বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই ২০২১
নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষে যে কোনো বিভাগে কর্মরত কোনো ব্যক্তি যদি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন গ্রহণ না করেন তাহলে তাকে প্রতি সপ্তাহে একবার করোনা টেস্ট করতে হবে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে এ নির্দেশ কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে। সিটির পাবলিক স্কুলের সকল শিক্ষক এবং এনওয়াইপিডির সকল পুলিশ সদস্য এই নির্দেশের আওতায় গন্য হবেন। গত সোমবার সিটি মেয় বিল ডি ব্লাজিও এ সংক্রান্ত একটি ঘোষণা করেছেন। নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত জনশক্তির সংখ্যা প্রায় তিন লাখ চল্লিশ হাজার। ভ্যাকসিন নেয়া যেহেতু বাধ্যতামূলক নয়, সেজন্য কোনো কর্মীকে ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে বাধ্য করার সুযোগ নেই। তবে কারো যদি করোনা পজেটিভ থাকে, সেক্ষেত্রে অন্য কর্মী বা সিটির কোনো বাসিন্দাকে যাতে তিনি সংক্রমিত করতে না পারেন, সেজন্য কর্তৃপক্ষ ভ্যাকসিন না নেয়া কর্মীদের সপ্তাহে একবার করোনা টেস্ট করানোর মাধ্যমে সিটির স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিল ব্লাজিও বলেছেন, এটি আমাদের করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত না হওয়ার নিশ্চয়তার জন্য জরুরী। সিটির স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য এটি প্রয়োজন, যাতে আমরা সকলকে নিরাপদে রাখতে পারি। কিন্তু সিটি কর্মীদের প্রতিনিধিত্বকারী কয়েকটি ইউনিয়ন মেয়র ব্লাজিও’র এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলেছে যে, ইউনিয়নগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করে সিটি এ ধরনের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে না। সিটির প্রায় এক লাখ কর্মীর প্রতিনিধিত্বকারী ইউনিয়ন ডিষ্ট্রিক্ট কাউন্সিল ৩৭ (এএফএসসিএমই ৩৭) এর এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর হেনরি গ্যারিডো বলেছেন, নিউ ইয়র্ক সিটি একটি ইউনিয়ন সিটি এবং এটিকে অগ্রাহ্য করা যেতে পারে না।
বিল ডি ব্লাজিও’র ঘোষণার কয়েক ঘন্টা পর ক্যালিফোর্নিয়ার কর্মকর্তারা স্টেটের কর্মচারি ও সকল হেলথকেয়ার কর্মীদের ক্ষেত্রে একই ধরনের পন্থা অবলম্বনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে তাদেরকে কোভিড ১৯ ভ্যাকসিনেশন অথবা সাপ্তাহিক টেস্টেও ফলাফল প্রদর্শন করতে হবে। নিউইয়র্ক স্টেটের কর্মীদের জন্য একই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা এ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে স্টেট গভর্নর এন্ড্রু ক্যুমো অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। সিটির ব্রঙ্কসে ইয়াঙ্কি স্টেডিয়ামে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ক্যুমো জনগণের সঙ্গে কাজ করতে হয় এমন সরকারি কর্মীদের ভ্যাকসিন নেয়ার বিষয় বিবেচনা করতে বলেছেন।
সামার ভ্যাকেশন শেষ হওয়ার পর আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক স্কুলগুলো খুলবে এবং পূর্ণোদ্যমে ক্লাস শুরু হবে বলে মেয়র জানিয়েছে। এর আগেই সিটির হেলথ কেয়ার কর্মী ও স্কুলের শিক্ষক ও সহায়ক কর্মীদের ভ্যাকসিন নেয়া সম্পন্ন করার উপর গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন যে, ভ্যাকসিন না নিলে প্রতি সপ্তাহে করোনা ভাইরাসের টেস্ট করাতে হবে। করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে অধিক সংক্রামক ডেল্টা ভেরিয়েন্টের মাধ্যমে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সিটিতে ভাইরাসে আক্রান্তের হার বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জুন মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে সিটিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দৈনিক গড়ে ৩০০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। বিল ব্লাজিও বেসরকারি খাতের কর্মীদেরও ভ্যাকসিন গ্রহণ অথবা সাপ্তাহিক করোনা ভাইরাস টেস্টেও প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সিটির প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের ৬৫ শতাংশ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। গত এপ্রিল মাসে দৈনিক সর্বোচ্চ এক লাখ লোকের দুই ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে এবং বর্তমানে তা ১৮ হাজারের নিচে নেমে এসেছে। যারা এখন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে তাদের প্রতি দশজনের মধ্যে সাত জনই ডেল্টা ভেরিয়েন্টে সংক্রামিত বলে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বিল ডি ব্লাজিও বলেছেন যে, কর্মক্ষেত্রে সকলের মাস্ক পরিধানের আবশ্যকতা নেই। তবে ট্রেন, সাবওয়ে ও বাসের মত গণপরিবহনে মাস্ক পরিধানের বাধ্যবাধকতা বহাল থাকবে। সিটির যেসব কর্মী ভ্যাকসিন নেননি তাদেরকে কর্মক্ষেত্রে সবসময় মাস্ক পরতে হবে। ভ্যাকসিন নেয়নি, সিটির এমন কর্মীরা যদি কর্মক্ষেত্রে মাস্ক পরতে অস্বীকার করেন, সে পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবেলা করা হবে প্রশ্ন করা হলে সিটি লেবার রিলেশনস কমিশনার রেনি ক্যাম্পিয়ন বলেছেন, ভ্যাকসিন না নেয়া কর্মীরা যদি মাস্ক পরিধান না করতে চান তাহলে তারা কাজে যোগ দিতে পারবেন না এবং তাদেরকে বেতনও দেয়া হবে না।
Posted ৮:৩৯ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh