বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৩
গত নয় মাস যাবত টেক্সাস সীমান্ত অতিক্রমকারী ৪০ হাজারের অধিক ইমিগ্রান্টকে নিউইয়র্ক সিটিতে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রেক্ষিতে সিটির পক্ষে ইমিগ্রান্টদের প্রয়োজন সংস্থান করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য ফেডারেল তহবিল বরাদ্দের জন্য চাপ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস গত রোববার সিটি থেকে দুই সহস্রাধিক মাইল দূরে টেক্সাসের এল পাসো সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেছেন, টেক্সাসের রিপাবলিকান গভর্নর একতরফাভাবে সীমান্ত অতিক্রমকারী ইমিগ্রান্টদের স্টেটের ব্যয়ে নিউইয়র্ক সিটি ও অন্যান্য ডেমোক্রেট সিটিতে প্রেরণ করছেন।
নিউইয়র্ক সিটিতে ইতোমধ্যে পাঠানো ইমিগ্রান্ট সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের প্রাথমিক আবাসন ও অন্যান্য প্রয়োজন মেটাতে দুই বিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে, যা সিটির পক্ষে এককভাবে ব্যয় করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন ফেডারেল আর্থিক সহযোগিতা। এল পাসোর এক গির্জার বাইরে সমবেত একদল ইমিগ্রান্টেরে উদ্দেশ্যে তিনি বলেন যে তিনি তাদের জন্য লাড়ে যাবেন যাতে তারা তাদের আমেরিকান স্বপ্ন পূরণের জন্য কাজ খুঁজে নিতে পারেন। স্পেনিশ ভাষায় অনুবাদ করে দেওয়া তার বক্তব্যে ইমিগ্রান্টরা হাততালি দেয় ও উচ্ছাস প্রকাশ করে। মেয়রের ইতিবাচক কথাবার্তার পাশাপাশি নবাগত ইমিগ্রান্টদের যারা এরই মধ্যে নিউইয়র্ক সিটিতে উপস্থিত হয়েছেন তাদের জন্য যে অর্থ প্রয়োজন সেজন্য বাইডেন প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টির কথাও বলেন, যাতে ফেডারেল সরকার নবাগত ইমিগ্রান্টদের সহায়তায় এগিয়ে আসে।
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র হিসেবে এরিক অ্যাডামসের সামনে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা সাম্প্রতিক ইতিহাসে সিটির আর কোনো মেয়রকে মোকাবিলা করতে হয়নি। গত নয় মাসে ইমিগ্রান্টদের আবাসন, খাদ্য, বস্ত্র সংস্থান এবং তাদের এসাইলাম আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা দিতে সিটির বাজেটে যে চাপ সৃষ্টি হয়েছে, ফেডারেল সহায়তা ছাড়া তা কাটিয়ে ওঠা অসম্ভব বলে তিনি মন্তব্য করেন। বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে সহায়তা চেয়ে ফেডারেল সরকারের প্রতি আহবান জানানোর পর ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে মেয়র অ্যাডামস সীমান্ত পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেন। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এল পাসো সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনের এক সপ্তাহ পর অ্যাডামস সীমান্ত পরিদর্শন করেছেন। বাইডেন অবৈধ সীমান্ত অতিক্রম বন্ধে কঠোর হওয়ার কথা বলেছেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছর অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমকারী ইমিগ্রান্ট গ্রেফতারের সংখ্যা রেকর্ড অতিক্রম করেছে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটির হিসাব অনুযায়ী ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১২ মাসে বর্ডার পেট্টল এজেন্টরা ১৭ লাখ মাইগ্রেন্টের সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টার মোকাবিলা করেছে, যা ১৯৬০ সালের পর এটি ছিল সর্বোচ্চ সংখ্যা।
মেয়র অ্যাডামস তার ২৪ ঘন্টার সফরকে ব্যক্তিগত সফর হিসেবে দেখাতে চাইলেও সাংবাদিকদের সঙ্গে মিলিত হয়ে নিউইয়র্ক সিটিসহ যেসব সিটিতে ইমিগ্রান্টদের পাঠানো হচ্ছে, সেসব সিটিতে ইমিগ্রান্টদের কল্যাণে ফেডারেল আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন। তিনি বলেন, ইমিগ্রান্টদের আশ্রয় দানকারী সিটিগুলোকে উপেক্ষার দৃষ্টিতে দেখা হচ্ছে, যা আমাদের কাম্য নয়।
আমরা আমাদের জাতীয় নেতাদের কাছ থেকে আশা করি যে সমস্যা লাঘবে তারা আরো ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করবেন এবং প্রকৃত উপায় বের করবেন। তিনি বলেন যে তিনি তার দাবী পূরণে চাপ সৃষ্টির উদ্দেশে চলতি সপ্তাহেই ওয়াশিংটন গিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে বলবেন এখন যে ইমিগ্রান্ট সংকট চলছে তা দেখভাল করার জন্য এক জন নেতাকে ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সিতে নিয়োগ করতে যাতে তিনি সংকট নিরসনের কাজগুলো সমন্বয় করতে পারেন।
Posted ৩:৩২ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh