বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ০৬ এপ্রিল ২০২৩
গত মঙ্গলবার নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামসের ঘোষিত প্রস্তাবিত বাজেট পুলিশ ডিপার্টমেন্ট, পাবলিক স্কুল এবং কিউনি’সহ অনেক খাতে বরাদ্দ হ্রাসের ফলে সিটির গুরুত্বপূর্ণ সার্ভিসগুলো ব্যাহত হয়ে জনজীবনে দুর্ভোগ বৃদ্ধি করবে বলে আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে।
মেয়রের বাজেট ডাইরেক্টর জ্যাক জিহা বলেছেন যে, উদ্ভুত জটিল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই নতুন বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। তার পক্ষ থেকে সিটির প্রায় প্রতিটি এজেন্সি প্রধানের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই বার্তা তুলে ধরা হয়েছে। আগামী জুলাই মাস থেকে নতুন অর্থবছরের বাজেট কার্যকর হবে। নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের বাজেট হ্রাস করা হয়েছে ৪ শতাংশ এবং সবচেয়ে বড় বিভাগ ডিপার্টমেন্ট অফ এডুকেশন ও সিটি ইউনিভার্সিটি অফ নিউইয়র্ক (কিউনি) এর বাজেট কমানো হয়েছে ৩ শতাংশ।
এজেন্সি প্রধানদের ১০ দিনের মধ্যে তাদের মতামত জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে হ্রাসকৃত বরাদ্দে তারা কীভাবে কার্যকরভাবে নিজ নিজ বিভাগে আর্থিক শৃঙ্খলা বিধান করবেন, তা যাতে বিস্তারিতভাবে জানান। এজেন্সি প্রধানদের অনেকের কাছে পুরো বিষয় যাচাই বাছাই করে মতামত জানানোর জন্য ১০ দিন সময় অত্যন্ত কম। গত বছর মেয়র অ্যাডামসের বাজেটেও ব্যয় সংকোচন নীতি প্রাধান্য পেয়েছিল, কিন্তু জ্যাক জিহার এবারের চিঠিতে সার্ভিস কাট করার ইঙ্গিত অনেক স্পষ্ট। তিনি বলেছেন যে প্রতিটি এজেন্সিকে এমনভাবে কাজ করতে হবে, যাতে সার্ভিসের ওপর যথাসম্ভব কম প্রভাব পড়ে।
করোনা মহামারীজনিত সিটির অর্থনীতিতে যে আঘাত এসেছিল তা এখনো কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়নি। অনেক সার্ভিস এখন পর্যন্ত পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরে আসতে পারেনি। এর মধ্যে রয়েছে সিটি সাবওয়ে ও বাস সার্ভিস, যেগুলোর পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে মেট্টোপলিটান ট্রানজিট অথরিটি- এমটিএ। গণপরিবহনের সবচেয়ে জনপ্রিয় সিটি সাবওয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় সাবওয়ের যাত্রী সংখ্যা বিপুল হৃাস পেয়েছে এবং মেয়র অ্যাডামস নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও এখন পর্যন্ত সাবওয়ের যাত্রী সংখ্যা করোনা পূর্ববর্তী অবস্থায় পৌছা তো দূরের কথা, আগের তুলনায় ৬০ শতাংশ যাত্রীও সাবওয়ে ব্যবহার করছে না।
ফলে এমটিএ’র কর্মী সংখ্যা কমানোর পরও সাবওয়ে ভর্তুকি দিয়ে চলছে। মেয়রের মুখপাত্র জোনাহ অ্যালোন বলেছেন, মেয়র অ্যাডামস বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে আমরা যে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীণ হয়েছি, সে বাস্তবতাকে আমরা এড়িয়ে চলতে পারি না। ভবিষ্যতে প্রয়োজন পড়লে প্রস্তাবিত বাজেট আরো সংকুচিত হতে পারে।
তিনি আরো বলেন টেক্সাস সীমান্ত থেকে নিউইয়র্কে পাঠিয়ে দেওয়া ইমিগ্রান্টদের চাপ সহ্য করা সিটির পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাদের সহায়তায় আমরা ইতোমধ্যে ৪০ মিলিয়ন ডলার শুধু আবাসনের জন্য ব্যয় করেছি। তাদের মানবিক সাহায্য দিতে আগামী বছরের মধ্যে ৪.৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হতে পারে, যা ফেডারেল সহায়তা ছাড়া সামাল দেওয়া অসম্ভব এক ব্যাপার।
কিন্তু মেয়রের আহবান সত্বেও ফেডারেল সরকার সহায়তার হাত বাড়িয়ে না দেওয়ায় ইমিগ্রান্টদের পেছনে নিউইয়র্কারদের ট্যাক্সের অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। তাছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনিবার্য কারণে ট্যাক্স খাতে আয় হ্রাস পেয়েছে। অ্যলোন বলেন, এই বাস্তবতাগুলোকে অগ্রাহ্য করা দায়িত্বহীনতার কাজ হবে, যার খেসারত দেবে নিউইয়র্কাররা। উল্লেখ্য, সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস গত ৪ এপ্রিল নতুন বছরের জন্য ১০২.৭ বিলিয়ন ডলারের বাজেট প্রস্তাব করেছেন। বাজেটে সংরক্ষিত তহবিল রাখা হয়েছে ৮.৩ বিলিয়ন ডলার। সকলেই সন্দিহান যে মেয়র অ্যাডামস এটিকে ভারসাম্যপূর্ণ বাজেট হিসেবে বর্ণনা করলেও সিটির অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে আদৌ ইতিবাচক কোনো ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে কিনা।
Posted ২:৫৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৬ এপ্রিল ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh