বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ০৭ জুলাই ২০২২
সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ইমিগ্রান্ট হতে আগ্রহীদের আবেদন বিবেচনার সময় পর্যন্ত মেক্সিাকোতে অবস্থান করার ব্যাপারে ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্ত বাতিল করার অধিকার বাইডেন প্রশাসনের আছে বলে রায় দিয়েছে সুপ্রীম কোর্ট। বিচারকদের মধ্যে ৫ জন ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত বাতিলের পক্ষে এবং ৪ জন সিদ্ধান্ত বহাল রাখার পক্ষে মতামত দেন। গত ৩০ জুন সুপ্রীম কোর্ট এ রায় ঘোষণা করে। ট্রাম্প প্রশাসন তার ইমিগ্রেশন নীতিতে যেসব পরিবর্তন এনেছিলেন, তার মধ্যে একটি ছিল সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করার পর যেসব বিদেশি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করবে, ইউএস সিটিজেনশিপ এন্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস কর্তৃক তাদের আবেদন প্রক্রিয়া ও বিবেচনা করার সময় পর্যন্ত তাদেরকে মেক্সিকোতে অবস্থান করতে হবে। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর মধ্যে একটি চুক্তিও সম্পাদিত হয়েছিল যে, মেক্সিকো অবস্থানকালীন অন্তবর্তী সময়ে মেক্সিকো সরকার এইস্ব বিদেশিদের ওয়ার্ক পারমিট প্রদান করবে, যাতে তারা তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য যুক্তরাষ্ট্র মেক্সিকো সরকারকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা করতেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দায়িত্ব গ্রহণ করার পর তার প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে আগমণেচ্ছুদের মেক্সিকোতে অবস্থানের নিয়ম লংঘনসহ বেশ কিছু ইমিগ্রেশন আইন লংঘন করছে বলে টেক্সাস ও মিজৌরি স্টেট সরকারের পক্ষ থেকে মামলা করা হলে মামলাটি প্রথমে ডিষ্ট্রিক্ট কোর্টে পাঠানো হয় এবং গত ৩০ জুন বৃহস্পতিবার এর ওপর সুপ্রীম কোর্টের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসে। তবে সুপ্রীম কোর্ট রায়ে একথা বলেনি যে বাইডেন প্রশাসনি কি অবিলম্বে মেক্সিকো অবস্থানের বিধির অবসান ঘটাবে অথবা এই নীতির কার্যকারিতা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে টেক্সাসের মতো স্টেটগুলোর পক্ষ থেকে চাপ সৃষ্টির সুযোগ উন্মুক্ত রাখবে।
মাইগ্রেন্ট প্রটেকশন প্রটোকল কার্যকর হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় লাভে আগ্রহী প্রায় ৭০,০০০ বিদেশিকে মেক্সিকোতে ফেরত পাঠানো হয়েছে, তাদের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন ও বিবেচনা করার সময় পর্যন্ত মেক্সিকোতে অবস্থান করার জন্য। কিন্তু এর ফলে সীমান্তের অপর পাশে স্থাপিত বড় বড় শরণার্থী শিবিরগুলোতে অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে। ট্রানজেকশন রেকর্ড অ্যাকসেস ক্লিয়ারিংহাউজ ইমিগ্রেশন এর তথ্য-উপাত্ত অনুসারে ‘মাইগ্রেন্ট প্রটেকশন প্রটোকলের আওতায় আবেদন করা বিদেশিদের মধ্যে মাত্র ২ শতাংশ আবেদনকারীর রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন অনুমোদন করা হয়েছে। বাইডেন প্রশাসন একটি নতুন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে, যাতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করা থেকে আবেদন অনুমোদন করা বা অনুমোদন না করার সিদ্ধান্ত ছয় মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়, যা এখন সময় লাগছে প্রায় ৫ বছর বা অনেক ক্ষেত্রে এর চেয়েও বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় লাভে আগ্রহী বিদেশিদের আবেদন করার পর ট্রাম্প প্রশাসন তাদেরকে মেক্সিকো অবস্থান করার নীতি ঘোষণ করেছিল প্রাথমিকভাবে ২০১৯ সালে। জো বাইডেন দায়িত্ব গ্রহণ করার পর হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি আলেজান্দ্রো মায়োরকাস ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে এ কর্মসূচি স্থগিত এবং পাঁচ মাস পর বাতিল করেন এবং তখনই টেক্সাস ও মিজৌরি বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেন যে প্রশাসন ইমিগ্রেশন আইন লংঘন করছে, যা স্টেটগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করবে এবং স্বাস্থ্যসেবা, শিশুদের শিক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য খাতে ব্যয় বৃদ্ধির কারণ ঘটাবে। টেক্সাসের অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন যে বাইডেনের ইমিগ্রেশন কৌশল সীমান্ত সংকটকে জটিল করে তুলেছে।
Posted ৮:৫১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৭ জুলাই ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh