বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪
অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের কারণে গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্র মেক্সিকোর ৪৭,৬৫৯ জন নাগরিককে ডিপোর্ট করেছে। মেক্সিকোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রর ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাদের সীমান্ত প্রতিরক্ষা এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে ১৩,৩৯২ জন মেক্সিকানকে তিজুয়ানা, ৯,৫৩৪ জনকে ন্যূয়েভো লারেডো, ৮,৭৫৫ জনকে নোগোলাস এবং ৩,৫৭২ জনকে হুয়ারেজ সীমান্ত পথ দিয়ে মেক্সিকো পাঠিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ডিপোর্ট করা অধিকাংশ মেক্সিকান দারিদ্র পীড়িত এলাকাগুলোর বাসিন্দা, যেখানে প্রতি তিনজনের একজন দারিদ্রসীমার অনেক নিচে থাকে। ফেরত পাঠানো অবশিষ্ট মেক্সিকান মাদক ব্যবসায়ীদের দ্বারা প্রভাবিত এলাকার অধিবাসী, যারা কোন না কোনভাবে মাদক ব্যবসায়ীদের কোপানলে পড়ে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে এবং এক পর্যায়ে সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে। কিছু সংখ্যক মেক্সিকান বাস্তুচ্যূত হওয়ার কারণে বেপরোয়া হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ করেছিল।
কিন্তু বিপুল সংখ্যককে ডিপোর্ট করা সত্বেও অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ থেমে নেই। হোজে লুইস নামে এক মেক্সিকান গণমাধ্যমকে বলেছেন যে, তিনি রিয়ো গ্রান্ডে সীমান্ত অতিক্রম করে এল পাসোতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আরো অধিক সংখ্যক মেক্সিকানকে তাদের দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদান করা। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য মেক্সিকোর সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে সুযোগের অপেক্ষা করছেন এমন বহু সংখ্যক বিদেশির সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেছেন, যারা নিজ নিজ দেশে অপরাধীদের দ্বারা নিগৃহীত হয়ে দেশ ত্যাগে বাধ্য হয়েছেন।
এদিকে মেক্সিকো কর্তৃপক্ষচলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ৮,৬১২ জন বিদেশিকে মেক্সিকো থেকে ডিপোর্ট করেছে। তাদের প্রায় সকলকেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে মেক্সিকোতে ঠেলে দেয়া হয়েছে। ডিপোর্ট করা ৯২ শতাংশ (৭,৬৯৭) বিদেশি প্রতিবেশি দেশ গুয়েতেমালা ও হণ্ডুরাসের, ৪৩৭ জন ভেনেজুয়েলার। এছাড়া উক্ত তিন মাসে মেক্সিকো ৩,৫৫১ জন শরণার্থীকে স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা দিয়েছে, যাদের অধিকাংশ সেন্ট্রাল আমেরিকার দেশ ও কিউবার নাগরিক। এছাড়া ২৩০ জন ভেনেজুয়েলার নাগরিক মেক্সিকোতে অবস্থানের সিদ্ধান্ত ব্যক্ত করলে তাদেরকেও মেক্সিকোতে কাজ করার অনুমোদন প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আমেরিকান ও ইন্টারন্যাশনাল রিলিফ অর্গানাইজেশনের কৌশলের একটি হচ্ছে, অভিবাসনের মূল কারণ বের করা এবং যুক্তরাষ্ট্রমুখী বিপুল সংখ্যক বিদেশি যেহেতু মেক্সিকো হয়ে অনুপ্রবেশ করে, সেজন্য এই প্রবাহ হ্রাস করতে মেক্সিকো যাতে উদ্বাস্তুদের একটি অংশকে তাদের দেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে, সেই লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করা। সীমান্তবর্তী মেক্সিকান সিটিগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের অটোমোবাইল, মেডিকেল ও ইলেকট্রনিকস শিল্পগুলোতে শ্রমিক চাহিদা শরণার্থীদের মধ্য থেকে পূরণ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো।
কিন্তু স্বয়ং মেক্সিকানরাই যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশকারী সংখ্যাগরিষ্ঠ জনস্রোত, সেজন্য এ উদ্যোগ তেমন সাড়া পাচ্ছে না। ইউএস কাষ্টমস এন্ড বর্ডার পেট্টল এজেন্সির রিপোর্ট অনুসারে ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে মোট ৫৭৯,১৪৬ মেক্সিকান নাগরিককে আটক করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত আটককৃত মেক্সিকানের সংখ্যা ৩০৪,৫১০ জন। রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে যে, ২০২৩ সালে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমকারী অধিকাংশ মেক্সিকান ছিল একক প্রাপ্তবয়স্ক, কিন্তু ২০২৪ এ এ প্রবণতা পাল্টে গেছে এবং যারা সীমান্ত অতিক্রম করছে তাদের অধিকাংশই পরিবারশুদ্ধ আসছে।
Posted ২:০৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh