বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩
গতবছরের মে মাস থেকে টেক্সাস সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশকারী ইমিগ্রান্টদের টেক্সাসের গভর্নর একতরফাভাবে বাসযোগে নিউইয়র্কে পাঠিয়ে দেওয়ার পর তাদের আবাসিক সংস্থানের জন্য ম্যানহাটানের প্রায় ১০০ মাঝারি মানের হোটেল, মাঝারি মানের মোটেল এবং কিছু অফিস ভবন ভাড়া করেছে সিটি কর্তৃপক্ষ। ইমিগ্রান্টদের আবাসিক সংস্থানের জন্যে সিটি কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ৪০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। ভাড়ার মেয়াদ শেষ হবে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে। এসব হোটেলে বর্তমানে প্রায় ৫০,০০০ ইমিগ্রান্ট বাস করছে।
ইতোমধ্যে সিটিতে আগত ইমিগ্রান্টদের জন্য আগামী দুই বছরে ৪ বিলিয়ন ডলারের অধিক ব্যয় হতে পারে বলে সিটি প্রশাসন আভাস দিয়েছে এবং এর ফলে সিটির অনেক সার্ভিস কাটছাঁট করার প্রয়োজন পড়বে বলে মেয়র এরিক অ্যাডামস নিউইয়র্কারদের সতর্ক করেছেন।
ইমিগ্রান্টরা সুখী, কারণ তারা কল্পনাও করতে পারেনি যে তাদেরকে নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষ এতটা সমাদরে রাখবে। ব্যস্ত নগরীতে তাদেরকে গাদাগাদি করে বাস করতে হচ্ছে না এবং এসাইলাম আবেদন করার সহযোগিতা লাভ থেকে সবধরনের সুবিধা পাচ্ছে, এটা তাদের জন্য বিরাট এক স্বস্তির ব্যাপার।
হোটেল-মোটেলগুলোর জন্যেও সুবিধা হয়েছে যে, করোনা মহামারী শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের মার্চ থেকে গত বছরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত হোটেলগুলো প্রায় শূন্য পড়ে ছিল। বিশেষ করে ২০২০ থেকে ২০২১ পর্যন্ত দুই বছর তারা কোনো ব্যবসাই করতে পারেনি। সরকার থেকে তাদেরকে প্রনোদনা দেওয়া হলেও তা তাদের নিয়মিত বার্ষিক আয়ের কাছাকাছি ছিল না বলে হোটেল ব্যবসায়ীদের সংগঠন সূত্রে জানা গেছে। অতএব ৫০ হাজার অতিথিকে স্থায়ীভাবে পাওয়া তাদের কাছে আশির্বাদতূল্য। তারা এখন লাভের অংক গুনছেন।
হোটেলগুলোকে ইমিগ্রান্টদের আবাসিক স্থানে রূপান্তরিত করার জন্য ৪০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যার মেয়াদ শেষ হবে আগামী মাসের (এপ্রিল) মাঝামাঝি সময়ে। মিডটাউনের বেশ কিছু হোটেল আছে, যেগুলোতে সম্পূর্ণভাবে ইমিগ্রান্ট পরিবারগুলোই বাস করছে। এসব হোটেলে ইমিগ্রান্টদের সেবা দেওয়ার কাজে নিয়োজিত রয়েছে বেশকিছু ননপ্রফিট সংগঠন, যারা সিটির ডিপার্টমেন্ট অফ হোমলেস সার্ভিসেস এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ।
মিডটাউনে যে হোটেলগুলো নতুন করে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে, সেগুলো সরাসরি পরিচালনা করছে সিটির পাবলিক হেলথ এর সঙ্গে জড়িত নিউইয়র্ক সিটি হেলথ এন্ড হসপিটালস এবং তাদেরকে সহায়তা করছে সিটির ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট অফিসসহ অন্যান্য এজেন্সি। অতি অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল সংখ্যক উদ্বাস্তুর সকল প্রয়োজন পূরণ করার যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছে সিটির হিউম্যানিটারিয়ান ইমার্জেন্সি রেসপন্স এন্ড রিলিফ সেন্টারস। যারা মানবিক সাহায্যের প্রয়োজনে আসে তাদের সাধারণভাবে যে ধরনের আশ্রয়ে রাখা হয়, হোটেলে রাখা তার চেয়ে অনেক বেশি ব্যয়বহুল।
তবে ইতোমধ্যে সাতটি আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে এবং আরো দুটি আগামী সপ্তাহেই চালু হবে, যেখানে ব্রুকলিন ক্রুজ টার্মিনালে আশ্রিত ইমিগ্রান্টদের স্থান দেওয়া হবে বলে নিউইয়র্ক টাইমসের এক খবরে বলা হয়েছে। নতুন আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসা সুবিধাসহ ইমিগ্রন্টদের পরামর্শ দান এবং তারা অন্য কোনো গন্তব্যে যেতে চাইলে তাদেরকে সেসব পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ব্রুকলিনের ওয়াটার ফ্রন্টে অবস্থিত ব্রুকলিন ক্রুজ টার্মিনালের জন্য সিটি ভাড়া গুনেছে ৩.২ মিলিয়ন ডলার।
নতুন প্রতিটি আশ্রয় কেন্দ্রের মাসিক গড় ভাড়া দিতে হবে ৩ লাখ ৬০ হাজার ডলার করে। হোটেলের ব্যয় এর চেয়ে অনেক বেশি। ইমিগ্রান্টদের থাকার জন্য ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনের পাশেই ৬১১ রুমবিশিষ্ট স্টুয়ার্ট হোটেল ভাড়া করেছে সিটি কর্তৃপক্ষ। এই হোটেলে একটি রুমের প্রতি রাতের ভাড়া ২০০ ডলার এবং সেই হিসেবে সিটিকে একটি হোটেলের জন্য মাসিক পরিশোধ করতে হচ্ছে ৩.৬ মিলিয়ন ডলার। এর বাইরে বিভিন্ন ফুড ভেন্ডরের জন্য চুক্তি করা হয়েছে ইমিগ্রান্টদের খদ্য সরবরাহের জন্য এবং এজন্য মাথাপিছু দৈনিক ২৫ থেকে ৩৫ ডলার পর্যন্ত ব্যয় করতে হচ্ছে।
Posted ৩:১০ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh