বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৩
নিউইয়র্ক সিটিতে কোনো কিছু হিসেবে বাইরে নেই। কুকুর, বিড়ালের সংখ্যা জানার বিধিবদ্ধ উপায় আছে। কুকুর বিড়াল পোষার জন্য সিটির সংশ্লিষ্ট বিভাগে রেজিষ্ট্রেশন করাতে হয় সুনির্দিষ্ট পরিমাণে ফি দিয়ে। ‘সিটি ইকোনমিক ডেভলেপমেন্ট কর্পোরেশন” এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে সিটিতে কুকুর সংখ্যা ৫ লাখ এবং বিড়াল সংখ্যা ৬ লাখ। যেসব প্রাণী সাধারণত পোষা হয় না। ক্ষতিকর হিসেবে বিবেচিত এবং বংশবৃদ্ধির হার অবিশ্বাস্য, সে ধরনের প্রাণীর মধ্যে গন্য ইঁদুরের সংখ্যাও জানে সিটি কর্তৃপক্ষ।
সিটির “রডেন্ট মিটিগেশন ডিপার্টমেন্ট” এর হিসেবে নিউইয়র্ক সিটিতে বর্তমানে ৩২ লাখের অধিক ইঁদুর বসবাস করে। ইঁদুরের অত্যাচার থেকে নগরবাসীকে উদ্ধার করার জন্যে সিটি রডেন্ট মিটিগেশন ডাইরেক্টর হিসেবে বার্ষিক ১৫৫,০০০ ডলারে নিয়োগ লাভ করেছেন সাবেক স্কুল শিক্ষিকা ক্যাথলিন কোরাডি। ইঁদুর দমনে তিনি তোড়জোর শুরু করতেই পত্রপত্রিকায় নানা মন্তব্য আসতে শুরু করেছে। শহুরে ইঁদুর বিশেষজ্ঞ মাইকেল পারসন্স ‘ইনসাইডার’ ম্যাগাজিনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ক্যাথলিন কোরাডিকে “র্যাট জার” সম্বোধন করে বলেছেন, “ইঁদুর দমনে সফল হতে হলে তাকে পর্বতসম বাধার মুখে পড়তে হবে। তাকে উপলব্ধি করতে হবে যে ইঁদুর কোনো দুশমন নয়। সিটির আসল ইঁদুর হচ্ছে সিটির “আমলাতন্ত্রে কর্মরত পুরুষ ও নারী আমলারা। তারা ইঁদুরের চেয়ে অধিক সর্বণাশ করেন।” এ বিতর্ক প্রাচীন এবং অনাদিকাল পর্যন্ত চলতে থাকবে।
তবে সিটিতে গত ৬৫ বছরে ইঁদুরের সংখ্যা বেড়ে ৮০০ গুণ। বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে মানুষের বাড়িঘরে, সাবওয়ে স্টেশনে, ওয়্যারহাউজে, দোকানপাটে, অফিসে, কারখানায়, নালা নর্দমায় বসবাসকারী ইঁদুরের সংখ্যা বেড়েছে ব্যতিক্রমী গতিতে। আটলান্টিক ম্যাগাজিনের রিপোর্ট অনুযায়ী ১৯৫০ সালে নিউইয়র্ক সিটিতে আনুমানিক ২৫০,০০০ ইঁদুর ছিল, ২০১৪ সালে এসে ইঁদুরের সংখ্যা দাঁড়ায় আনুমানিক ২০ লাখ। বিভিন্ন সময়ে ইঁদর দমন, নির্মূল ও নিধন কর্মসূচি কার্যকর করেও এখন তা ৩২ লাখে দাঁড়িয়েছে।
এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, সিটি ময়লা আবর্জনা অপসারণ ও প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কি করছে তার ওপর ইঁদুরের দ্রুত বংশবৃদ্ধি আংশিকভাবে হলেও নির্ভর করে। রাজনীতিবিদরা নির্বাচিত হলে ইঁদুর ধ্বংস করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু কারো পক্ষে তা সম্ভব হয়নি।
কোরাডি ইঁদুর দমন বিভাগের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ লাভের পর তার মা নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন যে, তার কন্যার প্রাণী সচেতনতা শুরু হয়েছিল যখন তার বয়স ছিল মাত্র দশ বছর। লং আইল্যান্ডে রাস্তার পাশে একটি রক্তাক্ত মৃত ইঁদুর পড়ে থাকতে দেখে তিনি সিটির কাছে পিটিশন করেন, ইঁদুর নিধন রক্তাক্ত হওয়া সঙ্গত নয়। পরিচালক হিসেবে নিয়োগ লাভের পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে কোরাডি বলেন যে ইঁদুর দমনে তিনি ‘রক্তপিপাসু’ হবেন না। তিনি বলেন, ইঁদুর দমনের সঙ্গে জীবনযাত্রার মানের চেয়েও বড় বিষয়গুলো জড়িত, যার মধ্যে আসে স্যানিটেশন, স্বাস্থ্য, হাউজিং, অর্থনৈতিক সাম্য। তিনি ইঁদুর কমানো ব্যাপারে বদ্ধপরিকর।
Posted ২:৫৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh