স্পোর্টস ডেস্ক : | শুক্রবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
নেপালের বিপক্ষে জোড়া গোল করে বাংলাদেশকে দারুণ শুরু এনে দিয়েছিলেন। এরপর ভারতের বিপক্ষে করেন জয়সূচক গোল। ঠাকুরগাঁওয়ে মেয়ে সাগরিকাকে নিয়ে তখনই শুরু হয়ে গিয়েছিল আলোচনা। সেই তিনিই ফাইনালে যোগ করা সময়ে গোল করে ভারতকে জিততে দেননি। পরে সেই ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ায়। আর পরের গল্পটা তো সবারই জানা। লঙ্কান ম্যাচ কমিশনারের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত দারুণ একটা আসরের সমাপ্তিটা হয়েছে কলঙ্কমাখা। সাফ অবশ্য দু’দলকেই চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করে চেয়েছে সব কূল রক্ষা করতে। ম্যাচ কমিশনার নাটকে অবশ্য ম্লান হয়নি সাগরিকা কীর্তি। বাংলাদেশের এই সাফল্য যে পুরোটাই সাগরিকা মোড়ানো।
অথচ একটা সময় সাগরিকার ফুটবল খেলাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। মেয়ে মাঠে বল নিয়ে দৌঁড়ে বেড়াবে, এটা মেনেই নিতে পারেননি চা বিক্রেতা বাবা লিটন আলী। এলাকার মানুষও নিন্দে-মন্দ করেছে অনেক। পরে অবশ্য মেয়ের খেলায় সায় দেন। আর এই আসরে মেয়ের কারণেই লিটন হয়েছেন ভাইরাল।
রে টিভি নেই বলে মেয়ের প্রথম খেলা দেখেছিলেন এক আত্মীয়ের কাছ থেকে টিভি ধার করে এনে। আর্থিক স্বচ্ছ্বলতা না থাকায় এটা করতে বাধ্য হন বাবা লিটন আলী ও মা আরজু বেগম। সংবাদ মাধ্যমে বিষয়টি চাউর হলে ওয়ালটন গ্রুপ বৃহস্পতিবার ম্যাচ শুরুর কয়েক ঘন্টা আগে ঘটা করে লিটন ও আরজুর হাতে তুলে দেয় একটি স্মার্ট টিভি। ঠাকুরগাঁওয়ের রাঙাটুঙ্গি থেকে এসে কাল বিকেলে হাজির হন স্টেডিয়ামে সরাসরি মেয়ের খেলা দেখবেন বলে। অথচ ব্যাপারটি জানতেন না সাগরিকা। ম্যাচের আগে যখন জানলেন তার বাবা-মা মাঠে এসেছেন, সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যান তাদের কাছে।
ম্যাচ শেষে সাগরিকা বলেন, ‘জানতাম না বাবা-মা আসবে। ম্যাচের আগে একজন এসে যখন বললো আমার বাবা-মা এসেছেন, সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ে তাদের কাছে যাই। খুব ভালো লেগেছে বাবা-মা এতদূর থেকে এসেছেন আমার খেলা দেখতে।’
বাবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সাগরিকা আরও বলেন, ‘আমার বাবা প্রথমে আমাকে খেলতে দিতে চাননি। পরে উনি রাজি হয়েছেন, সমর্থন দিয়েছেন। আমি বাবাকে বলেছিলাম যে একদিন তোমাকে বড় খেলোয়াড় হয়ে দেখাবো। বাবা-মায়ের সামনে খেলেছি। দেখিয়ে দিয়েছি যে আমি পারি।’
এলাকাবাসীর প্রতিও এখন কোন অভিযোগ নেই সাগরিকার। তারা যে তার খেলা বড় স্ক্রিনে দেখেছে দারুণ আয়োজন করে, ‘অনেক ভালো লাগছে, যারা আগে আমার খেলা নিয়ে খারাপ কথা বলতো, তারাই এখন আমাকে সমর্থন করছে।’
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে গোল করে বাংলাদেশের শিরোপা স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার প্রতিক্রিয়া সাগরিকা বলেন, ‘প্রথমে খুব খারাপ লাগছিল গোল দিতে পারিনি। ওরাও খেলেছে, আমরাও খেলছি। ওরা গোল করে ফেলেছে। আমরা পারিনি। পরে গোল করেছি। খুব ভালো লাগছে।’ এখন তিনি স্বপ্ন দেখেন জাতীয় দলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার, ‘জাতীয় দলে অনেক বড় বড় আপু আছেন। তারাও আমার চেয়ে অনেক ভালো খেলেন। তবে আমার চেষ্টা থাকবে সেরাটা দিয়ে জাতীয় দলে সুযোগ করে নেওয়ার।’
Posted ৫:১০ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh