ভ্যালেনটাইন’স ডে বা ভালোবাসা দিবস ১৪ ফেব্রুয়ারি রোববার। প্রেমের উৎসবের দিন। প্রেম কোন দিন বা ক্ষণ নির্ভর না হলেও কোন উপলক্ষেকে কেন্দ্র করে তারুণ্যের উচচ্ছ্বাস এক স্বাভাবিক প্রবণতা এবং ভ্যালেনটাইন’স ডে’ও এর ব্যতিক্রম নয়। দিবসটির উৎস বা সূচনা ইউরোপে হলেও কালের বিবর্তনে ও যোগাযোগ ব্যবস্থার গতির কল্যাণে সাগর, মহাসাগরের ব্যবধান ঘুঁচিয়ে এ ধরণের একটি দিবস বাংলাদেশের তরুণদের কাছে বরণীয় হয়ে উঠেছে এবং যারা দেশ ছেড়ে পরবাসী হয়েছেন, তারাও এ উপলক্ষকে আপন করে নিয়েছেন। ভ্যালেনটাইন ডে যেহেতু বাংলাদেশের বসন্তকালের শুভ লগ্নে, সেজন্য দিবসটির উচ্ছ্বাসে নতুন মাত্রা যোগ হয়। প্রায় দুই দশক ধরে বাংলাদেশে তরুণ তরুণীরা ঘটা করে দিবসটি পালন করে আসছে। তবে ভ্যালেনটাইন ডে বা ভালোবাসা দিবস শুধু তরুণদের প্রেমের বা ভাব বিনিময়ের দিন হিসেবে উদযাপনের পাশাপাশি অন্যান্য প্রিয়মানুষ–বাবা মা, ভাইবোনও যুক্ত হচ্ছেন, এটি একটি শুভ দিক।

উল্লেখ্য, পাশ্চাত্যে ষোড়শ শতাব্দী থেকেই ভ্যালেন্টাইন ডে উদযাপিত হয়ে আসছে। এখন এটি বিরাট উৎসবের রূপ নিয়েছ এবং ভ্যালেনটাইন ডে’কে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের পরিমাণও কম নয়। ইতিহাসে দেখা যায়, প্রাচীন দুটি রোমান কাহিনী থেকে দিবসটির সূত্রত্রপাত। এক পাদ্রি ও চিকিৎসক ফাদার সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের নামানুসারে দিনটির নামকরণ হয়েছে ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’। যুদ্ধে আহত সৈনিকদের চিকিৎসার অপরাধে রোমান সম্রাট গথিকাস ২৭০ খৃস্টাব্দে ১৪ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুদণ্ড দেন সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে। মৃত্যুর আগে ফাদার ভ্যালেন্টাইন তার আদরের একমাত্র মেয়েকে একটি ছোট্ট চিঠি লিখে রেখে যান। চিঠির ওপর লেখেন ‘ফ্রম ইওর ভ্যালেন্টাইন’।

সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের মেয়ে এবং তার প্রেমিক মিলে পরের বছর থেকে বাবার মৃত্যুর দিনটিকে ভ্যালেন্টাইন ডে হিসেবে পালন করা শুরু করেন। অপর কাহিনীটি হলো, রোমের চিকিৎসক তরুণ যাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের চিকিৎসায় দৃষ্টি ফিরে পেয়েছিল নগর জেলারের দুহিতা। সেই থেকে জন্ম নিয়েছিল তাদের ভালবাসার অমরগাঁথা। ভালবাসার অপরাধে তাকে ফাঁসিতে ঝুলতে হয় ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখে। অত:পর এই ভালবাসার স্বীকৃতি পেতে দুই শতাব্দী নীরবে-নিভৃতে পালন করতে হয়েছে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে। ৪৯৬ খ্রীষ্টাব্দে রোমের রাজা পপ জেলুসিয়াস এই দিনটিকে ভ্যালেন্টাইন দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। গ্রীক ও রোমান উপকথার মতই ভালবাসা দিবসের উৎপত্তি নিয়ে আরো গল্প-কাহিনী ছড়িয়ে আছে।