক্তব্য রাখেন জুইশ সম্প্রদায়ের নেতা দি ব্রিজ এমসিপি’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট মার্ক মেয়ের অ্যাপেল, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি মাউন্ট সিনাই ওরশীপ সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী বিশপ লুবিন মোইজ, হিন্দু ধর্মীয় গুরু আনন্দ মর্গ ও ইয়োগা মেডিটেশনের প্রেসিডেন্ট আচার্য অভিরামানান্দ অভদূত, মুসলিম অন্টর্পনার এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আব্দুল রহমান, সমাজকর্মী মুহাম্মদ রকিবুল ইসলাম, এএইচআরআই এর প্রধান নির্বাহী ড. এনামুল হক প্রমুখ। উপস্থিত বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিনিধিরা তাদের প্রার্থনা রীতিনীতি পরিবেশন করেন। সে সঙ্গে তারা মানুষসৃষ্ট ও প্রাকৃতিক কারণে শরণার্থী পরিণত হওয়া পৃথিবীর ১০০ মিলিয়নের বেশি মানুষের বাস্তুভিটায় ফিরে যাওয়ার অনুকুল পথ তৈরিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আবু জাফর মাহমুদ বলেন, রিফিউজি ডে উপভোগের কোনো দিবস নয়, এটি বর্তমান পৃথিবীর এক কঠিন বাস্তবতার কথা মনে করিয়ে দেয়ার দিবস। প্রত্যেকের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত ও তৎপরতা গ্রহণের দিন। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বস্থানীয় এক যোদ্ধা হিসেবে আমি স্মরণ করি, ১৯৭১ এ আমিসহ আমার গোটা জাতি শরণার্থী ছিলাম। আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধে আমরা শরণার্থী হলেও অস্ত্র হাতে নিয়ে মোকাবিলা করেছি। গেরিলা যুদ্ধ করেছি। আমরা পূর্ব পাকিস্তান থেকে স্বাধীন ভূখন্ড সৃষ্টি করেছি। এই কারণে, আমরা শরণার্থীর যে যন্ত্রণা তা গভীরভাবে বুঝতে পারি। আমাদের দুঃখ কষ্ট ও নীপিড়নের বিষয়গুলো পৃথিবীর সকল জাতির শরণার্থীর সঙ্গে শেয়ার করতে চাই।
ড. মাহমুদ বলেন, গত এক দশকে গোটা পৃথিবীর শরণার্থী সংকট বেড়ে চলেছে। আফগানিস্তান, কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া, ইউক্রেন, ভেনিজুয়েলাসহ পৃথিবীর দেশে দেশে শরণার্থীরা কঠিন মানবেতর জীবনযাপন করছে। অত্যাচার নীপিড়নের বাইরেও জলবায়ু পরিবর্তনের করুণ পরিণতি হিসেবে শরণার্থী হতে হচ্ছে বহু মানুষকে। সেখানে ক্ষুধা ও দারিদ্রের অভিঘাতে জর্জরিত হতে হচ্ছে নারী পুরুষ শিশুদেরকে।
এই পরিস্থিতির ভেতরে বিশ্ব মানবতার স্বার্থেই আমাদেরকে নতুন পথ তৈরি করতে হবে। শরণার্থীদের জন্য অন্তত. নিজের অন্তরের দরজা খুলে দিতে হবে। নিজের হাত প্রসারিত করতে হবে। অনুষ্ঠানে বক্তারা সবার ভয়েসকে মানবতার পক্ষে একাত্ম করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে অতিথি পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেস এর প্রেসিডেন্ট আবু জাফর মাহমুদসহ উপস্থিত বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দকে নিউইয়র্ক স্টেট এর অ্যাসেম্বিøম্যান ডেভিড আই ওয়েপরিনের পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। উপস্থিত শরণার্থীদেরদের মাঝে আবু জাফর মাহমুদ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বিশেষ সহায়তা প্রদান করেন আবু জাফর মাহমুদ।
Posted ৩:৫১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২২ জুন ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh