বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২০
ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর ইমিগ্রেশন নীতিতে পরিবর্তন আনার দৃঢ় সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে এ পরিবর্তন আনতে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হতে পারে উল্লেখ করেছেন তিনি। ইমিগ্রেশন অধিকার প্রবক্তা ও ইমিগ্রেশন এটর্নিদের মতে আগামী ২০ জানুয়ারী শপথ গ্রহণের পর প্রথম কর্মদিবসেই তিনি ট্রাম্পের নীতির কিছু কিছু দিক কলমের এক খোঁচায় বাতিল করতে পারেন। কিন্তু ট্রাম্প ইমিগ্রেশন নীতিতে বিদেশিদের যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে বসবাসের উপর যেসব প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন তা রাতারাতি দূর করা সম্ভব হবে না। আইন পরিবর্তনের যে জটিল পদ্ধতি তা অনুসরণ করে ট্রাম্পের আরোপিত কঠোরতার অবসান ঘটাতেও বেশ সময় লেগে যাবে। তদুপরি প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ রদ করতে গেলে আইনগত বাধার সম্মুখীন হতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে কংগ্রেসের একগুয়েমির কারণেও যে কোন ইতিবাচক উদ্যোগে দীর্ঘসূত্রিতার জন্ম দিতে পারে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে কংগ্রেসে অচলাবস্থার কারণে জনমতে বিভাজিত অবস্থা রাজনৈতিক জটিলতা বৃদ্ধি করতে পারে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় গ্রহণ করতে আগত সাধারণ বিদেশি থেকে শুরু করে বিত্তবান বিনিয়োগকারীরা ট্রাম্পের সৃষ্টি করা কালক্ষেপণের অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে থাকবেন।
বিশেষ করে এসাইলাম বা রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে এসে এসাইলামের জন্য আবেদন করার পরিবর্তে সীমান্তে উপনীত হওয়ার পূর্বে আবেদনকারী প্রথমে যে দেশে প্রবেশ করেছেন সেই দেশে এসাইলাম আবেদন করার যে নীতি নির্ধারণ করেছেন তা যুক্তরাষ্ট্রে এসাইলাম আবেদনে বাধা সৃষ্টি করেছে। এছাড়া বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ না করলে গ্রীন কার্ড প্রদান, ফুড স্ট্যাম্প, চিকিৎসা সেবাসহ পাবলিক চার্জের কারণে স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আপত্তিকর বিবেচচিত হতে পারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন লেখালেখি করার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য ভিসা দিতে অস্বীকৃতির মতো বিষয়গুলোকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার বলে মনে করেন ইমিগ্রেশন এটর্নিরা।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার চার বছরের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন নীতিতে চারশ’র বেশি পরিবর্তন এনেছেন। এমনকি গত ৩ নভেম্বর নির্বাচনের দিনেও তিনি ইমিগ্রেশন নীতির কিছু পরিবর্তন ঘটিয়েছেন বলে জানিয়েছে মাইগ্রেশন পলিসি ইন্সটিটিউট। এই পরিবর্তনগুলো কোন বিচ্ছিন্ন পরিবর্তন নয়, বরং নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে আনা এসব পরিবর্তন যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন নীতির নির্দেশনা থেকে আইনগত দিকসহ প্রতিটি অংশ স্পর্শ করে।
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যদিও ট্রাম্প আমলের ইমিগ্রেশন বিরোধী পদক্ষেপসমূহ বাতিল করে অবৈধ ইমিগ্রান্টদের বৈধতা দান সহজ করার লোভনীয় প্রতিশ্রুতি প্রদান করছেন, কিন্তু আমলাতান্ত্রিক বাস্তবতা অত্যন্ত কঠিণ। ইমিগ্রেশন এটর্নি লিওন ফ্রেসকো বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের ইমিগ্রেশন সংস্কারের অধিকাংশই আইন প্রণয়নজনিত বাধা ও বাস্তব অবস্থার কারণেই চটজলদি পাল্টে ফেলা অসম্ভব ব্যাপার। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কোন প্রেসিডেন্টের পক্ষে শুধুমাত্র ইমিগ্রেশন নীতি নিয়ে মাথা ঘামানো সম্ভব নয়। আরও হাজারটি ইস্যু থাকে তার সামনে এবং কোন কোন ইস্যু ইমিগ্রেশন ইস্যুর চেয়েও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এর অর্থ এমন নয় যে বাইডেন ইমিগ্রেশন ইস্যুতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা থেকে বিরত হবেন। শোনা যাচ্ছে যে, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জাস্টিস ডিপার্টমেন্টে একজন পদস্থ ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়ার কথা ভাবছেন যিনি ট্রাম্প প্রশাসনের ইমিগ্রেশন নীতিগুলোকে অকার্যকর করার দিকগুলো বিশেষভাবে দেখবেন। তাছাড়া ভারপ্রাপ্ত হোমল্যান্ড সেক্রেটারি শাদ ওলফের অধীনে কোন ইমিগ্রেশন নীতি গ্রহণ করা হয়ে থাকলে সেগুলো পাল্টে ফেলা হবে। কারণ তিনি সিনেটের অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে কাজ করেছেন।
Posted ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh