নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ৯টি সর্বাধিক প্রচারিত ও সবচেয়ে পুরনো বাংলা সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন এডিটর্স কাউন্সিলের বৈঠক সাপ্তাহিক ঠিকানার সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি এম এম শাহীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হলো গত সোমবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের ইটজি চাইনিজ রেস্টুরেন্টের পার্টি হলে। এই বৈঠকে সম্পাদকবৃন্দ নিজ নিজ সংবাদপত্রসমূহের সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরে আমেরিকার এই মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যস্ফীতির মধ্যেও বিজ্ঞাপনদাতাগণ যে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে যাচ্ছেন তার জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। সেই সাথে পাঠকদের প্রতিও ধন্যবাদ জানানো হয়, এইসব সংবাদপত্রের প্রতি তাদের আস্থা ধরে রাখার কারণে।

বৈঠকে সম্পাদকমন্ডলীর আলোচনায় পুনর্বার উঠে আসে বাংলাদেশ কম্যুনিটির নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা আজ যে মূলধারায় মাথা তুলে দাঁড়িয়ে নানা অর্জনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও প্রবাসীদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে তুলেছেন, তার মূলেও অন্যতম ভূমিকা পালন করেছে এবং এখনো করে চলেছে এই সব সংবাদপত্র। কারণ সেই নব্বইএর দশক থেকে এইসব নতুন প্রজন্মের সন্তানের পিতামাতাকে সংবাদ সরবরাহের মধ্য দিয়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে সার্বিকভাবে উদ্বুদ্ধ করে আসছে বাংলা ভাষার সংবাদপত্রগুলো। কম্যুনিটিতে যখন কোনো সংগঠন নতুন ইমিগ্রান্টদের গাইড করার তেমন কোনো প্রচেষ্টা গ্রহণ করেনি, তখন সংবাদপত্রগুলোই সেই দায়িত্ব পালন করে আসছে- আলোচনায় উল্লেখ করেন সম্পাদকবৃন্দ। সম্পাদকবৃন্দ ভবিষ্যতেও এই সমাজসেবার ধারা অব্যাহত রাখবেন বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সেই সাথে তারা সফল বাংলাদেশীদের অভিনন্দন জানান।

সভায় বিজ্ঞাপনের বাজার সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলা হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশীদের অনেক বড় বড় ব্যবসা উদ্বোধন হচ্ছে নিউইয়র্কে। তাদের প্রতিষ্ঠাকল্পে সংবাদপত্রগুলো আরো কী ভূমিকা রাখতে পারে তা খতিয়ে দেখতে হবে। সেই সাথে স্বনামধন্য ব্যবসায়ী খলিল বিরিয়ানির সিইও ও শেফ খলিলুর রহমানের সাফল্যের কথা তুলে ধরে সংবাদপত্রগুলো যেভাবে তার পাশে দাঁড়িয়েছে তার জন্য সন্তোষ প্রকাশ করা হয়। তারা বলেন, যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সংবাদপত্রের সহযোগিতা পেয়েছে তারা আজ নিউইয়র্কের মত বহুজাতিক সিটিতে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসাবে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে।

আলোচনায় সম্পাদকবৃন্দ বলেন, নিউইয়র্কে আমেরিকার সর্বাধিক সংখ্যক বাংলাদেশী বাস করা সত্ত্বেও কেবলমাত্র সংবাদপত্রগুলোর অতন্দ্রপ্রহরীর ভূমিকা পালনের জন্য সেই অর্থে বড় বড় দুর্নীতি বা প্রতারণার ঘটনা নেই বললেই চলে। তারা তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে যারা নিউইয়র্ক থেকে বাংলাভাষার সংবাদপত্র প্রকাশনার মাধ্যমে এই কম্যুনিটি গড়ে তুলতে অবদান রেখে চলেছেন, তাদের সেই অবদানের ইতিহাস রচনার সময় এসে গেছে বলে মন্তব্য করেন।

সভায় সম্প্রতি একজন সংবাদকর্মী ২২ বছর কাজ করার পর সাপ্তাহিক ঠিকানা সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করায় নিন্দা জানানো হয়। এডিটর্স কাউন্সিলের সভায় উপস্থিত ছিলেন সাপ্তাহিক ঠিকানার সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি এম এম শাহীন, সাপ্তাহিক বাঙালীর সম্পাদক কৌশিক আহমেদ, সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা সম্পাদক আবু তাহের, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ খান, সাপ্তাহিক জন্মভূমি সম্পাদক রতন তালুকদার, সাপ্তাহিক আজকাল সম্পাদক জাকারিয়া মাসুদ জিকো ও সাপ্তাহিক প্রবাস সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদ।