বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

১২শ’ বছরে এমন খরা দেখা যায়নি, বিভিন্ন রাজ্যে নজিরবিহীন তাপপ্রবাহ

বাংলাদেশ ডেস্ক :   |   বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই ২০২১

১২শ’ বছরে এমন খরা দেখা যায়নি, বিভিন্ন রাজ্যে নজিরবিহীন তাপপ্রবাহ

ছবি : সংগৃহীত

টানা কয়েক বছর ধরে তেমন বৃষ্টি নেই। বরফ-তুষারও পড়ছে না। তার ওপর কাঠফাটা রোদ। ফলে তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখী। খাল-বিল-হ্রদ শুকিয়ে চৌচির। বিশাল এলাকা মরুভূমি। শুষ্ক বন-জঙ্গলে ছড়িয়ে পড়ছে আগুন। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থায় মানুষ। বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই ত্রিমুখী আগ্রাসনের মুখে পড়েছে বিশ্বের এক নম্বর পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষ করে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে খরা, তাপপ্রবাহ ও দাবানল একটার পর একটা লেগেই রয়েছে। এই মুহূর্তে এই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি রাজ্যে দাবদাহের পাশাপাশি বিপজ্জনক গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে ভয়ংকর দাবানল। জ্বালিয়ে দিচ্ছে ঘরবাড়ি, খেতখামার আর বড় বড় বনাঞ্চল। কোনো মতে প্রাণ নিয়ে পালাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। আগুনের লেলিহান শিখার সামনে অসহায় হয়ে পড়ছে অগ্নিনির্বাপক বাহিনীও।

বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী যুক্তরাষ্ট্র। এই পরিবর্তনের বড় শিকারও আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ের দেশটি। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলে বিশেষ করে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বৃষ্টি ও তুষারপাত প্রচণ্ডভাবে কমে গেছে। ফলে এ অঞ্চলে তাপমাত্রা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। কম বৃষ্টিপাত আর ক্রমবর্ধমান তাপপ্রবাহের সরাসরি প্রভাব হিসাবে নজিরবিহীন খরা ও পানির ঘাটতি দেখা দিয়েছে। গবেষকদের মতে, এই খরা ইতোমধ্যে শতশত রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। কেউ কেউ বলছেন, এই অঞ্চলে গত ২০ বছরে এমন ভয়াবহ খরা আর দেখা যায়নি। কারও কারও মতে, গত এক হাজার ২০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হতে চলেছে এই খরা। মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনকেই এর প্রধান কারণ হিসাবে চিহ্নিত করছেন গবেষকরা। নিউজউইক জানিয়েছে, এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত ১১টি রাজ্যে প্রচণ্ড খরা দেখা দিয়েছে।


চলতি সপ্তাহে খরাবিষয়ক একটি বিস্তারিত মানচিত্র প্রকাশ করেছে ইউনিভার্সিটি অব নেব্রাস্কা-লিংকনের ন্যাশনাল ড্রট মিটিগেশন সেন্টার। ইউএস ড্রট মনিটরের ওই মানচিত্র মতে, ভয়াবহ খরার কবলে পড়েছে নিউ মেক্সিকো, অ্যারিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া, নেভাদা, উতাহ, ওরেগন, ওয়াশিংটন, মনটানা, নর্থ ডাকোটা, কলোরাডো ও উইমিং রাজ্য। এছাড়া ইদাহো ও সাউথ ডাকোটার কিছু এলাকাতেও খরা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। খরা পরিস্থিতি প্রতি মুহূর্তে বিস্তৃত হচ্ছে এবং আগের চেয়ে আরও বাজে রূপ নিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে গত এক বছরে খরাপীড়িত এলাকা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০২০ সালের জুলাই পর্যন্ত পুরো দেশের প্রায় ২৫ শতাংশ এলাকায় খরা পরিস্থিতি ছিল। কিন্তু বছর না ঘুরতেই তা বেড়ে ৫০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে দেশটির পশ্চিমাঞ্চল বা উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ৯৩ ভাগেরও বেশি এলাকাই এখন খরার কবলে। নদী-নালার পানি প্রবাহ কমে গেছে। বহু হ্রদ শুকিয়ে গেছে। ইউএস ড্রট মনিটরের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, তীব্র খরার কারণে এই অঞ্চলে ঘন ঘন দাবানলের সৃষ্টি হচ্ছে। পানির ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে এ অঞ্চলের কৃষি।

খরার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহ ও ভয়াবহ দাবানল। গত কয়েকদিন ধরে প্রায় প্রতিদিনই রেকর্ড গড়ছে তাপমাত্রা। এপির প্রতিবেদন মতে, গত ১০ জুলাই ক্যালিফোর্নিয়ার দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের মোজাভ মরুভূমির ডেথ ভ্যালিতে তাপমাত্রা পৌঁছায় ১২৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৫৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। দক্ষিণের পাম স্প্রিংসে এদিন রেকর্ড ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। এ নিয়ে চলতি বছর এলাকাটিতে চারবার তাপমাত্রা ৪৯ ডিগ্রিতে পৌঁছায়। একই দিন বিকালে লাসভেগাস শহরও সর্বকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করে। একদিন আগেই ফার্নেস ক্রিক মরুভূমিতে রেকর্ড ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল বলে জানায় জাতীয় আবহাওয়া বিভাগ। এটাকে গত ১০৮ বছরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বলে চিহ্নিত করে প্রতিষ্ঠানটি। ১৯১৩ সালের জুলাইয়ে ফার্নেস ক্রিকে ৫৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। এটি পৃথিবীতে রেকর্ডকৃত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলে মনে করা হয়।


অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে এ অঞ্চলে প্রায়ই আঘাত হানছে দাবদাহ। গত মাসের (জুন) শেষ দিকে কানাডার পাশাপাশি এ অঞ্চলে বয়ে যায় তীব্র দাবদাহ। টানা কয়েক দিনের এই দাবদাহে পিঁপড়ার মতো প্রাণ হারায় শত শত মানুষ। চলতি সপ্তাহে এই অঞ্চলের প্রায় তিন কোটি মানুষের জন্য ফের দাবদাহের আগাম সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। দাবদাহে তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। রেকর্ড দাবদাহের মধ্যেই এই অঞ্চলজুড়ে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। এবিসি নিউজ জানিয়েছে, অ্যারিজোনা থেকে শুরু করে ওয়াশিংটন রাজ্য পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চলে দাউদাউ করে জ্বলছে কয়েক ডজন দাবানল। গত বছরের মতো এ বছরও ফের দাবানলের কবলে পড়েছে ক্যালিফোর্নিয়া। তবে কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলছেন, ক্যালিফোর্নিয়া ইতোমধ্যে গত বছরের দাবানলকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে রয়েছে। এসব রাজ্যে অধিবাসীদের নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে বলা হয়েছে। দাবানল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে অগ্নিনির্বাপক দল। কিন্তু বাতাস এত শুষ্ক যে বিমান থেকে পানি ছিটানো হলেও তা জায়গা মতো পৌঁছাচ্ছে না। আগুন নেভানোর আগেই তা বাষ্প হয়ে উড়ে যাচ্ছে। দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গত সপ্তাহে ক্যালিফোর্নিয়ার উত্তরাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে এ বছরের সবচেয়ে বড় দাবানলটি। এতে এখন পর্যন্ত ১৪০ মাইল বা ৩৬২ কিলোমিটার আয়তনের বিস্তীর্ণ এলাকা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বিশাল অঞ্চলজুড়ে গনগনে আগুনে জ্বলছে বড় বড় গাছ।


advertisement

Posted ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই ২০২১

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.