বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ০৯ মার্চ ২০২৩
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যখন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তুত করার কাজে ব্যস্ত, ঠিক সে মুহুর্তে দেশের এক শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ আইনপ্রনেতাদের সতর্ক করেছেন যে, সরকার যদি রিপাবলিকানদের আপত্তির কারণে ঋণসীমা বৃদ্ধি করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে এর পরিণতিতে ৭০ লক্ষ আমেরিকানকে বেকার হয়ে পড়তে পারে। তিনি আরো আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন যে এর ফলে দেশ এমন এক চরম মন্দার স্মুখী ফেডারেল সরকারের পক্ষেও সময়মত তাদের দেনা পরিশোধ করা অসম্ভব হয়ে উঠবে। এ ঋণসীমা নির্ধারণ করে দেয় যে সরকার কি পরিমাণ অর্থ ঋণ নিতে পারবে।
মুডিস অ্যানালিটিকস এর প্রধান অর্থনীতিবিদ মার্ক জান্দি এ ব্যাপারে গত মঙ্গলবার একটি সিনেট প্যানেলে এই সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন। গতকাল নিউইয়র্ক টাইমসে তার বক্তব্যের ওপর এক বিশ্লেষণমূলক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় যে, ফেডারেল সরকার যথাসময়ে তাদের বিল পরিশোধের সামর্থ হারিয়ে ফেলার আগেই ঋণসীমা বৃদ্ধি না করা হলে চাকুরি হারানো মানুষের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে ৭০ লাখে উন্নীত হতে পারে এবং ঋণসীমা বৃদ্ধি না করার জটিলতা যদি দীর্ঘদিন পর্যন্ত বিরাজ করে তাহলে ২০০৮ সালের মতো একটি অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। হাউজ রিপাবলিকানরা মাসের পর মাস ধরে এ ব্যাপারে ভোট দিতে ডেমোক্রেটদের সাথে যোগদানে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে। মি: মার্ক জান্দি এবং তার দুই সহকর্মী ক্রিস্টিন ডি রিটিস ও বার্নাড ইয়ারোস সিনেট ব্যাংকিং কমিটির অর্থনৈতিক নীতি বিষয়ক সাব কমিটিতে পেশ করার জন্য একটি বিশ্লেষণ তৈরি করেছেন।
এ কমিটিতে অন্যান্যের মধ্যে ম্যাসাচুসেটসের ডেমোক্রেট সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেনও থাকবেন, মূলত তিনিই এ শুনানির আয়োজন করেছেন। হাউজ রিপাবলিকানরা ঋণসীমা নিয়ে প্রস্তাবিত বিল পাসের বিনিময়ে বড় ধরনের ব্যয় হ্রাসের দাবী করার পর উদ্ভুত আশঙ্কার প্রেক্ষিতে মার্ক জান্দি তিনি সরকারকে সতর্ক করেন। আজ বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট বাইডেন আগামী বছরের বাজেট পরিকল্পনা ঘোষণা করলে ঋণসীমা নিয়ে বিতর্ক আরো বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করেছে নিউইয়র্ক টাইমস। বাজেট সংক্রান্ত ঘোষণায় প্রেসিডেন্ট বাইডেন উচ্চ আয়সম্পন্ন ব্যক্তি ও কর্পোরেশনের আয়ের ওপর কর বৃদ্ধির মাধ্যমে ঋণের ওপর নির্ভরতা কমানোর প্রস্তাব দেবেন তা নিশ্চিত হওয়ার পর রিপাবলিকানরা এ ব্যাপারে তাদের আপত্তি জানাতে শুরু করেছে। রিপাবলিকান এ প্রস্তাবে আপোষের জন্য যে পরিমাণে ব্যয় কর্তন করার প্রস্তাব দিয়েছে তা ডেমোক্রেট সরকারের পক্ষে মানা সম্ভব হবে বলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন না। জান্দি বলেছেন, সামনে যে অর্থনৈতিক স্কংট দেখা যাচ্ছে, তা থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হচ্ছে বিষয়টি নিয়ে একটি সময়োপযোগী উপায়ে আইনপ্রনেতাদের একমত্যে পৌছে ঋণসীমা বৃদ্ধিতে সম্মতি প্রদান।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি অত্যন্ত নাজুক অবস্থার মধ্যে পড়েছে। এবং অবস্থাটি এমন যে, যদি ঋণসীমা জনিত স্কংট নাও থাকতো, তাহলেও দেশে মন্দার ঝুঁকি উচ্চ, অতএব, এ ঝুঁকি বাড়ানো জন্য কিছু করা সংকটকে তীব্র করা ছাড়া আর কোনো ভূমিকা পালন করবে না। সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সবাই বিপজ্জনক পরিস্থিতির কথা বলছেন যে জাতীয় ঋণ খেলাফের পরিণতি কি হতে পারে এবং তারা যথার্থই বলছেন। কিন্তু রিপাবলিকানদের ব্যয় কর্তন প্রস্তাব মানা হলে বিপদ আরো বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট অর্থনৈতিক নীতিমালার ক্ষেত্রে অত্যন্ত দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং আমি তাকে তার পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নে অব্যাহত কাজ চালিয়ে যাওয়ার আহবান জানাই।
Posted ৫:০৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৯ মার্চ ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh