উইম্বলডনে খেলতে পারবেন না রাশিয়া ও বেলারুশের তারকারা। এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ টেনিস অ্যাসোসিয়েশন। আগামী ২৭ জুন থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত চলবে উইম্বলডন টেনিস টুর্নামেন্ট। কিন্তু টুর্নামেন্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, রাশিয়া ও বেলারুশের পুরুষ ও নারী খেলোয়াড়রা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন না। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত বলে জানায় ডয়েচে ভেলে। কিন্তু অ্যাসোসিয়েশন অফ টেনিস প্লেয়ার্স (এটিপি) এবং উইমেনস টেনিস অ্যাসোসিয়েশন (ডাব্লিউটিএ) জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত অন্যায্য ও হতাশাজনক। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর উইম্বলডনই হবে প্রথম বড় টেনিস টুর্নামেন্ট এবং সেখানে রাশিয়া ও বেলারুশের খেলোয়াড়রা খেলতে পারবেন না। অল ইংল্যান্ড লন টেনিস ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “বিশ্বে রাশিয়ার প্রভাব কম করতে এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রাশিয়ার সামরিক হামলা অন্যায্য। কোনোভাবে তা মেনে নেয়া যায় না। এর ফলে রাশিয়া ও বেলারুশের টেনিস তারকাদের কোনো লাভ হবে না।” বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই প্রতিযোগিতার গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে আমরা ঠিক করেছি, সরকার, শিল্পমহল, অন্য সংস্থার মতো আমরাও দায়িত্ব পালন করব। বিশ্বে রাশিয়ার প্রভাব কম করব। যুক্তরাজ্যে অন্য কোনো টেনিস প্রতিযোগিতাতেও রাশিয়া ও বেলারুশের খেলোয়াড়রা অংশ নিতে পারবেন না। জুনের মধ্যে পরিস্থিতির নাটকীয় পরিবর্তন হলে আমরা সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করব।”

এটিপি ও ডাব্লিউটিএ জানিয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর রাশিয়া ও বেলারুশের খেলোয়াড়দের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেয়া যেত। দেশের পতাকা বহন করা যাবে না, এই শর্ত চাপানো যেত তাদের উপর। উইম্বলডনের সিদ্ধান্ত একতরফা বলে মনে করেন তারা। এর ফলে বিভেদ আরো বাড়বে বলে তাদের অভিমত। এটিপি একটি বিবৃতিতে বলেছে, “এই সিদ্ধান্ত ভয়ংকর নজির হয়ে থাকল। এটিপি তালিকা অনুসারে খেলোয়াড়দের খেলতে দেয়া উচিত। তারা কোন দেশের, তা দেখার দরকার নেই।” ডাব্লিউটিএ বলেছে, তারা এই সিদ্ধান্তে খুবই হতাশ। তারা মনে করে, যোগ্যতার ভিত্তিতে খেলোয়াড়দের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেয়া উচিত। ইউক্রেনের টেনিস তারকারা দাবি করেছেন, রাশিয়ার খেলোয়াড়রা আগে যুদ্ধ নিয়ে তাদের মতামত জানান। তারা চুপ করে থাকলে বুঝতে হবে, ইউক্রেনে যা হচ্ছে, তারা তা সমর্থন করেন। ১৮ বার গ্র্যান্ড স্ল্যাম সিঙ্গলস জেতা মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা এই নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছেন। সাবেক এই টেনিস তারকার জন্ম চেকোস্লোভাকিয়ায় এবং ১৯৭৫ সাল থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। মার্টিনা বলেছেন, ”টেনিস খেলোয়াড়দের তো কোনো দোষ নেই। টেনিস একটা গণতান্ত্রিক খেলা। সেখানে এই ধরনের সিদ্ধান্ত ভুল।” তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে যা হচ্ছে তা ভয়ংকর। তিনি ইউক্রেনের খেলোয়াড়দের প্রতি সহানুভূতিশীল। মার্টিনার আশা, বিশ্বের অন্যত্র সম্ভবত এই রকম নিষেধাজ্ঞা চালু করা হবে না।