বুধবার, ১৫ মে ২০২৪ | ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

হেনরি কিসিঞ্জার চীনের কেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু ছিলেন?

বাংলাদেশ অনলাইন :   |   রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩

হেনরি কিসিঞ্জার চীনের কেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু ছিলেন?

হেনরি কিসিঞ্জারের সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি (ডানে)

সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের মৃত্যুর ঘটনায় প্রশংসা আর স্মৃতিচারণে ভাসছে চীন, যদিও দেশ দুটির মধ্যে এখন পরস্পরবিরোধী সম্পর্ক বিরাজ করছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আপনি সবসময় চীনের জনগণের বন্ধু, শান্তিতে ঘুমান,’ এটি চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েবুতে সবচেয়ে বেশি লাইক পাওয়া কমেন্ট। কিসিঞ্জারের মৃত্যুর খবরটি আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এ সম্পর্কিত হ্যাশট্যাগ সবচেয়ে বেশি সার্চ হয় চীনে যা লাখ লাখ মানুষ দেখেছে। এ ছাড়া শীর্ষ লাইক পাওয়া কমেন্টগুলোর একটি হচ্ছে, এটি একটি যুগের অবসান। আরেকজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘তিনি কয়েক দশকের উত্থান পতনের সাক্ষী।’ এখনকার চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়ে তিনি কি ভাবতেন, আরেকজন মন্তব্য করেন।

কিসিঞ্জারের চেষ্টায় ১৯৭৯ সালে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে আলোচনা শুরুর আগে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। যদিও সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়েছিল প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের সময়ে। তবে তার আগে রিচার্ড নিক্সন ছিলেন প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি ১৯৭২ সালে বেইজিংয়ে তার ঐতিহাসিক সফরে গিয়ে মাও জেদং এর সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এটি কয়েক দশকের উত্তেজনার অবসান ঘটায়।


স্নায়ুযুদ্ধের সময়কালে কিসিঞ্জার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির আলাদা একটি বৈশিষ্ট্য দাঁড় করান। আর এটিই পশ্চিমের সঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে চীনের সিদ্ধান্ত নেওয়াকে প্রভাবিত করে। ১৯৭১ সালে তিনি নিজেই বেইজিং যান নিক্সনের বৈঠকের ব্যবস্থা করতে।

চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিসিঞ্জারকে নিয়ে যেসব কমেন্ট এসেছে তার বেশিরভাগেই তাকে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক সুন্দর করার সময় থেকে একজন পুরনো ও বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবেই সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে।


ওই সময়টিতে আমেরিকা সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গেও আলোচনার চেষ্টা করছিল এবং আশা করছিল যে চীনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক উত্তেজনা কমাতে ভূমিকা রাখবে। ভিয়েতনাম যুদ্ধ তখনও চরম পর্যায়ে। কিসিঞ্জার একইসাথে শান্তি চুক্তির জন্য প্রশংসিত আবার দ্রুত যুদ্ধ শেষ না করার জন্য সমালোচিত।

তবে লাওস ও কম্বোডিয়ায় বোমাবর্ষণে ভূমিকার জন্য তাকে যুদ্ধাপরাধীও বলা হয়। লাখ লাখ বেসামরিক মানুষ তখন নিহত হয়েছিল। ভিয়েতনাম, লাওস ও কম্বোডিয়া অপছন্দনীয় হলেও যুক্তরাষ্ট্র-চীন সুসম্পর্কের সূচনার ক্ষেত্রে তার ভূমিকাই চীনে বড় করেই দেখা হয়।


চীনের মানুষের মধ্যে তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত আমেরিকান। দেশজুড়ে এখন ইতিহাসের ক্লাসেও তার নাম বলা হয় এবং অনেকেই তাকে দেখেন বন্ধুভাবাপন্ন পশ্চিমা হিসেবে। তার কয়েক দশকের ক্যারিয়ারে চীনের সঙ্গে কিসিঞ্জারের বিভিন্ন বিষয়ে যে সংশ্লিষ্টতা সেটিই তাকে মনে রাখার মতো কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম।

২০১১ সালে চীনা রাষ্ট্রায়ত্ত মিডিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতকারে কিসিঞ্জার বলেন, ‘চীন হলো সেই দেশ যার সঙ্গে আমার দীর্ঘ সময়ের এবং গভীর যোগাযোগ আছে। চীন আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়েছে।’

বিদেশি অল্প কয়েকজন নেতার মধ্যে তিনি একজন যিনি চীনা কমিউনিস্ট পার্টির পাঁচটি প্রজন্ম অর্থাৎ মাও থেকে শি জিনপিং এর সঙ্গে কাজ করেছেন। ওয়েবুতে এক পোস্টে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন সিসিটিভি তাকে উল্লেখ করেছে ‘লিভিং ফসিল’ হিসেবে যিনি দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিবর্তনের সাক্ষী হয়ে আছেন।

দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তার সমর্থন ছিল দারুণ শক্তিশালী। তিনি ১৯৮৯ সালে তিয়েনমান স্কোয়ারে ছাত্র বিক্ষোভে নৃশংস দমন অভিযানকে ‘অনিবার্য’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন।

১৯৮৯ সালে ওয়াশিংটন পোস্টে এক লেখায় তিনি লিখেছিলেন, এই নৃশংসতা ছিল দুঃখজনক।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতেও কিসিঞ্জারকে বারবার ডাকা হয়েছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা নিরসনে। তিনি এটা করে গেছেন সারা জীবন ধরেই- এমনকি যখন চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি ও আমেরিকার ক্ষমতার অন্যতম চ্যালেঞ্জার হয়ে গেছে তখনও।

তাকে সবসময়ই বেইজিংয়ে স্বাগত জানানো হয়েছে। কারণ তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক নিয়ে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে গেছেন। তিনি ১০০বারের বেশি চীন সফর করেছেন। অবসরের অনেক পরে তিনি শেষ সফর করেছেন গত জুলাইয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা বিরাজ করা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নিজে তাকে স্বাগত জানিয়েছেন।শি তাকে বলেছেন যে চীন কখনো ‘আমাদের পুরনো বন্ধুকে’ ভুলবে না। দেশটির শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই বলেছেন চীনা নীতির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দরকার ‘কিসিঞ্জার স্টাইল কূটনৈতিক প্রজ্ঞার’।

Posted ১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.