বন্দুকযুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের নিয়মিত ঘটনা। কিন্তু তা এখন দেখা যাচ্ছে প্রতিবেশী কানাডাতেও। ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় আগ্নেয়াস্ত্র পাচার হওয়া সহজসাধ্য হওয়ায় বেড়েছে এই সহিংসতা। এই সংকটজনক পরিস্থিতিতে কানাডার রাজধানী অটোয়ায় ঘটল বন্দুক হামলার ঘটনা।

গত ২ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে এ বন্দুক হামলা হয়। এতে দুজন নিহত ও ছয়জন আহত হন। ওই ভেন্যুতে দুটি বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। হঠাৎ গোলাগুলির শব্দ শুনে অতিথিরা দৌড়ে নিরাপদ আশ্রয় খোঁজারও চেষ্টা করেন বলে জানায় র্কর্তৃপক্ষ। পুলিশ বলেছে, ‘গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। তাদের একজনের বয়স ২৬, আরেকজনের ২৯। তারা টরন্টো থেকে এসেছিলেন। এ ছাড়া আহত ছয়জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকও রয়েছেন।’ বার্তা সংস্থা এএফপিতে বলছে, কানাডায় ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত বন্দুক সহিংসতা ৮১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগে গত ২৩ আগস্ট সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের একটি প্রতিবেদনে উঠে আসে কানাডার বন্দুক সহিংসতার ভয়ংকর চিত্র ও নেপথ্য কারণ। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়, কানাডায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা বন্দুকের প্রাপ্যতা বেড়ে যাওয়ায় এ রকম ঘটনা ঘটতে দেখা যাচ্ছে।

ব্লুমবার্গের অনুসন্ধানী সাংবাদিক ডেভিড কোচিনেক্সি, নাটালি ওবিকো এবং এরিক ফ্যানের লেখা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগের তুলনায় কানাডায় ৮৬৯ শতাংশ বন্দুক সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, কানাডার আইন প্রয়োগকারীরা সব সময় আগ্নেয়াস্ত্র আমদানিকে ছোট করে দেখেছেন। আবার তারা অস্ত্র আমদানিকে বৈধও বলেছেন। কারণ, কানাডার অস্ত্র উৎপাদন খুবই কম। এ ছাড়া বর্তমানে কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের ছোট অস্ত্রের সবচেয়ে বড় বৈদেশিক ক্রেতা।

আগের তুলনায় কানাডায় বন্দুকের চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। গত দুই দশকে কানাডায় যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র আমদানির পরিমাণ প্রায় ১০ গুণ বেড়েছে বলেও জানিয়েছেন এই সাংবাদিকরা। অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কানাডায় আগ্নেয়াস্ত্রের এই জোয়ারে ভূমিকা রাখছে দেশটিতে সক্রিয় যুক্তরাষ্ট্রের ‘গান লবি’ বা বন্দুক বিক্রয়কারী গোষ্ঠীর নিয়োজিত এজেন্টরা। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বন্দুক সংস্কৃতিকে সমর্থন দেওয়া মানসিকতার মানুষদের মতো একটা বড় গোষ্ঠী আছে কানাডাতেও।