মোহাম্মদ আজাদ : | বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তৃতীয় বিশ্বের একনায়কদের মতো বলেছেন, জো বাইডেনকে কিছুতেই ক্ষমতা দেব না। প্রয়োজনে নির্বাহী আদেশ জারি করব। গত শনিবার নর্থ ক্যারোলিনার ফায়েটভিল প্রচারণা চালানোর সময় তিনি এ ধরনের হুমকি দিয়েছেন। সেখানে মোটামুটি বড় ধরনের এক নির্বাচনী ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়েছে। ট্রাম্প তার বক্তব্যের শুরুতেই ডেমোক্রেট দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনকে আক্রমণ করে বলেন, বাইডেন হচ্ছেন বাকশক্তিহীন বা অকমর্ণ্য ব্যক্তি যিনি কখনো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্যতার অধিকারী নন। শুধু তাই নয়, বাইডেন যে কোন প্রার্থীও চেয়ে অধম। তিনি বলেন, আমি হয়তো একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবো যাতে আপনাদেরকে তাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে না হয়। তিনি আরো বলেন, বাইডেন সবচেয়ে নোংরা প্রার্থী। ইতিহাসে তিনি নিকৃষ্টতম প্রার্থী হিসেবে চিহ্নিত থাকবেন।”
কোন প্রমাণ বা রেফারেন্সের উল্লেখ করা ছাড়াই তিনি বলেন, জো বাইডেন ড্রাগ সেবন করেন। তাঁর নিতম্বে একটি বড় ইঞ্জেকশন দেয়া হয়েছে ÑÑ দু’ঘন্টার জন্য তিনি হয়তো পূর্বের তুলনায় ভালো। সমস্যা হচ্ছে, এর পর কী হবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, আমাদের প্রথম বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর। আমরা সেখানে একটি ড্রাগ টেস্টের কথা বলবো, আমরা তা করবে। আমি ড্রাগ টেস্ট করানো পছন্দ করি।
এক পর্যায়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হুমকি দিয়ে বলেন আমি প্রস্তুতি নিচ্ছি জো বাইডেনকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট’ হিসেবে নিষিদ্ধ করতে নির্বাহী আদেশ জারি করার। তিনি বলেন, আপনারা এই ব্যক্তিকে আপনাদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন না। ট্রাম্প পুনরায় বলেন, ‘আপনার তাকে গ্রহণ করতে পারেন না। আমি হয়তো একটি নির্বাহী আদেশ জারি করবো, আপনার তাকে আপনাদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পেতে পারেন না।
কিছুদিন আগে থেকেই বলাবলি হচ্ছে যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি নভেম্বরের নির্বাচনে হেরে যান, তাহলে তিনি ক্ষমতা ছাড়তে চাইবেন না। গত জুলাই মাসে ফক্স নিউজের ক্রিস ওয়ালেস যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন যে আপনি কি নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেবেন? প্রেসিডেন্ট বা না কোন উত্তর না দিয়ে শুধু বলেন ‘আমাকে ভেবে দেখতে হবে। এরপর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক টুইটার বার্তায় নির্বাচন পেছানোর কথা বলেন। তাঁর টুইটার বার্তার পর অবশ্য প্রেসিডেন্ট নিজ দলীয় নেতৃবৃন্দের সমালোচনার মধ্যে পড়েন। অনেকে বলেছিলেন যে প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য কি। ট্রাম্প ট্রইটার বার্তায় বলেছিলেন যে যদি নির্বাচন পিছিয়ে দেয়া হয় তাহলে ভোটাররা নিরপদে তাদের ভোট দিতে পারবে। সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স গত মাসে এ সম্পর্কে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন যে কংগ্রেস ও মিডিয়াকে প্রস্তুতি নিতে হবে, যাতে প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা না ছাড়ার মতো কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি না করতে পারে। সিনেটর স্যান্ডার্স বলেন, পরবর্তী দুই মাস আমাদের কাজ হবে জনগণকে সচেতন রাখা, ও সচেতন করে তোলা। যদি ট্রাম্প ক্ষমতা না ছাড়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন তাহলে আমাদের কী করণীয় হবে তা জনগণকে কোঝাতে হবে।
২০১৯ সালের মে মাসে হাউজ স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছিলেন, ট্রাম্প যদি স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছাড়তে না চায় তাহলে আমাদেরকে কি করতে হবে সেজন্য আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে। গত শনিবার নর্থ ক্যারোলিনায় নির্বাচণি সমাবেশে বলেছেন, আমি যদি হেরে যাই তাহলে আমি জানি না আমি কী করবো, আমি আর কখনো আপনাদের সাথে কথা বলবো না। আমি আর কখনো আপনাদের সাথে দেখা করবো না।” শেষাংশে তিনি বলেন, মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে আমি সুপ্রীম কোর্টের পরলোকগত বিচারক গিনসবার্গের স্থলে একজন নতুন বিচারক নিয়োগ দিতে যাচ্ছি। আমি মনে করি এই পদে অবশ্যই একজন নারী হবেন। কারণ সত্যিকার অর্থে আমি পুরুষদের চেয়ে নারীদের বেশি পছন্দ করি।
Posted ১:৪৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh